‘ইস্তেগফার’ শব্দের
অর্থ কৃত পাপকর্মের জন্য আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করা। আল্লাহর অসংখ্য মহান
গুণাবলির একটি হলো ক্ষমা। আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন, ‘আমি অবশ্যই ক্ষমাশীল তার প্রতি, যে তওবা
করে, ইমান আনে, সৎকর্ম করে ও সৎপথে অবিচলিত থাকে। ’ (সূরা তাহা, আয়াত: ৮২) মানবজাতিকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য বলা
হয়েছে, ‘তুমি তোমার প্রতিপালকের প্রশংসাসহ তাঁর
পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করো এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো, নিশ্চয়ই তিনি তওবা
কবুলকারী।
’ (সূরা নাসর,
আয়াত: ৩)
ইস্তেগফারের গুরুত্ব:
রাসূল (সা.) ইস্তেগফারের
প্রতি উৎসাহ প্রদান করে বলেন (অথচ তিনি মা’সুম-নিষ্পাপ), হে লোক সকল! তোমরা আল্লাহর
কাছে ইস্তেগফার ও তাওবা করো। কারণ আমি নিজেও দৈনিক শতবার তাওবা-ইস্তেগফার করি।
অন্য হাদীসে বর্ণিত
আছে, রাসূল (সা.) বলেন, যার আমলনামায় ইস্তেগফার অধিক সংখ্যায় পাওয়া যাবে তার জন্য রইল
সুসংবাদ।
হযরত লোকমান হাকীম
তাঁর সন্তানকে উপদেশ দান করে বলেন, হে আমার পুত্র! ‘আল্লাহুম্মাগ ফিরলী’ বলাকে অভ্যাসে পরিণত করে নাও। কারণ
এমন কিছু সময় আছে যখন আল্লাহ তা’আলা যেকোনো দু’আকারীর দু’আ কবুল করেন।
হযরত আবু মূসা
(রা.) বলেন, আমাদের সুরক্ষাদানকারী দুটি জিনিস ছিল, তন্মধ্যে হতে একটি চিরদিনের জন্য
হারিয়ে গেছে। সেটা হলো আমাদের মাঝে রাসূল (সা.)-এর উপস্থিতি। আর দ্বিতীয় জিনিস ইস্তেগফার
যা এখনো আমাদের মাঝে রয়ে গেছে। যেদিন এটিও চলে যাবে (করার মতো কেউ থাকবে না) তখন আমাদের
ধ্বংস অনিবার্য।
হযরত হাসান (রহ.)
বলেন, তোমরা ঘরে-দুয়ারে, দস্তরখানে, রাস্তা-ঘাটে, হাটে-বাজারে, সভা-সমাবেশে বেশি বেশি
ইস্তেগফার করো। কারণ ইস্তেগফার কবুল হওয়ার সময় তোমাদের জানা নেই।
ইস্তেগফারের ফজিলত:
ইস্তেগফারের ফজিলত
অনেক। কোরআন-হাদীসের আলোকে কিছু উপকারের কথা নিচে তুলে ধরা হলো।
এক. গোনাহখাতা
মাফ হয়।
কোরআনে ইরশাদ
হচ্ছে : তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তিনি অতিশয় ক্ষমাশীল।
(সূরা নূহ-১০)
দুই. অনাবৃষ্টি
দূর হবে।
ইরশাদ হচ্ছে
: তিনি (আল্লাহ) আকাশ থেকে প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন। (নূহ-১১)
তিন. সন্তান ও
সম্পদ লাভ হবে।
ইরশাদ হচ্ছে
: তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে উন্নতি
দান করবেন। (নূহ-১২)
চার. সবুজ-শ্যামল
পরিবেশ লাভ হবে।
ইরশাদ হচ্ছে
: তোমাদের জন্য সৃষ্টি করবেন উদ্যান। (নূহ-১২)
পাঁচ. নদ-নদীর
ব্যবস্থা হবে।
ইরশাদ হচ্ছে
: তোমাদের জন্য নদ-নদীর ব্যবস্থা করে দেবেন। (নূহ-১২)