অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন
কমিশনের (দুদক) করা মামলাসহ মোট ৪টি মামলায় ৩২ মাস কারাভোগ করে অবশেষে জামিনে মুক্ত
হয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট।
বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪টায় বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজন সেল থেকে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের (কেরানীগঞ্জ)
জেলার মাহবুবুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কারা কর্মকর্তা জামিনের
কাগজ নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। সব নিয়ম-কানুন মেনে সেখানে
সিসিইউতে চিকিৎসাধীন সম্রাটের পাহারায় থাকা কারারক্ষীদের সরিয়ে নেওয়া হয়। বিকাল
সাড়ে ৪টার দিকে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
এর আগে আজই অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে
মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান শুনানি শেষে তার
জামিন মঞ্জুর করেন।
তার আইনজীবী মাহবুবুল আলম দুলাল গণমাধ্যমকে
জানান, সম্রাটের বিরুদ্ধে মোট চারটি মামলা করা হয়। অস্ত্র, মাদক ও অর্থপাচারের মামলায়
ইতোমধ্যে জামিন পেয়েছেন তিনি। কারাগারে ছিলেন দুদকের মামলায়।
১৯৫ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে সম্রাটের
বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং আইনে একটি মামলা করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি।সিআইডির
অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের উপপরিদর্শক রাশেদুর রহমান বাদী হয়ে রাজধানীর রমনা থানায়
এই মামলা (মামলা নম্বর ১৪) করেন। সম্রাট তার সহযোগী এনামুল হক আরমানের মাধ্যমে ১৯৫
কোটি টাকা সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় পাচার করেছেন বলে মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে। সিআইডির
সহকারী পুলিশ সুপার জিসানুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডি কর্মকর্তারা জানান, ২০১১ সালের
২৭ ডিসেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ৯ আগস্ট পর্যন্ত সম্রাট সিঙ্গাপুরে ৩৫ বার, মালয়েশিয়ায়
তিনবার, দুবাইতে দুবার এবং হংকংয়ে একবার ভ্রমণ করেছেন। এছাড়া তার সহযোগী এনামুল হক
আরমান ২০১১ সালের ১২ ডিসেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ১৮ মে পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে ২৩ বার ভ্রমণ
করেছেন। সম্রাট ও আরমান অবৈধ অর্থ দিয়ে যৌথভাবে সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান
গড়ে তুলেছেন।
৬ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের
আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জুশ্রীপুর গ্রামে আত্মগোপনে থাকা সম্রাটকে গ্রেফতার করা হয়। তার
সঙ্গে আরমানকেও গ্রেফতার করা হয়। পরে ঢাকায় এনে তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদও করে
র্যাব।
৬ অক্টোবর দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে র্যাবের
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলমের নেতৃত্ব একটি দল কাকরাইলে ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে
সম্রাটের কার্যালয়ে অভিযান শুরু করে। এদিন নিজ কার্যালয়ে পশুর চামড়া রাখার দায়ে তার
ছয় মাসের জেল দিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম।
এর পর সম্রাটকে কারাগারে পাঠানো হয়।