কাবুল বিমানবন্দরের
বাইরে পলায়নরত আফগান নাগরিকদের হুড়োহুড়িতে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা
মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্রের বরাতে এ খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
বিবিসির প্রতিবেদনে
বলা হয়, এক বিবৃতিতে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, পরিস্থিতি
অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়েছে। তারা যতটা সম্ভব নিরাপদে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার
চেষ্টা করছেন।
কাবুল বিমানবন্দরের
বাইরে বিশৃঙ্খলার কারণ হলো- হাজার হাজার আফগান মরিয়া হয়ে দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা
করছে। বিভিন্ন দেশের সরকার তাদের নাগরিক এবং আফগান সহযোগীদের সরিয়ে নিচ্ছে। কাবুল
বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে সাড়ে চার হাজার মার্কিন সেনা। এদের সঙ্গে ৯০০ ব্রিটিশ
সেনাও আছে।
এদিকে তালেবানরা
বিমানবন্দরের চারপাশে চেকপোস্ট পরিচালনা করছে এবং ভ্রমণের কাগজপত্র ছাড়া আফগানদের প্রবেশে
বাধা দিচ্ছে। তবে বিদেশি নাগরিক ও কর্মীদের কাজগপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর ছেড়ে দেয়া হচ্ছে
বলে দাবি করেছে তারা। গতকাল শনিবারও দেড় শতাধিক ভারতীয় নাগরিককে ছেড়ে দেয় তালেবানরা।
গত রবিবার দিনব্যাপী
উত্তেজনার মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলে নেয় তালেবান। ক্ষমতায় তালেবান আসার
পর দেশটিতে চরম মানবিক বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করতে শুরু করেন বিশেষজ্ঞরা।
নানান শঙ্কায় হাজারো নাগরিক কাবুল বিমানবন্দরে ভিড় করে। তারা আফগানিস্তান ছাড়ার জন্য
মরিয়া হয়ে ওঠে।
এর আগে চলতি মাসের
৩১ তারিখের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা ও নাগরিককে ধাপে ধাপে প্রত্যাহার
করার ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। সরিয়ে নেয়ার কথা ছিল দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা করা
আফগানদেরও। তবে তার আগেই ১৫ আগস্ট দেশটি তালেবানের দখলে চলে যায়। এ কারণে সেখান থেকে
লোকজনকে স্থানান্তরপ্রক্রিয়া জোরদার করা হয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার
কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও এর আশপাশে মোট ১২ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন এক
তালেবান কর্মকর্তা। বেনামে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি জানান, গুলিতে ও ভিড়ের চাপে
পিষ্ট হয়ে এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
বিমানবন্দরের প্রবেশপথে ভিড় করে থাকা জনতাকে তাদের কাছে ভ্রমণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকলে বাড়িতে চলে যাওয়ার আহ্বানও জানিয়েছিলেন ওই কর্মকর্তা। তালেবান বিমানবন্দরে থাকা লোকজনের কাউকে ‘আঘাত করতে চায় না’ বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।