Logo
শিরোনাম

ঝগড়া করার বিষয়ে ইসলামের নির্দেশ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৭ ডিসেম্বর ২০২০ | হালনাগাদ:শনিবার ২৫ নভেম্বর ২০২৩ | ৪৮২৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

কোরআন ও হাদিস অনুসারে, মুসলমানদের ঝগড়া করার বিষয়টি নিন্দনীয়। মুসলমানদের পারস্পরিক যুদ্ধ, ঝগড়া ও অসন্তোষ আল্লাহ তায়ালার রাগ বাড়িয়ে দেয়।

এক হাদিসে নবী করিম (সা.) সাহাবায়ে কেরামকে সম্বোধন করে বলেন, আমি কি তোমাদেরকে এমন জিনিস বলে দেব না, যা নামাজ, রোজা ও সদকা প্রদানের চেয়েও উত্তম? এরপর তিনি বলেন, মানুষের মধ্যে সন্ধি করানো। কারণ পারস্পরিক ঝগড়া দ্বীনকে শেষ করে দেয়।

বুযুর্গানে দ্বীন বলেন, পারস্পরিক ঝগড়া-বিদ্বেষ ও শত্রুতা মানুষের ভেতরকে এত নষ্ট করে যা অন্য কিছুতে করে না। মানুষ যদি নামাজ,  রোজা, তাসবীহ, ওযীফা ও নফল নামাজও আদায় করে, সঙ্গে সঙ্গে ঝগড়াও করে, এ ঝগড়া তার ভেতরকে নষ্ট করে দেবে।

তার ভেতর ফোকলা করে দেবে। কারণ ঝগড়ার ফলে মানুষের ভেতরে বিদ্বেষ সৃষ্টি হয়। বিদ্বেষের বৈশিষ্ট্য হলো-মানুষকে ন্যায়ের উপর থাকতে দেয় না। ফলে সে অন্যের উপর কখনো হাতে, কখনো মুখে জুলুম করে, কখনো অন্যের মাল ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্ট করে।

সহীহ মুসলিম শরিফের এক হাদিসে বী করিম (সা.) ইরশাদ করেন- প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার সমস্ত মানুষের আমল আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয় এবং বেহেশতের দরজা খুলে দেয়া হয়। সর্বদাই তো সমস্ত মানুষের আমল আল্লাহ তায়ালার সামনে থাকে। আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক ব্যক্তির আমল সম্পর্কে অবহিত। এমন কি অন্তরের ভেদ সম্পর্কেও অবগত- কার অন্তরে কি কল্পনা আসে।

প্রশ্ন হয় আল্লাহর দরবারে আমল পেশ করা হয় এ হাদিসের অর্থ কী? উত্তর হলো- আল্লাহ তায়ালা সবকিছু জানেন, এ কথা তো ঠিক আছে। তবে আল্লাহ তায়ালা তাঁর রাজত্বে এরূপ নিয়ম বানিয়ে রেখেছেন যে, ওই দুই দিন মানুষের আমল পেশ করা হয় যাতে পেশকৃত আমলের ভিত্তিতে তাদের বেহেশতি বা দোযখি হওয়ার ফয়সালা করা যায়।

আমল পেশ হওয়ার পর যখন কোনো মানুষের ব্যাপারে জানা যায়- এ ব্যক্তি এ সপ্তাহে ঈমানের সঙ্গে থেকেছে, আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরীক সাব্যস্ত করেনি, আল্লাহ তায়ালা তার ব্যাপারে বলেন- আমি আজকে তার ক্ষমার ঘোষণা দিচ্ছি, অর্থাৎ এ ব্যক্তি সর্বদা জাহান্নামে থাকবে না। কোনো না কোনোদিন বেহেশতে সে প্রবেশ করবে। তার জন্য বেহেশতের দরজা খুলে দেয়া হবে।

তবে সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহ তায়ালা এ ঘোষণা করবেন- যে দুই ব্যক্তির মাঝে বিদ্বেষ ও শত্রুতা থাকবে তাদেরকে আটকে দেয়া হবে। তাদের বেহেশতি হওয়ার সিদ্ধান্ত আমি এখনই করছি না। যে পর্যন্ত তাদের উভয়ের মধ্যে সন্ধি না হবে।

১. যার অন্তরে মুসলমানদের প্রতি বিদ্বেষ, হিংসা ও শত্রুতা আছে। যে রাতে আল্লাহ তায়ালার রহমতের দরজা উন্মোক্ত থাকবে, রহমতের বাতাস বইতে থাকবে, সে রাতেও ওই ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার ক্ষমা থেকে বঞ্চিত থাকবে।

২. ওই ব্যক্তি যার টাখনুর নিচে পায়াজামা ঝুলে থাকে, তাকেও ক্ষমা করা হবে না

হিংসা থেকেই বিদ্বেষের জন্ম হয়। অন্তরে প্রথমে অন্যের প্রতি হিংসা জন্মে যে, সে আগে বেড়ে যাচ্ছে আর আমি পিছনে রয়ে যাচ্ছি। তার আগে বেড়ে যাওয়ার কারণে অন্তরে জ্বলন ও দুঃখ হচ্ছে। নেমে আসছে পতন। অন্তরে এ কামনা জাগে-আমি কোনোভাবে তার ক্ষতি সাধন করি, কারো ক্ষতি সাধন করা তো ক্ষমতার বাইরে।

ফলে যে পতন সৃষ্টি হচ্ছে তা থেকে মানুষের অন্তরে বিদ্বেষ সৃষ্টি হয়। অতএব বিদ্বেষ থেকে বাঁচার প্রথম উপায় হলো, প্রথমে নিজ অন্তর থেকে হিংসা শেষ করবে। বুযুর্গানে দ্বীন হিংসা দূর করার উপায় বর্ণনা করেছেন। যদি কারো অন্তরে হিংসা সৃষ্টি হয়-সে আমার আগে বেড়ে গেল কেন? এ হিংসার চিকিৎসা হলো- সে ওই ব্যক্তির জন্য দোয়া করবে, হে আল্লাহ! তুমি তাকে আরো উন্নতি দাও। তার জন্য এ দোয়া করার সময় তো অন্তরে ছুরি চলবে।

তার ব্যাপারে অন্তর চাচ্ছে- তার উন্নতি না হোক বরং ক্ষতি হোক, তবে মুখে এ দোয়া করছে, হে আল্লাহ! তাকে উন্নতি দান কর। অন্তরে ছুরি চললেও মনের উপর জোর দিয়ে এ দোয়া করছে। হিংসা দূর করার উত্তম চিকিৎসা হলো এটা। হিংসা যখন দূর হয়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ বিদ্বেষও দূর হয়ে যাবে। অতএব প্রত্যেক ব্যক্তি তার অন্তরে অনুসন্ধান করে দেখুক, যার ব্যাপারে অন্তরে বিদ্বেষ বা হিংসা কল্পনায় আসে, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর এ দোয়া করবে। এটা হিংসা বিদ্বেষ দূর করার উত্তম চিকিৎসা।

মক্কার মুশরিকরা রাসূল (সা.) ও সাহাবায়ে কেরামের উপর জুলুম করা এবং তাকে কষ্ট দেয়ার কোনো পন্থাই বাদ রাখেনি। এমন কি তার রক্ত পিয়াসি হয়ে গেল। ঘোষণা করে দিয়েছে- যে ব্যক্তি রাসূল (সা.)-কে ধরে নিয়ে আসতে পারবে, তাকে ১০০ উট পুরুষ্কার দেয়া হবে। ওহুদ যুদ্ধের সময় তাঁর উপর তীর-বৃষ্টি বর্ষণ করেছে। চেহারা মোবারক আহত হয়েছে। দন্ত মোবারক শহীদ হয়েছে। তবে তখনও রাসূল (সা.) এর মুখে এ দোয়া ছিল-হে আল্লাহ! আমার সম্প্রদায়কে হেদায়াত দান করেন, তারা জানে না, অনবহিত, মূর্খ, আমার কথা বোঝে না, এই জন্য আমার উপর জুলুম করছে।

একটু চিন্তা করুন, তারা জালেম ছিল, তাদের জুলুমে কোনো সন্দেহ ছিল না। তা সত্তে ও নবী করিম (সা.) এর অন্তরে তাদের প্রতি হিংসা বিদ্বেষের উদয় হয়নি। এটাও নবী করিম (সা.) এর মহান সুন্নত ও আদর্শ-অকল্যাণকামীর বদলা অকল্যাণকামনা দিয়ে দেবে না। বরং তার জন্য দোয়া করবে। এটাই হিংসা ও বিদ্বেষ দূর করার উত্তম চিকিৎসা।

সুতরাং আমি নিবেদন করছি- পারস্পরিক ঝগড়ার ফলে অন্তরে হিংসা বিদ্বেষ সৃষ্টি হয়। ঝগড়া যখন প্রলম্বিত হয়, অন্তরে বিদ্বেষ অবশ্যই সৃষ্টি হবে। তখন অন্তর জগত ধ্বংস হয়ে যাবে। এর ফলে মানুষ আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হবে। এই জন্য শরীয়তের নির্দেশ হলো, পরস্পর ঝগড়া থেকে বেঁচে থাক এবং তা থেকে দূরে থাক।

ইমাম মালেক (রহ.) বলেন, এক ঝগড়া তো শারীরিক, যাতে হাত পা ব্যবহৃত হয়। আরেক ঝগড়া হয় শিক্ষিতদের, আলেমদের। তা হলো আলোচনা পর্যালোচনা ও তর্ক-বিতর্ক। এক আলেম একটি বক্তব্য পেশ করেছে, অন্যজন তার বিপরীত বক্তব্য পেশ করেছে। সে একটি প্রমাণ দিয়েছে অন্যজন জবাব লিখেছে।

প্রশ্ন-উত্তর এবং আপত্তি ও খণ্ডনের এক অনন্ত ধারা চলতে থাকে। বুযুর্গানে দ্বীন একে কখনো পছন্দ করেননি। কারণ এর দ্বারা আভ্যন্তরীণ নূর দূর হয়ে যায়। ইমাম মালেক (রহ.) এটাই বলেছেন- ইলমি ঝগড়া ইলমের আলো দূর করে দেয়।

তবে মুযাকারা বা পারস্পকি আলোচনা, যথা একজন আলেম একটি মাসআলা পেশ করেছে। অন্য আলেম এ মাসআলায় আপত্তি উত্থাপন করেছে। এখন উভয়ে বসে চিন্তা-ভাবনা ও গবেষণার মাধ্যমে এ মাসআলার সমাধান করতে লেগে যাওয়া-ই হলো মুযাকারা। এটা ভালো ও প্রশংসনীয় কাজ।

তবে একজন আলেম অন্য আলেমের বিরুদ্ধে বিবৃতি প্রকাশ করে, কোনো লিফলেট বা কোনো পুস্তিকা প্রকাশ করে, আর এ ধারা চলতে থাকে অথবা এক আলেম অন্যজনের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেয় এবং অন্যজন তার বিরুদ্ধে বক্তব্য প্রদান করে। এভাবে পরস্পরের বিরোধিতার ধারা চলতে থাকে। এটা হলো মুজাদালাহ বা ঝগড়া যাকে আমাদের বুযুর্গানে দ্বীন ও আয়িম্মায়ে দ্বীন একেবারেই পছন্দ করেননি।

এক হাদিসে রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, যে সত্যের উপর থেকেও ঝগড়া পরিহার করে, তার জন্য বেহেশতের মধ্যভাগে একটি প্রাসাদ নির্মান করা হবে। অর্থাৎ যে ব্যক্তি সত্যের উপর থেকে চিন্তা করে- যদি আমি আমার অধিকার চাই, ঝগড়া সৃষ্টি হবে, তাই আমার পাওনা ছেড়ে দিলাম যেন ঝগড়া না হয়। তার ব্যাপারে রাসূল (সা.) বলেছেন, আমি তাকে বেহেশতের মধ্যভাগে প্রবেশ করানোর জিম্মাদার।

এর দ্বারা প্রতীয়মান হয়, রাসূল (সা.) পারস্পরিক ঝগড়া অবসানের কত চিন্তা করেছেন। তবে হ্যাঁ, কোথাও যদি বিষয়টা অনেক আগে বেড়ে যায়, সহ্যের বাইরে চলে যায়, তখন মজলুম কর্তৃক জালেমকে প্রতিহত করা এবং তার থেকে প্রতিশোধ নেয়ারও অনুমতি আছে। তবে যথাসম্ভব চেষ্টা করবে যেন ঝগড়া শেষ হয়ে যায়।

নিউজ ট্যাগ: ইসলামের নির্দেশ

আরও খবর

আজ ঈদ

বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪




বায়তুল মোকাররমে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৭৪০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল ৭টায় এ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্তের মুসল্লিদের উপচেপড়া ভিড় নামে।

প্রথম জামায়াতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মো. মিজানুর রহমান। মুকাব্বির হিসেবে ছিলেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের মোয়াজ্জিন ক্বারী মো. ইসহাক।

জাতীয় মসজিদে ঈদের প্রথম জামাতে অংশ নিতে ভোর থেকেই বিভিন্ন প্রান্তের মুসল্লিরা আসতে শুরু করেন। নামাজের সময়ে মুসল্লিদের ঢল নামে। নামাজ শেষে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। নামাজের পর একে অন্যের সঙ্গে কোলাকুলি করে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন।

জাতীয় মসজিদে বেলা ১১টা পর্যন্ত ঈদের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতি মুহীউদ্দিন কাসেম। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের মোয়াজ্জিন (অব.) হাফেজ মো. আতাউর রহমান।

তৃতীয় জামাত সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন আজিমপুর কবরস্থান মেয়র হানিফ জামে মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা ইমরান বিন নূরউদ্দীন। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. আব্দুল হাদী।

চতুর্থ জামাত সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির ড. মো. আবু ছালেহ পাটোয়ারী। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. জসিম উদ্দিন।

পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল পৌনে ১১টায়। ইমামতি করবেন মিরপুর জামেয়া আরাবিয়া আশরাফিয়া ও এতিমখানার মুহতামিম মাওলানা সৈয়দ ওয়াহীদুজ্জামান। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. রুহুল আমিন।

৫টি জামাতে কোন ইমাম অনুপস্থিত থাকলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ভাষা শিক্ষক মাওলানা মোহাম্মদ নূর উদ্দীন বিকল্প ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।


আরও খবর



জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৭৩০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

রাজধানীর হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদ জামাত শুরু হয়।

ঈদের প্রধান জামাতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, রাজনৈতিক নেতা, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকসহ অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা ও বয়সের লাখো মুসল্লি।

ঈদের প্রধান জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ রুহুল আমিন। দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ শেষে সমগ্র মুসলিম উম্মাহসহ দেশ ও জাতির কল্যাণ, সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এরপর রাষ্ট্রপতি উপস্থিত সবার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

সিটি কর্পোরেশন থেকে জানানো হয়, এবার জাতীয় ঈদগাহের ২৫ হাজার ৪০০ বর্গমিটার আয়তনের মূল প্যান্ডেলে একসঙ্গে ৩৫ হাজার মুসল্লি ঈদের জামাত আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়। ছিল ঈদগাহে নারীদের জন্যও আলাদা নামাজের ব্যবস্থা।

এদিকে জাতীয় ঈদগাহ ছাড়াও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মোট পাঁচটি জামাত আদায়ের ব্যবস্থা রয়েছে।  ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, বায়তুল মোকাররমে সকাল ৭, ৮, ৯ ও ১০ ও ১০টা ৪৫ মিনিটে ঈদের জামাত হবে।


আরও খবর



আজ ঈদ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৭৬৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

রোজা শেষে আবারও এলো ঈদ। খুশির বার্তা নিয়ে ঈদের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে। বাংলাদেশের আকাশে মঙ্গলবার শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা না যাওয়ায় এবার ৩০ রোজা পূর্ণ হলো। এক মাস সিয়াম সাধনার পর আজ উৎসবের আমেজে মেতে উঠবেনে দেশবাসী।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মুসলিম উম্মাহর প্রতি নিয়ামত হিসেবে ঈদ দান করেছেন। হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদিনায় আগমন করলেন তখন মদিনাবাসীদের দুটো দিবস ছিল যে দিবসে তারা খেলাধুলা করতো। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, এ দুদিনের কী তাৎপর্য আছে? মদিনাবাসী উত্তর দিলেন, আমরা জাহেলি যুগে এ দুই দিনে খেলাধুলা করতাম। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এ দুই দিনের পরিবর্তে তোমাদের এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ দুটো দিন দিয়েছেন। তা হলো ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতর। (সুনানে আবু দাউদ: ১১৩৪)

ঈদের দিনের শুরু হয় ঈদের নামাজের মধ্য দিয়ে।ঈদের দিন সকালে পুরুষদের জন্য ঈদের নামাজ আদায় করা ওয়াজিব। বিশেষ পদ্ধতিতে অতিরিক্ত তাকবিরসহ জামাতে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা এবং তারপর ঈদের খুতবা দেওয়া ও শ্রবণ করা। ঈদের নামাজ খোলা ময়দানে আদায় করা উত্তম। 

ঈদুল ফিতরের দিন দেশের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। আবহাওয়া খারাপ হলে জাতীয় ঈদগাহে সম্ভব না হলে বায়তুল মোকাররমে জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়।

এছাড়া প্রতিবারের মতো এবারও পবিত্র ঈদুল ফিতরে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যায়ক্রমে ৫টি ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৭টায়। দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায়।  তৃতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়।  চতুর্থ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টায়। পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে।

পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন  সর্বসাধারণের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারি বাসভবন বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও তার স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। আর নিজের সরকারি বাসভবন গণভবনে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

এবার পবিত্র ঈদুল ফিতর এবং বাংলা নববর্ষে সরকারি কর্মচারীদের ছুটি শুরু হয়েছে ১০ এপ্রিল। অফিস খুলবে ১৫ এপ্রিল। তবে অনেকেই ৮ ও ৯ এপ্রিল দুদিনের ছুটি নিয়ে ঈদের ছুটি কাটাচ্ছেন টানা ১০ দিন। লম্বা ছুটির কারণে ঈদযাত্রায় ভোগান্তি হয়েছে কম। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ সময় নিয়ে নিজের শেকড়ে ফিরতে পেরেছেন।

কর্মব্যস্ত এই নগরীর সবাই যখন ঈদ উদযাপনে ঢাকা ছেড়েছেন তখন এই ঢাকা হয়ে উঠেছে এক অন্য শহর। বদলে গেছে রাজধানীর চিত্র, নেই চিরচেনা রূপ। এখন আর ঢাকার সড়কে ঘণ্টা পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় না। মুহূর্তেই চলে যাওয়া যাচ্ছে শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে।

এদিকে দেশের সবার জন্য সুখী, আনন্দময় ও নিরাপদ ঈদুল ফিতরের কামনা করে সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, একমাস সিয়াম সাধনার পর আবার আমাদের মধ্যে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর এসেছে। ঈদ মানে আনন্দ। আসুন আমরা আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশীসহ সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করি।

রাজনৈতিক নেতাদের অধিকাংশই নিজ এলাকায় ঈদ উদযাপন করবেন এবার। কেউ কেউ ঢাকায় ঈদ করবেন, আবার কেউ নামাজ শেষে যাবেন এলাকায়। সব মিলিয়ে  নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করবেন তারা, যোগ দেবেন সামাজিক অনুষ্ঠানেও।


আরও খবর