ইউক্রেনের বিভিন্ন
শহরে আবার ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ঘটা
বড় ধরনের হামলাগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। ইউক্রেনীয় শহর খারকিভ, ওডেসা, লভিভ এবং ঝাইতোমিরে
বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর তথ্যানুসারে, সর্বশেষ হামলায়
রাশিয়ার বাহিনী মোট ৬৯টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। এর মধ্যে ৫৪টিকে
ইউক্রেনীয় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ঠেকিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে বলে দাবি করা হয়।
এর আগে ইউক্রেনের
প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোলিয়াক
দাবি করেন, বেসামরিক কাঠামো ও স্থাপনা লক্ষ্য করে ১২০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে
রাশিয়া। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে চলেছে এ আকাশ হামলা।
ওডেসার আঞ্চলিক
প্রধান ম্যাক্সিম মারচেঙ্কো বলেন, ‘ইউক্রেনে ব্যাপক
মাত্রার ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণ হয়েছে। ’ অন্যদিকে ইউক্রেনীয়
বিমানবাহিনী বলেছে, রাশিয়া ভিন্ন ভিন্ন দিক থেকে হামলা চালিয়েছে। তারা আকাশ ও নৌভিত্তিক
ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। রুশ বাহিনী বেশ কিছুসংখ্যক কামিকাজি (আত্মঘাতী)
ড্রোন ব্যবহার করেছে বলেও উল্লেখ করেছে ইউক্রেনীয় বিমানবাহিনী।
হামলার সময় যা
ঘটে : ইউক্রেনের প্রায় সব অঞ্চলে আকাশ সতর্কতার সংকেত বেজে ওঠার পর প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা
ওলেক্সি আরেস্তোভিচ নাগরিকদের নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার অনুরোধ জানান। দেশের আকাশ
প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কাজ করছে বলেও নিশ্চিত করেন তিনি।
কিয়েভে হামলায়
দুটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দেশটির সামরিক প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি
নিশ্চিত করা হয়েছে। কিয়েভের মেয়র ভিতালি ক্লিত্শ্চকো বলেন, শহরের আকাশে ১৬টি ক্ষেপণাস্ত্র
ধ্বংস করেছে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। এ ছাড়া মাইকোলাইভের গভর্নর ভিতালি কিম লেখেন, আকাশ
প্রতিরক্ষা পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্রকে ধ্বংস করেছে।
ওডেসার আঞ্চলিক
প্রধান ম্যাক্সিম মারচেঙ্কো বলেন, সে অঞ্চলে দুটি রুশ ক্ষেপণাস্ত্র গুলি করে নামানো
হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ক্ষেপণাস্ত্রের অংশবিশেষ একটি আবাসিক ভবনেও আঘাত হেনেছিল। কিন্তু
কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। দূর পশ্চিমের শহর লভিভের মেয়র আন্দ্রি সাদোভি একাধিক বিস্ফোরণের
খবর পাওয়ার কথা জানান।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট
ভোলোদিমির জেলেনস্কির এক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা বলেন, পশ্চিমের ইভানো-ফানকিভস্ক অঞ্চলের
এক বাসিন্দার ঘরে ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছিল, কিন্তু তা বিস্ফোরিত হয়নি।
এদিকে উপদেষ্টা
পোদোলিয়াক মস্কোর বিরুদ্ধে ইউক্রেনের ‘গুরুত্বপূর্ণ
স্থাপনা ধ্বংস এবং গণহারে বেসামরিক লোকজন হত্যার’ অভিযোগ তুলেছেন।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে
ইউক্রেনে ১২ বারের মতো রুশ হামলা হয়েছে। এর জেরে দেশজুড়ে বিদ্যুিবভ্রাটও হচ্ছে। ইউক্রেনের
বিদ্যুত্মন্ত্রী হারমান হালুশচেনকো বলেছেন, আক্রমণে তাদের বিদ্যুত্ উত্পাদন কেন্দ্র
ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ওডেসা ও কিয়েভ অঞ্চলের পরিস্থিতি কঠিন হয়ে উঠেছে।
বৃহস্পতিবার লভিভের মেয়র জানান, শহরের ৯০ শতাংশ স্থানে বিদ্যুত্
নেই। অন্যদিকে ক্লিত্শ্চকো বলেন, কিয়েভের ৪০ শতাংশ বিদ্যুত্হীন রয়েছে। ওডেসা ও দিনিপ্রোপেত্রোভস্ক
অঞ্চলেও বিদ্যুিবভ্রাট হচ্ছে বলেও খবর এসেছে।