রুশ বাহিনীর হাতে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির
জেলেনস্কির মৃত্যু হলেও ইউক্রেনে সরকার থেমে থাকবে না। কোনো না কোনোভাবে সচল থাকবে।
এমনটাই জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। সিবিএস নিউজকে এক
সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, যেকোনো পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের সরকারের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত
করতে পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ইউক্রেন দখল নিতে ক্রমেই এগিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। শেষ পর্যন্ত
যদি দখলে নিয়েই নেয় সেক্ষেত্রে জেলেনস্কিকে অন্যদেশে সরিয়ে নেওয়া হতে পারে। লড়াই চালিয়ে
যেতে গঠন করা হতে পারে প্রবাসী সরকার। নতুন সরকার যাতে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা
যুদ্ধের দিক-নির্দেশনা দিতে পারে সেজন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা দেবে যুক্তরাষ্ট্র ও এর
পশ্চিমা মিত্ররা। সিবিএস নিউজের ফেস দ্য নেশন অনুষ্ঠানে ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘ইউক্রেনীয়দের
এমন পরিকল্পনা রয়েছে যেগুলোর বিষয়ে আমি বিশদে কিছু বলতে চাই না। তবে এটুকু নিশ্চিত
করে বলতে চাই ইউক্রেনের সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।’ সিএনএনের এক
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার অভিযানের মুখে শেষ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে
যদি কিয়েভ ছাড়তে হয়, সেক্ষেত্রে প্রবাসে কীভাবে একটি সরকার গড়ে তোলা এবং সেই সরকারকে
কীভাবে সহযোগিতা করা যায় সেই বিষয়টিই এখন আলোচনা করছেন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় কর্মকর্তারা।
প্রতিবেদন মতে, প্রাথমিকভাবে জেলেনস্কি ও ইউক্রেনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের রাজধানী থেকে
দেশের পশ্চিমাঞ্চলে লেভিভ শহরে সরিয়ে নিতে সহায়তা করার বিষয়টি আলোচনা করা হচ্ছে। এছাড়া
জেলেনস্কিকে ও তার সহযোগীদের পোল্যান্ডে সরিয়ে নিয়ে নতুন প্রবাসী সরকার প্রতিষ্ঠার
সম্ভাবনাও আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে।
সিএনএন জানিয়েছে, এসব আলোচনা
এখনো প্রাথমিক অবস্থায় রয়েছে এবং এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। বিষয়টি
নিয়ে এই মুহূর্তে পশ্চিমা কর্মকর্তারা জেলেনস্কির সঙ্গে সরাসরি কথা বলছেন। কারণ রুশ
বাহিনী দোরগোড়া চলে এলেও এখনো রাজধানী কিয়েভ ছাড়তে চাচ্ছেন না তিনি। এর আগে দেশ ছাড়তে
যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রস্তাবও নাকচ করে দেন তিনি। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা এখন মনে
করছেন, শেষ পর্যন্ত জেলেনস্কিকে দেশ ছাড়তে হতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রবাসী সরকার গঠন
ছাড়া উপায় থাকবে না। আর যদি তিনি দেশ ছাড়তে না চান সেক্ষেত্রে কী করা হবে সেটাও আলোচনা
হচ্ছে। দুই পশ্চিমা কূটনীতিক বলেছেন, যদি কিয়েভের পতন হয় তাহলে জেলেনস্কি সরকারের এক
বা একাধিক কর্মকর্তাকে বাইরের কোনো দেশে সরিয়ে নিয়ে একটা সরকার গঠন করা যায় কি-না,
তা নিয়ে আলোচনা চলছে। পশ্চিমা কর্মকর্তাদের ভাষ্যমতে, প্রবাস থেকেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে
যুদ্ধ পরিচালনা করবে নতুন সরকার। যুক্তরাষ্ট্র অব্যাহতভাবে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে
অস্ত্র পাঠাচ্ছে। সামনের দিনগুলোতেও অস্ত্র সরবরাহ বজায় রাখবে। গেরিলা যুদ্ধের সফলতার
জন্য এসব অস্ত্র কাজে লাগবে মনে করা হচ্ছে। মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র
ও তার মিত্ররা যদি গেরিলা যুদ্ধকে সমর্থন দেয়, তাহলে রাশিয়ার দখলকৃত ইউক্রেনে নাগরিকদের
মনোবল ধরে রাখতে এবং শত্রু রুশ সেনাদের প্রতিহত করতে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি
হবেন প্রধান শক্তি।