কাতারে বিশ্বকাপ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়ে
সমালোচনা সেই শুরু থেকেই চলছে। ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগও উঠেছে অনেকবার। সেসব এখন সুদূর
অতীত। অনেক অভিযোগ, আলোচনা-সমালোচনার পর আগামী ২১ নভেম্বর মাঠে গড়াতে যাচ্ছে কাতার
বিশ্বকাপ ২০২২।
গত শুক্রবার (১ এপ্রিল) কাতারের দোহায়
জমকালো আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিশ্বকাপের ড্র। এর কয়েক দিন পরই অ্যামনেস্টি প্রতিবেদনটি
প্রকাশ করে। যেখানে আটটি বেসরকারি সিকিউরিটি কোম্পানির ৩৪ জন কর্মীর সঙ্গে কথা বলে
তাদের মানবেতর জীবনযাপনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হয়।
অ্যামনেস্টি বলছে, মধ্য প্রাচ্যের দেশটিতে
কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বিশ্বকাপের ফুটবল মাঠ এবং বিশ্বকাপের জন্য অপরিহার্য প্রকল্পগুলোর
জন্য কর্মী সরবরাহ করেছিল। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার নাগরিকদের
তারা সরবরাহ করেছিল।
কাতারে সম্প্রতি হওয়া ২০২০ ক্লাব বিশ্বকাপ
এবং ২০২১ ফিফা আরব কাপের জন্য ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কমপক্ষে তিনটি প্রতিষ্ঠান নিরাপত্তারক্ষী
সরবরাহ করেছিল।
অ্যামনেস্টি জানিয়েছে, ফিফা কিংবা বিশ্বকাপের
আয়োজক সুপ্রিম কমিটি ফর ডেলিভারি অ্যান্ড লেগাসি’ (এসসি) ওই তিন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে
দুটির সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করেনি। ফিফা কিংবা এসসি কোনো কর্তৃপক্ষই চুক্তি নবায়ন না
করার বিষয়ে দায়িত্বশীল এবং স্বচ্ছভাবে’ বিস্তারিত কিছু বলেনি।
অ্যামনেস্টি তাদের প্রতিবেদনে লেখে, কাতারে
শ্রমিকদের ভাষা, জাতীয়তা ও বর্ণভেদেও বৈষম্য করা হয়। এদিকে কাতারের আইন অনুযায়ী, একজন
শ্রমিকের ওভারটাইমসহ সাপ্তাহিক সর্বোচ্চ কর্মঘণ্টা ৬০ ঘণ্টা এবং প্রত্যেকের পুরো পারিশ্রমিকসহ
সপ্তাহে একদিন ডে-অফ পাওয়ার কথা।
অ্যামনেস্টির দাবি, ৩৪ জন নিরাপত্তা রক্ষীর
২৯ জন তাদের জানিয়েছে, প্রতিদিন তারা নিয়মিত ১২ ঘণ্টা কাজ করেছেন। ২৮ জন বলেছেন, তাদেরকে
সাপ্তাহিক ছুটি দেওয়া হয় না। যার অর্থ হচ্ছে অনেক শ্রমিক প্রতি সপ্তাহে ৮৪ ঘণ্টা করে
কাজ করেন, যা পুরোপুরি অনৈতিক।
এদিকে ফিফা বলছে, বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে
জড়িত কোনো প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকদের অত্যাচার মেনে নেওয়া হবে না। যেসব প্রতিষ্ঠান এমন
কাজ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে কাতারে ২০১০ সালের ডিসেম্বর থেকে এই পাঁচ দেশের গড়ে ১২ জন করে শ্রমিক মারা গেছেন প্রতি সপ্তাহে। ২০১০-২০২০ সাল পর্যন্ত সময়কালে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বকাপের দেশটিতে মারা গেছে ৫ হাজার ৯২৭ জন।