ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জামিনে
মুক্ত কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরের করা হেফাজতে নিবারণ আইনের মামলা গ্রহণ করেছেন
আদালত। একই সঙ্গে মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ
দেওয়া হয়েছে।
আজ রোববার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের
বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ এই আদেশ দেন বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) বিষয়টি নিশ্চিত
করেছেন।
আটকের পর নির্যাতন করা হয়েছে এমন অভিযোগ
এনে গত ১০ মার্চ এই মামলার আবেদন করেছিলেন কার্টুনিস্ট কিশোর। এতে তিনি অভিযোগ করেন,
নির্যাতনে তাঁর কানের পর্দা ফেটে গেছে। আদালত সেদিন তাঁর জবাবন্দি গ্রহণ করে আদেশের
জন্য আজকের দিন রেখেছিলেন। এদিকে গতকাল কিশোরের ডান কানে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। সেখানে
একটি যন্ত্র বসানো হয়েছে। এই যন্ত্র তাঁকে ভালভাবে শুনতে সাহায্য করবে বলে চিকিৎসকরা
জানিয়েছেন।
আদালতের পিপি তাপস কুমার পাল বলেন, বিচারক
আদেশে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তিন সদস্যের একটি বোর্ড গঠন করে কার্টুনিস্ট
কিশোরের নাক, কান, গলা কতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং অন্যান্য জখমের বিষয়ে যথাযথ অনুসন্ধান
করে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, মামলাটি তদন্ত
করবে পিবিআই। সংস্থার একজন পুলিশ সুপার (এসপি) পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে অভিযোগের বিষয়ে
তদন্ত করে আগামী ১৫ এপ্রিল আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন
আইনজীবী।
গত বছরের ৫ মে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন
(র্যাব)-৩-এর ওয়ারেন্ট অফিসার আবু বকর সিদ্দিক রমনা থানায় কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির
কিশোরসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ পেজের অ্যাডমিন সায়ের জুলকারনাইন, কিশোর, আশিক
ইমরান, ফিলিপ শুমাখার, স্বপন ওয়াহিদ ও কারা হেফাজতে মৃত লেখক মুশতাক আহমেদ।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা ‘আই অ্যাম বাংলাদেশি’ নামের ফেসবুক
পেজে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি বা সুনাম ক্ষুন্ন করতে বা বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশে অপপ্রচার
বা গুজবসহ বিভিন্ন ধরনের পোস্ট দিয়েছেন। যা জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং আইনশৃঙ্খলার
অবনতি ঘটায়।
সায়ের জুলকারনাইন সম্প্রতি আল জাজিরায়
প্রচারিত তথ্যচিত্র ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’-এর ‘সামি’ বলে জানা গেছে।
গত বছরের মে মাসে কিশোর, মুশতাক ও দিদারুলকে লালমাটিয়া ও কাকরাইলের নিজ নিজ বাসা থেকে
গ্রেপ্তার করে র্যাব। এরপর তাঁদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়।
এর মধ্যে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে মারা যান মুশতাক।
দিদারুল জামিনে আছেন।
গত ৩ মার্চ হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর
রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ কার্টুনিস্ট কিশোরের ছয়
মাসের জামিন মঞ্জুর করেন। পরের দিন ৪ মার্চ কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। মুক্তি পাওয়ার
পর তিনি বাসায় না ফিরে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হন।