কানাডার তেল
ও গ্যাস অনুসন্ধান কোম্পানি নাইকোর কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার দায়ে নাইকো রিসোর্সেস (বাংলাদেশ)
লিমিটেডের সাবেক প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফকে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার ঢাকার
২ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক এএসএম রুহুল ইমরান আসামির অনুপস্থিতিতে এই রায় দেন।
সাজার পাশাপাশি তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড
দেওয়া হয়।
রায় ঘোষণার
সময় কাশেম শরীফ পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। বাংলাদেশ
ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বৈত নাগরিক তিনি। এই মামলার প্রধান আসামি সাবেক জ্বালানি ও খনিজ
সম্পদ প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন মারা যাওয়ায় তাকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি
দেওয়া হয়েছে। রায়ে বলা হয়েছে, পলাতক আসামি গ্রেপ্তার বা আত্মসমর্পণের দিন থেকে সাজা
কার্যকর হবে।
মামলার বিবরণী
থেকে জানা গেছে, বিএনপির নেতৃত্বে চার দলীয় জোট সরকারের জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে
এম মোশাররফ হোসেন ও কাশেম শরীফের বিরুদ্ধে ২০১২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি শাহবাগ থানায় মামলা
করে দুদক। অভিযোগে বলা হয়, মোশাররফ নাইকো ও সরকারের মধ্যে চুক্তি সম্পাদনের জন্য ২০০৫
সালে নাইকোর কাছ থেকে উপহার হিসেবে প্রায় ৯৫.৫৮ লাখ টাকা মূল্যের একটি ল্যান্ড ক্রুজার
জিপ এবং ৫ হাজার কানাডিয়ান ডলার ঘুষ নিয়েছিলেন। এর ফলে ফেনী গ্যাস ফিল্ড থেকে উত্তোলিত
গ্যাস সরকার নাইকোর কাছ থেকে অতিরিক্ত দামে কিনতে হবে।
এজাহারে বলা
হয়, মোশাররফ হোসেন ফেনী গ্যাসক্ষেত্র থেকে উত্তোলিত গ্যাসের ক্রয়চুক্তি (জিপিএসএ) সম্পাদনের
সময় নাইকোকে সুবিধা দিতে নাইকো রিসোর্সেস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট
কাশেম শরীফের কাছ থেকে এসব সুবিধা নিয়েছেন। মামলার পরে, নাইকো কর্তৃপক্ষ কানাডার একটি
আদালতে স্বীকার করেছে যে, তারা চুক্তির জন্য উপহার এবং ঘুষ দিতে বাধ্য হয়েছিল।
ঘুষ নেওয়ার
বিষয়ে অভিযোগ ওঠার পর ওই মন্ত্রণালয় থেকে মোশাররফকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ২০১২ সালের ২ আগষ্ট
দুইজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক। ২০১৩ সালের ২০ জুন তাদের বিরুদ্ধে
অভিযোগ গঠন করেন আদালত। উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে মামলার অভিযোগকারীসহ রাষ্ট্রপক্ষের
২৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত।