বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ সোমবার (৩০মে)।
বিএনপি নেতাকর্মীদের জন্য দিনটি অত্যন্ত শোকাবহ একটি দিন।
১৯৮১ সালের ৩০ মে রাতে চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে বিপথগামী
কিছু সেনা সদস্যের হাতে নির্মমভাবে নিহত হন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।
দলের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের
৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভাসহ ১০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি, অঙ্গসংগঠন
এবং অন্যান্য রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন। প্রাণপ্রিয় নেতাকে শ্রদ্ধা, ভালোবাসা আর অশ্রুশিক্ত
নয়নে স্মরণ করবেন বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শেরে বাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের
সমাধিস্থলে ফুলদিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন, কোরআন খানি, দোয়া ও মোনাজাত, রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে
খাদ্য সামগ্রী বিতরণ, ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভা, কালো পতাকা প্রদর্শনের কর্মসূচি হাতে
নিয়েছে বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো।
জিয়াউর রহমান ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়া জেলার নিভৃত
পল্লী বাগবাড়ির এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব ও কৈশোরে তিনি কমল
নামে পরিচিত ছিলেন। তার বাবা মনসুর রহমান সরকারি চাকরির জন্য প্রথমে কলকাতায় ও ৪৭ সালে
দেশ ভাগের পর চলে যান করাচি শহরে। সেখানেই লেখাপড়া করেন জিয়া। শিক্ষাজীবন শেষ করে ১৯৫৩
সালে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি কাকুলে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।
১৯৫৫ সালে তিনি কমিশন লাভ করেন। পাক-ভারত যুদ্ধে একটি কোম্পানির অধিনায়ক হিসেবে খেমকারান
সেক্টরে অসীম সাহসিকতা ও বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। বিশেষ কৃতিত্বের জন্য
তিনি ওই যুদ্ধে কোম্পানির সর্বোচ্চ খেতাব ও একটি বিশেষ উপহার লাভ করেন। পরে বাংলাদেশের
স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তিনি।
জিয়াউর রহমানের ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকীতে দলের মহাসচিব
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বাণীতে বলেন, মহান স্বাধীনতার ঘোষক, ৭১ এর রণাঙ্গনের
বীর মুক্তিযোদ্ধা, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, বহুদলীয় গণতন্ত্রের
পুন:প্রতিষ্ঠাতা, আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি, দুরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক, সাবেক রাষ্ট্রপতি
শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের ৪১তম শাহাদাতবার্ষিকীতে আমি তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর
শ্রদ্ধা ও বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
তিনি বলেন, জাতির সব ক্রান্তিকালে জিয়াউর রহমান দেশের
মানুষের পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি সকল সংকটে দেশ ও জনগণের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেন।
মহান স্বাধীনতার ঐতিহাসিক ঘোষণা, স্বাধীনতা যুদ্ধের ময়দানে বীরোচিত ভূমিকা এবং একটি
নতুন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণে তাঁর অনবদ্য অবদানের কথা আমি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ
করছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই মহান জাতীয়তাবাদী নেতার জনপ্রিয়তা
দেশি-বিদেশি চক্রান্তকারিরা কখনোই মেনে নিতে পারেনি। এই চক্রান্তকারীরা ১৯৮১ সালের
৩০ মে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে হত্যা করে। এই মর্মান্তিক ঘটনার মধ্য দিয়ে একজন মহান
দেশপ্রেমিককে দেশবাসী হারায়। তবে চক্রান্তকারীরা ক্ষণজন্মা রাষ্ট্রনায়ককে পৃথিবী থেকে
সরিয়ে দিতে যতই চেষ্টা করুক না কেন, তিনি বিস্মৃত হন নাই। বরং দেশের জনগণের হৃদয়ে চিরজাগরুক
হয়ে আছেন, থাকবেন। জাতীয় জীবনের চলমান সংকটে শহীদ জিয়ার প্রদর্শিত পথ ও আদর্শ বুকে
ধারণ করেই আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে এবং জাতীয় স্বার্থ, বহুমাত্রিক গণতন্ত্র এবং
জনগণের অধিকার সুরক্ষায় ইস্পাতকঠিন গণঐক্য গড়ে তুলতে হবে।