জাতীয় পার্টি আর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটে নেই বলে জানিয়েছেন দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলে তিনি।
এ সময় জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট ভাঙবে নাকি একসঙ্গে থাকবে? সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে
জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টি এখন জোটে নেই। কাজেই ভাঙার কোনো প্রশ্নও নাই। আমরা যেদিন থেকে বিরোধী দল হিসেবে কাজ করছি, সেদিন থেকেই আমরা আর আওয়ামী লীগে নেই, জোটে নেই। তবে আমরা একসঙ্গে নির্বাচন করেছি। আমাদের জন্য আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা কাজ করেছে, আমরাও তাদের জন্য কাজ করেছি। বন্ধুত্বপূর্ণভাবে আমরা কাজ করেছি তাই আমাদের ভালো একটা সম্পর্ক ছিল এবং এখনো কিছুটা আছে।
আওয়ামী লীগ যদি জাতীয় পার্টি এবং জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারে তবেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
তিনি বলেন, তবে আমরা সবসময় দেশ ও জনগণের পক্ষে। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ যদি সত্যিকার অর্থে ভালো কাজ করে, তাহলেই আমরা তাদের সঙ্গে থাকবো, যেমনটি ছিলাম। আর যদি আমরা তাদের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলি, জনগণ যদি তাদের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলে, তবে আমরা ভবিষ্যতে তাদের সঙ্গে নাও থাকতে পারি।
ইভিএমে নির্বাচন সম্পর্কে জিএম কাদের বলেন, আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। ইভিএমের মাধ্যমে সেটা সম্ভব নয়। ইভিএম হলে এটা কারচুপির নির্বাচন হবে, সরকার যাকে চাইবে তাকেই পাস করিয়ে দিতে পারবে। ইভিএম হলো শান্তিপূর্ণ কারচুপির মেশিন। আমরা মনে করি ইভিএমের মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য কোনো নির্বাচন হবে না।
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত আছে কিনা, জানতে চাইলে জিএম কাদের বলেন, নির্বাচন বর্জনের কোনো সিদ্ধান্ত এখনও নেইনি। নির্বাচন বর্জন করার জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া অত্যন্ত কঠিন সিদ্ধান্ত। বিভিন্ন রাজনৈতিক দিক পর্যালোচনা করে তবেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আর জনগণের কথা ভাবতে হলে আমাদের সামনের দিকে এগোতেই হবে।
হিন্দু মহাজোটের প্রতিনিধি সম্মেলনে জিএম কাদের বলেন, নিজের, আত্মীয় স্বজন, মানসম্মানের নিরাপত্তা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের কোনো সমস্যা নেই, এই কথাটা আংশিক সত্য। যারা বড় পর্যায়ে পৌঁছেছেন তাদের হয়তো সমস্যা কম, তবে গ্রামে যেসব হিন্দুরা বসবাস করেন, তারা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হন। এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা তাদের জমা-জমি দখল করতে চেষ্টা করেন। করোনার পর দেশে দারিদ্রতার হার প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। এমন অবস্থায় আমাদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে হলে একটি নতুন সরকার গঠন করা প্রয়োজন।
সকালে জাতীয় হিন্দু প্রতিনিধি সম্মেলন উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সভাপতি বিধান বিহারী গোস্বামী। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব অ্যাড. গোবান্দ চন্দ্র প্রামানিক, নির্বাহী সভাপতি অ্যাড. দীনবন্ধু রায় ও সাংগঠনিক সম্পাদক সুশান্ত কুমার চক্রবর্তী।
সমাবেশ থেকে হিন্দুদের জন্য জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসন এবং সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠনের জন্য দাবি জানানো হয়। এছাড়া রথযাত্রা উৎসবে সরকারি ছুটির ঘোষণার দাবি জানান বক্তারা।