দেশব্যাপী আবারো মহামারি আকারে দেখা দিয়েছে
করোনাভাইরাস। এ সময়ে শরীরে দ্রুত বাড়াতে হবে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা। শরীরে করোনাভাইরাসের
জীবাণু ঢুকলে তা ফুসফুসে আঘাত হানে। এ জন্য ফুসফুস সুস্থ রাখতে বিশেষ যত্ন নেয়া প্রয়োজন।
কারণ ফুসফুসের কার্যকারিতা কমে গেলে জীবনের ঝুঁকি বাড়ে শতগুণ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ফুসফুসকে সুস্থ রাখতে
খাবারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে বয়স বা শ্বাসকষ্টজনিত কারণে যাদের ফুসফুসে
আগে থেকে দুর্বল তাদের এ ব্যাপারে বেশি সতর্ক থাকা জরুরি।
ফুসফুস ভালো রাখতে কিছু খাবারের ওপর বিশেষ
গুরুত্ব দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ‘আমেরিকান লাং অ্যাসোসিয়েশন’-এর তথ্য অনুযায়ী,
সিওপিডি বা যাদের অ্যাজমাজাতীয় অসুখ আছে তাদের কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবারের পরিবর্তে
স্বাস্থ্যকর ফ্যাট বেশি পরিমাণে খেতে হবে। তবে বিশেষজ্ঞরা এটাও বলছেন যেহেতু কার্বোহাইড্রেট
সুষম খাবারের অঙ্গ তাই এটা একেবারে বাদ দেওয়া যাবে না। বরং কার্বোহাইড্রেটের ধরনটা
পাল্টে দিতে হবে।
সাধারণ কার্বোহাইড্রেটের পরিবর্তে কমপ্লেক্স
কার্বোহাইড্রেট খেতে হবে। কম স্টার্চ আছে এমন শাকসবজি বেশি করে খেতে হবে।
এ সময় আলু, পোটল, কুমড়া, গাজর ইত্যাদি
খাওয়ার পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে।
এছাড়া ময়দার পরিবর্তে আটার রুটি, সাদা
ভাতের বদলে ব্রাউন ভাত খেলে ফুসফুসের ক্ষতি যেমন কম হবে তেমনি ওজন ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে
থাকবে। এ ছাড়া ফুসফুস ভালো রাখতে পটাশিয়ামসমৃদ্ধ খাবার যেমন- সবুজ শাক, টমেটো, বিট,
আলু, কলা এগুলো নিয়মিত খাওয়া উচিত। পাশাপাশি প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার যেমন- মাছ, মাংস,
ডিম, দুধ, দই, ডাল, ছোলা ইত্যাদি খাবারও ফুসফুসের জন্য ভালো।
গবেষকদের মতে, নিয়ম মেনে খাওয়া-দাওয়া করার পাশাপাশি কয়েকটি বিশেষ খাবার খেলে ফুসফুসের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ে।
যেমন:
পেঁয়াজ
ও রসুন: এসব উপাদান প্রদাহের প্রবণতা
কমায়, সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তি জোগায়। ‘জার্নাল অব ক্যানসার
এপিডেমিওলজি’ ও ‘বায়োমার্কারস
অ্যান্ড প্রিভেনশন’-এ প্রকাশিত প্রবন্ধে গবেষকরা জানিয়েছেন,
যে সব ধূমপায়ী নিয়মিত কাঁচা রসুন খান তাদের ফুসফুসের বিভিন্ন অসুখে ভোগার আশঙ্কা প্রায়
৪০ শতাংশ কমে যায়।
আদা: এতে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি
উপাদান প্রদাহ কমায়। অল্প করে আদা কুচি নিয়মিত খেলে ফুসফুস ভালো থাকে।
কাঁচা
মরিচ : নিয়মিত কাঁচা মরিচ খেলে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়, সংক্রমণের আশঙ্কা কমে।
হলুদ: হলুদে থাকা কারকিউমিন
প্রদাহ কমায়।
ফল
ও শাকসবজি: আপেল, পেয়ারা, শসা, সফেদা এই সব ফল ফুসফুসের জন্য উপকারী। আপেল ও বাতাবি
লেবুতে থাকা ফ্ল্যাভেনয়েড ও ভিটামিন সি ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়ায়।
সবজি: গাজর, কুমড়া,
গোলমরিচে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বাড়ায়।
বিভিন্ন ধরনের শিম ও বীজ: বিভিন্ন ধরনের
শিম ও বীজে থাকা ম্যাগনেশিয়াম ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়াতে কার্যকর ভূমিকা আছে। তিসির
বীজে থাকা ভিটামিন ই রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
এসব ছাড়া ফুসফুস ভালো রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান ও নিয়মিত ব্যায়ামের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।