ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে বন্ধের প্রায় এক মাস পর আবারও পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হতে যাচ্ছে কয়লাভিত্তিক রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে। ন্যাশনাল লোড ডেসপাচের পক্ষ থেকে অনুমতি পাওয়ায় আগামীকাল শুক্রবার থেকে শুরু হবে এই কার্যক্রম। গত ২৪ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে ঝুঁকি এড়াতে ন্যাশনাল লোড ডেসপাচের নির্দেশে ৯১৫ একর জমির ওপর নির্মিত এই বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করা হয়।
প্রকল্প-সংশ্লিষ্টরা
জানান, গত ১৫ আগস্ট এই মেগা প্রকল্পের প্রথম ইউনিট পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু
করে। ধাপে ধাপে বিভিন্ন লোডে ৬৬০ মেগাওয়াটের এই ইউনিটের ক্ষমতা পরীক্ষা করা হচ্ছে।
প্রথম ইউনিট
উৎপাদনে যাওয়ার ছয় মাসের মধ্যে একই মেগাওয়াট ক্ষমতার দ্বিতীয় ইউনিট বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ
উৎপাদন শুরু করবে। এরই মধ্যে দ্বিতীয় ইউনিটের সার্বিক কাজের ৮০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে।
আগামী ডিসেম্বরেই বাগেরহাটের রামপাল উপজেলায় অবস্থিত বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ মালিকানাধীন
এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাওয়ার কথা রয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানায়,
প্রথম ইউনিটের পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদন ৪০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত পৌঁছালে গত ২৪ অক্টোবর
বাংলাদেশে আঘাত হানে সিত্রাং। সে সময় সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে উৎপাদন
বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।
ন্যাশনাল লোড
ডেসপাচ অনুমতি দেওয়ায় ২৫ নভেম্বর রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে শুরু হবে লোড টেস্ট। টানা ৭২
ঘণ্টা বিভিন্ন ধাপে ইউনিটটির লোড টেস্ট ৬৬০ মেগাওয়াটে পৌঁছানোর চেষ্টা করা হবে। সার্বিক
প্রক্রিয়া সফল হলে জাতীয় কমিটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রকে বাণিজ্যিকভাবে
বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতার সনদ দেবে। এই সনদ পেলেই বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে।
বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া
ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রা.) লিমিটেডের ডিজিএম (এইচআর ও পিআর) আনোয়ারুল আজিম
জানান, ২৫ নভেম্বর আবারও বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। ধাপে ধাপে ৬৬০ মেগাওয়াটের লোড টেস্ট
সফলভাবে সম্পন্ন হলেই প্রথম ইউনিট বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাবে। দ্বিতীয় ইউনিটের বাণিজ্যিক
উৎপাদন শুরু হবে ২০২৩ সালের জুন মাসে।
২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনার ভারত সফরে দুই দেশের মধ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের সমঝোতা স্মারক
সই হয়। ওই বছরের ৩০ আগস্ট বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও ভারতের বিদ্যুৎ
বিভাগ (এনটিপিসি) ১৩২০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তি সই করে।
২০১২ সালের
৩১ অক্টোবর কোম্পানি আইন, ১৯৯৪ অনুযায়ী গঠিত হয় বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার
কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড। ভারতের এক্সিম ব্যাংকের ঋণ সহায়তায় এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা
হয় ১৬ হাজার কোটি টাকা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যালস লিমিটেড প্রতিষ্ঠানটির
নির্মাণ এবং জার্মানির ফিসনার পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে।