উজানের পাহাড়ি ঢল ও অব্যাহত বৃষ্টির প্রভাবে
জামালপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর,
বকশিগঞ্জ, মাদারগঞ্জ, মেলান্দহ ও সরিষাবাড়ী উপজেলার প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার মানুষ।
কিছু কিছু এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র বিশুদ্ধ পানির সংকট।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি
পরিমাপক আব্দুল মান্নান জানান, জেলায় এখনও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায়
যমুনা নদীর পানি বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার
ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি ২৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে
বিপৎসীমার ১৪ দশমিক ২৭ সেন্টিমিটারের নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তবে পানি বৃদ্ধির হার গতকালের চেয়ে কিছুটা
কম। এটি আরো কয়েকদিন বাড়তে পারে। এতে ইসলামপুরের ৫টি ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামেই পানি
ঢুকে পড়েছে। এছাড়াও দেওয়ানগঞ্জের বেশকিছু এলাকায় পানি ঢুকেছে।
স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানিতে তলিয়ে
গেছে ফসলের মাঠ, কাঁচা পাকা সড়ক ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বন্ধ হয়ে গেছে বন্যা
দুর্গোত এলাকার নির্মাণাধীন উন্নয়ন কাজ। এছাড়াও ভাঙনের কবলে পড়ে বসতবাড়ি হারিয়ে শঙ্কিত
লোকজন।
এদিকে বন্যার পানির তোড়ে মাদারগঞ্জ উপজেলার
সারিয়াকান্দি আন্তঃজেলা গাবেরগ্রামের অংশে দুইশ মিটার ভেঙে তলিয়ে গেছে নিম্মাঞ্চলের
বিভিন্ন ফসল। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে আন্তঃজেলা যোগাযোগ ব্যবস্থাও।
উপজেলার প্রকল্প চেয়ারম্যান ও বালিজুড়ি
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মির্জা ফকরুল ইসলাম জানান, গত মে মাসে সরকারি সড়কের কাজ
শেষ করা হয়। তবে সোমবার সকালে যমুনার প্রবল স্রোতে সড়কের গাবেরগ্রাম অংশের দুইশ মিটার
ভেঙে যায়।
মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইলিশায়
রিছিল বলেন, কাবিটা প্রকল্পের আওতায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটি নির্মাণ করা হয়েছিলো।
কিন্তু যমুনার পানি ব্যাপক বৃদ্ধি পাওয়ায় সড়কের দুইশ মিটার ভেঙে গেছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন
কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন, বন্যা দুর্গতদের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি
উপজেলায় চাল, নগদ টাকা এবং দুর্যোগ মোকাবিলায় আশ্রয়কেন্দ্র ও মেডিকেল টিম প্রস্তুত
রাখা হয়েছে।