রাজধানীর বনানীর
একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে থাকতেন বলাকা ব্লেড (বর্তমানে সামাহ রেজার ব্লেডস) ইন্ডাস্ট্রিজ
লিমিটেডের পরিচালক সেলিম সাত্তার। সেখানেই তিনি খুলে বসেছিলেন অবৈধ মিনিবার। তার বারে
বিভিন্ন ব্যক্তি মাদক সেবন ও বিক্রি করতেন। তবে সেলিমের ছিল না মাদক সেবন বা বিক্রির
লাইসেন্স।
রোববার (৪ সেপ্টেম্বর)
বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বনানীর ১১ নম্বর সড়কের
ব্যাংক এশিয়া ভবনের (৭৭ নম্বর বাড়ি) ওই ফ্ল্যাটে অভিযান চালায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ
অধিদপ্তর (ডিএনসি)। এসময় জব্দ করা হয় বিপুল পরিমাণ ফরেন লিকার, এমডিএমএ, কোকেন, এলএসডি,
ক্যানাবিস চকলেট, কুশ ও সিনথেটিক গাঁজাসহ বিভিন্ন মূর্তি। ফ্ল্যাটের মালিক ও মাদকের
সঙ্গে জড়িত সেলিম সাত্তারকেও আটক করা হয়েছে।
অভিযানের পর সাংবাদিকদের
ঘটনাস্থলেই ব্রিফ করেন ডিএনসির উপ-পরিচালক (উত্তর) রাশেদুজ্জামান।
তিনি বলেন, সাবেক
বলাকা ব্লেড বর্তমানে সামাহ রেজার ব্লেডস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পরিচালক সেলিম সাত্তারের
বাসায় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযানে তাকে আটক করা হয়। আটক সেলিম বিলাসবহুল ওই
ফ্ল্যাটেই খুলে বসেছিলেন অবৈধ মিনিবার। তার বারে বিভিন্ন ব্যক্তি এসে মাদক সেবন ও বিক্রি
করতেন। তবে তার মাদক বিক্রি ও সেবনের ছিল না কোনো লাইসেন্স।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ
অধিদপ্তরের ডিডি বলেন, গোয়েন্দা সূত্রে জানতে পারি বনানী এলাকার ১১ রোডের ৭৭ নম্বর
হাউজের এম ব্লকের ব্যাংক এশিয়া বিল্ডিংয়ের লিফটের ৮ নম্বরের এই বাসায় অবৈধ মাদক বিক্রি
ও সেবন করা হয়। পরে অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে ফরেন লিকার, এমডিএমএ, কোকেন, এলএসডি,
ক্যানাবিস চকলেট, কুশ, ও সিন্থেটিক গাঁজা, সিসা ও লিকুইড গাঁজা জব্দ করা হয়। এছাড়া
মাদক বিক্রির ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকাও উদ্ধার করা হয়।
আটক সেলিম সাত্তারের
জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিএনসির এ কর্মকর্তা বলেন, তিনি বাংলাদেশ ও সুইডেনের দৈত্য
নাগরিক। সেলিম সাত্তার বিভিন্ন সময় বিদেশে যাতায়াতের মাধ্যমে এ মাদক সংগ্রহ করতেন।
এই বাসাটি তার নিজস্ব। উদ্ধার হওয়া মাদক তিনি নিজে ব্যবহার ও বিক্রি করে আসছিলেন।
এ কাজটি কতদিন
ধরে করছেন সেটি তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে বলেও জানান তিনি।
বাসার ভেতরে মিনি
বারে কারা আসতেন জানতে চাইলে ডিএনসির উপ-পরিচালক (উত্তর) রাশেদুজ্জামান বলেন, বাসার
ভেতরে বারে আটক সাত্তারের বন্ধুবান্ধবসহ বিভিন্ন ব্যক্তি আসতেন। এছাড়া তিনি বিভিন্ন
ব্যক্তির কাছে মাদক বিক্রি করতেন। পাশাপাশি কষ্টিপাথর, মূর্তি উদ্ধার করা হয়। তবে কষ্টিপাথরের
মতো দেখতে মূর্তিগুলো আসল নয়। এগুলো বহু পুরোনো মৃৎশিল্প। বাসাটিতে আটক সেলিমের স্ত্রী
ও গৃহকর্মীসহ চারজন থাকতেন। মাদকের সঙ্গে সেলিমের স্ত্রীর কোনো যোগসাজশ পাওয়া যায়নি
বলে তাকে আটক করা হয়নি। সেলিমের বিরুদ্ধে মাদক নিয়ন্ত্রণ মামলা প্রক্রিয়া চলমান।