খুলনায় ভোজ্যতেলের পর এবার বাজারে মাছ-মাংস ও সবজির দামও চড়া। সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। ৪০ টাকা কেজির নিচে মিলছে না সবজি। চাল-আটা, ময়দাসহ অন্য নিত্যপণ্যের দামও আকাশ ছোঁয়া। সংসারের খরচ চালাতে নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে বলে জানান খুলনার খেটে খাওয়া মানুষ। এলাকার কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে প্রায় সব ধরনের সবজির দামই ৪০ টাকা কেজির বেশি। মাংস ও মাছের দাম আগে থেকেই চড়া ছিল। ব্রয়লার মুরগির দাম আবারও বেড়েছে।
এছাড়া বাজার ভেদে টমেটো ৬০ টাকা, কাকরোল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৩০ থেকে ৪০ টাকা, বেগুন ৪০-৫০ টাকা, করলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, চিচিংগা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, শসা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, পটল বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজিদরে। কচুর মুখি ৬০ টাকা, কচুর লতি ৫০ টাকা, ধুন্দল ৩০ থেকে ৪০ টাকা একই দামে বিক্রি হচ্ছে ঝিঙা। মিষ্টি কুমড়া কেজি প্রতি ৩০ টাকা, কলার হালি ২৫ থেকে ৩০ টাকা, কাঁচা মরিচের কেজি ১০০-১৬০ টাকা। লেবুর দাম কিছুটা কম। হালি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১০-১৫ টাকায়। দাম বেড়ে পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি দরে। লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। উচ্ছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি দরে। ১০০ টাকা কোথাও কোথাও তার থেকেও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে খাসির মাংস। কেজিতে ৫ টাকা বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা কেজি দরে। পাইকারি বাজারের অজুহাত দেখিয়ে দায় এড়ানোর চেষ্টা খুচরা ব্যাবসায়ীদের। আটা ময়দার দামও অনিয়ন্ত্রিত। এক সপ্তাহের ব্যবধানে আটার দাম বেড়েছে ৮ থেকে ১০ টাকা। প্যাকেটজাত আটা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৩৪-৩৬ টাকা দরে।
তবে অপরিবর্তিত আছে লেয়ার ও কক মুরগির দাম। কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকা কেজি করে। আর লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা দরে। বাজার ভেদে রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে। কাতল ২২০ থেকে ৩৫০ টাকা, তেলাপিয়া মাছ ১৮০ থেকে ২২০ টাকা, পাঙ্গাশ ১৪০ থেকে ৩০০ টাকা, শিং মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। আকারভেদে চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে হাজার টাকায় ও পাবদা ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা দরে। ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে হাজার টাকা কেজি দরে। ৮০০ থেকে ১০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ১ হাজার ২০০ টাকা। এক কেজি আকারের ইলিশ প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায়।
নগরীর বড়বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী মো. হাফিজুল ইসলাম জানান, আমরা মোকাম থেকে পাইকারি যে দামে কিনি তার সঙ্গে খরচ যোগ করে পাইকারি বিক্রি করছি। আমরাই মাল কিনতে গেলে পাগল হয়ে যাই।
খুলনা বড় বাজার সাধারণ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শ্যামল হালদার জানান, ঢাকা এবং চট্টগ্রামের বাজারে দাম বাড়লে খুলনার বাজারেও দাম বাড়ে। বাজারের অবস্থা কাল কী হয় বলা যাচ্ছে না। বাজারে অন্যান্য পণ্যের দামও স্থিতিশীল নেই বলে জানান খুলনা নাগরিক আন্দোলনের মহাসচিব এসএম দেলোয়ার হোসেন। খুলনার বাজারে মনিটরিং ব্যবস্থা একেবারেই নাজুক। মাঝে মধ্যে যা দেখা যায়, তাও নামমাত্র। কাঁচা বাজারসহ চিনি, তেল, আটা এবং চালের বাজার অস্থির। খোঁড়া অজুহাতে সবকিছুর দাম বাড়ছে। এখনই এর লাগাম টেনে ধরতে হবে। আশা করছি, প্রশাসন বিষয়টি আমলে নিয়ে খুলনার মানুষকে রেহাই দেবে। খুলনায় এখন কার্যকরী বাজার মনিটরিং এখন সময়ের দাবি।