পুলিশি হেফাজতে
কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রক্তক্ষয়ী প্রতিবাদ-বিক্ষোভ
থেকে অন্তত ৯ জন ইউরোপীয় নাগরিককে আটক করেছে ইরানের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। স্থানীয়
গণমাধ্যম জানিয়েছে, গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ‘বিদেশি গুপ্তচর সংস্থার এজেন্ট’ সন্দেহে এই ব্যক্তিদের আটক করেছেন। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে
এসব তথ্য জানিয়েছে।
তবে এই ৯ জন
বিদেশি নাগরিককে কোথায় থেকে আটক করা হয়েছে সে ব্যাপারে ইরানের কর্মকর্তারা কিছু বলেননি।
তাঁরা শুধু বলেছেন, বিরোধী গ্রুপের দেশি-বিদেশি অনেকেই বিক্ষোভে জড়িত রয়েছে।
ইরানের গোয়েন্দা
মন্ত্রণালয় বলছে, যাঁদের আটক করা হয়েছে তাঁরা পোল্যান্ড, সুইডেন, জার্মানি, ইতালি,
ফ্রান্স এবং নেদারল্যান্ডসের নাগরিক। এর আগে জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও সুইডেনের
এজেন্টরা বিক্ষোভে জড়িত থাকতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট দূতাবাসকে সতর্ক করা হয়েছিল।
গোয়েন্দা মন্ত্রণালয়
আরও দাবি করেছে, বিক্ষোভের আগে এবং বিক্ষোভ চলাকালেও বেশ কয়েকবার ষড়যন্ত্র হয়েছে আন্দোলনকে
আরও উসকে দেওয়ার জন্য। এসব ষড়যন্ত্রের মধ্যে ছিল সাইবার হামলা এবং বিবিসি পার্সিয়ান
ও ইরান ইন্টারন্যাশনালের মতো কিছু বেসরকারি মিডিয়ায় ‘দাঙ্গা পূর্ব ভুয়া সংবাদ’ ছড়ানো।
সঠিকভাবে হিজাব
না পরার অভিযোগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর তেহরান থেকে মাহসা আমিনিকে গ্রেপ্তার করেছিল ইরানের
নৈতিকতাবিষয়ক পুলিশ। পরে পুলিশি হেফাজতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে ভর্তি করা
হয়। তিন দিন সংজ্ঞাহীন থাকার পর হাসপাতালেই তাঁর মৃত্যু হয়।
মাহসা আমিনির
মৃত্যুর পর ইরানজুড়ে দাবানলের মতো বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় দুই সপ্তাহের এই বিক্ষোভে
এ পর্যন্ত ৮৩ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর)।
ইরান সরকার
এ বিক্ষোভের পেছনে ‘বিদেশি শত্রুদের ইন্ধন’ রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে।
এদিকে বার্তা
সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার ইরানের দক্ষিণ-পূর্ব সিস্তান-বেলুচিস্তান প্রদেশের
প্রাদেশিক রাজধানী জাহেদানের একটি থানায় বিক্ষোভকারী এবং পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত
১৯ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে বিপ্লবী গার্ডের একজন কর্নেলও রয়েছেন।
তবে এ সংঘর্ষের সঙ্গে আমিনির মৃত্যু কারণে সৃষ্ট বিক্ষোভের সম্পর্ক আছে কি না, তা স্পষ্ট
নয়।