Logo
শিরোনাম

কুয়াকাটার আদ্যোপান্ত

প্রকাশিত:বুধবার ২০ জুলাই ২০22 | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৪ নভেম্বর ২০২৩ | ১১৭০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর সকল পর্যটকের কাছে অন্যন্য নাম সাগরকণ্যা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। দৈর্ঘ ১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সৈকত বিশিষ্ট কুয়াকাটা বাংলাদেশের অন্যতম নৈসর্গিক সমুদ্র সৈকত। এটি বাংলাদেশের একমাত্র সৈকত যেখান থেকে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দুটোই দেখা যায়। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতটি কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপলি ইউনিয়নের সর্বদক্ষিণে অবস্থিত। সমুদ্রের বুকে চর জেগে এ সৈকত হয়েছে।

ধারনা করা হয় সুলতানি বা মুঘল আমলে এ অঞ্চলে মানব বসতি শুরু হয়। কুয়াকাটা নামের পিছনেই এই ইতিহাসের ধারনা মেলে কুয়াকাটা নামের পেছনে রয়েছে আরকানদের এদেশে আগমনের সাথে জড়িত ইতিহাস। ইতিহাস ঐতিহ্যে বাকেরগঞ্জ একটি ঐতিহ্যশালী স্থান। ত্রয়োদশ শতকে চন্দ্রদ্বীপ রাজবংশের প্রতিষ্ঠার তথ্য মেলে বাউফলের কচুয়ায়। ১৫৮২ সালে মুঘল সাম্রাজ্যের সময় বাকেরগঞ্জ ও পটুয়াখালীকে বাকলা সরকার বলা হয়। তবে ইতিহাসের পাতায় জানা কুয়াকাটা রাখাইনের প্রতিষ্টিত। স্থানীয় তথ্য সূত্র মতে ১৯০৩ সালে কুয়াকাটাতে প্রথম বাঙালি ভাগ্যানুসন্ধানে আসেন।

কুয়াকাটা এখন পর্যটন নগরী হিসাবে সমস্ত বিশ্বে পরিচিত তারই পাশাপাশি হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের কাছে একটি তীর্থস্থান। নভেম্বরের রাস মেলায় হিন্দুসম্প্রদায়ের কৃষ্ণভক্তরা হাজির হয়। তেমনি মাঘী পূর্ণিমায় আয়োজন করা পবিত্র স্নান। এসময় দেশি বিদেশি লক্ষ লক্ষ পূণ্যার্থীরা আসেন। কুয়াকাটায় বসবাসকারী রাখাইনরা বহু দিন ধরে উপজাতি হিসাবে পরিচিত হলেও রাখাইনরা কুয়াকাটার আদিবাসী। রাখাইনদের আদি নিবাস ছিল মায়ানমারের আরাকান প্রদেশে। ১৭৮২ সাল থেকেই রাখাইনদের পরে বিভিন্ন অত্যাচার করা হয়। ১৭৮৪ থেকে ১৮১৪ সাল পর্যন্ত মায়ানমারের শরনার্থীর সংখ্যা দাড়ায় প্রায় এক লক্ষ।

রাখাইনরা মায়ানমার ত্যাগ করে বাংলাদেশে বসবাস করলেও তারা তাদের ঐতিহ্যেকে ধরে রাখে। বিশেষ করে রাখাইনদের খাদ্য, পোশাক ও ভাষায় তারা বাঙ্গালীদের থেকে স্বতন্ত্রতা বজায়ে রাখে। বিয়ে অনুষ্ঠানে রাখাইনরা সংস্কার মেনে চলে। যেমন বর্ষাকালে রাখাইনদের মধ্যে কোন ধরনের বিয়ে হয় না। নৈসর্গিক সৌন্দর্যের এক মোহময় লীলাভূমির নাম কুয়াকাটা। সরকার এই পর্যটন নগরীকে আধুনিক সুযোগ সুবিধা দেয়ার লক্ষ্যে কুয়াকাটাকে পৌরসভা হিসাবে ঘোষণা করা হয়। কুয়াকাটার খ্যাতনামা কুয়া যা ছিল এক সময়ের মিষ্টি পানির একমাত্র ব্যবস্থা তা এখন ঐতিহ্যের অংশ।

কুয়াকাটার দর্শনীয় স্থানসমূহ: কুয়াকাটার মূল আকর্ষণ সমুদ্র সৈকত। সমুদ্র সৈকতে দাড়ালে দক্ষিণে যতদূর চোখ যায় ততদূর নীল আকাশ। বেলাভূমিতে প্রতিমুহুর্তে আছড়ে পড়ছে ঢেউ। সমুদ্র সৈকতে হাজার হাজার পর্যটকদের জন্য বেসরকারিভাবে বসার জায়গা, ঘোড়া, গাড়ি, খাবার সহ বিভিন্ন ব্যবস্থা রয়েছে। পাশাপাশি কুয়াকাটা পর্যটন পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। সমুদ্রসৈকতের ভাঙ্গন ঠেকানোর জন্য বনবিভাগের মনোলোভা ঝাউবন রয়েছে। যেখানে বাতাসের শব্দ শো শো করতে থাকে। আমাবশ্যার অন্ধকারে রাতে ফসফরাসের মিশ্রনে সাগরের ঢেউগুলো আলোর বিচ্ছুরণ ছড়ায়।

কুয়াকাটার কুয়া: কুয়াকাটা নামটি কুয়া থেকে এসেছে। সমুদ্রের লবণ পানির এলাকায় মিষ্টি পানির একমাত্র আধার এই কুয়া। ভূগর্ভস্থ পানি বা বর্ষার পানি থেকে এই কুয়ায় পানি থাকে। কুয়াকাটার বৌদ্ধ বিহারে প্রবেশের মুখে কুয়াটি। সরকারের আর্থিক সহায়তায় কুয়াটিকে সংরক্ষণ করা হচ্ছে।

শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহার: কুয়ার পাশের রয়েছে বৌদ্ধমন্দির। যা শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহার নামে পরিচিত। এখানে নয়টি ধাতুর সমন্বয়ে তৈরি বৌদ্ধ মূতি রয়েছে। শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহার চুনদ্রী দেবী, শাক্য রাজা ও ছিওয়ালি আর্হাং বৌদ্ধ বিহারে প্রবেশের মুখে দাড়ান দুইটি মূর্তি রয়েছে। এগুলো চুনদ্রী দেবীর। রাখাইনদের ধর্মীয় বিশ্বাসে চুনদ্রী দেবী মন্দিরের রক্ষাকর্তা। উপরের দিকে সিড়ির শেষ প্রান্তে রয়েছে শাক্য রাজার মূর্তি। বিহারটি সাধারণ জনসাধারণের জন্য সকাল ৮ টা থেকে ১১ টা ও ২ টা থেকে ৬ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। দর্শনার্থীদের জন্য জনপ্রতি ১০ টাকা ফি ধার্য রয়েছে।

নৌকা জাদুঘর: শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধবিহার ও রাখাইন মার্কেটের সংলগ্ন ভেড়িবাধের ঢালে কুয়াকাটার নৌকা জাদুঘর অবস্থিত। এখানে একটি পাল তোলা জাহাজের ধ্বংসাবশেষ রাখা আছে। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর নৌকাটিকে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। নৌকাটি ৭২ ফুট দৈর্ঘ্য, ২২ ফুট প্রস্থ, ১১ ফুট উচ্চতা এবং ৯০ টন ওজনের। প্রাচীনকালে সমুদ্রপথে বিভিন্ন দেশের সাথে ব্যবসা বানিজ্য করার জন্য এসব পাল তোলা জাহাজ ব্যবহার করা হতো।

কেরানি পাড়া: কুয়াকাটার মূল কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত রাখাইন পল্লীর নাম কেরানি পাড়া। বৃটিশ আমলে নলাউ নামক একজন রাখাইন ব্যাংকের কেরানি পদে চাকরি করতেন। তার পদবীর থেকে এই পল্লীর নাম হয় কেরানি পাড়া।

কুয়াকাটা জাতীয় উদ্যান (ইকোপার্ক): কুয়াকাটা জিরোপার্ক থেকে দেড় কিলোমিটার পূর্ব দিকে ৭০০ একর জায়গা জুড়ে কুয়াকাটা ইকোপার্ক অবস্থিত। এখানে পরিকল্পিত ভাবে বিভিন্ন ধরনের বনজ ফলজ গাছ লাগানো হয়েছে।

গঙ্গামতির চর: কুয়াকাটার মূল পর্যটন স্পট থেকে ৬ কিলোমিটার পূর্ব দিকে গঙ্গামতি অবস্থিত। গঙ্গামতি খালের চরে গড়ে উঠায় চর গঙ্গামতি বা গঙ্গামতির চর বলা হয়। মূল স্পট থেকে এখান থেকে সূর্যোদয় ভালো দেখা যায়।

আব্দুল আলী গাড়ুলির স্মৃতি বিজড়িত স্থান: বিখ্যাত সাপুড়ে আব্দুল আলি গাড়ুলি যার সাপ ধরা নিয়ে বিভিন্ন লোক কাহিনী প্রচলিত আছে। মিশ্রিপাড়া থেকে ৭ কি.মি. উত্তরে বৌলতলী পাড়া এ স্থান।

মিশ্রিপাড়া সীমা বৌদ্ধ বিহার: কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট থেকে সাত কিলোমিটার পূর্ব দিকে মিশ্রিপাড়ায় রাখাইন পল্লী অবস্থিত। জানা যায় প্রভাবশালী মিশ্রি তালুকদারের নামে এ পল্লীটির নামকরণ করা হয়। এখানকার বৌদ্ধমন্দির যা সীমা বৌদ্ধ বিহার নামে পরিচিত। এখানে দুশো বছরের পুরাতন বৌদ্ধমূর্তি ও ভারত উপমহাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বৌদ্ধ মূর্তি রয়েছে।

গোড়া আমখোলাপাড়া রাখাইন পল্লী: কুয়াকাটার সবচেয়ে বড় রাখাইন সম্প্রদায়ের বসতি গোড়া আমখোলাপাড়া রাখাইন পল্লীতে। আলীপুর বন্দর থেকে তিন কিলোমিটার পূর্বে এ রাখাইন পল্লী। এখানে টিন ও কাঠ ব্যবহার করে মাচার উপর মন্দিরে ছোট ছোট অনেকগুলো বৌদ্ধ মূতি রয়েছে।

আলীপুর ও মহিপুর মৎস্য বন্দর: বাংলাদেশের অন্যতম মৎস্য বন্দর এটি। আলীপুর বন্দরের পাশে কালাচান পাড়া নামে রাখাইন পল্লী রয়েছে। এ রাখাইন পল্লীটি কুয়াকাটার দ্বিতীয় বৃহত্তম।

নয়াপাড়া বৌদ্ধবিহার: আলীপুর থেকে কুয়াকাটা যাবার দেড় কিলোমিটার দক্ষিণে রাখাইনদের ছোট একটি পল্লী রয়েছে যা নয়াপাড়া নামে পরিচিত। চারটি পরিবারের বাস এ পল্লীতে কিন্তু এখানে সুন্দর একটি বৌদ্ধ মন্দির রয়েছে। মন্দির দেয়ালে বৌদ্ধদেবের জীবচিত্র আকা আছে।

ইলিশ পার্ক এন্ড রিসোর্ট: কুয়াকাটা পৌরসভায় ইলিশ পার্ক অবস্থিত। জিরো পয়েন্ট থেকে পাঁচ মিনিট সময় লাগে। ৪০ শতাংশ জমির উপর এ পার্কটি অবস্থিত। পার্কের ভিতরে বিভিন্ন প্রাণির ভাস্কর্য রয়েছে।

শুটকি পল্লী: কুয়াকাটায় শুটকির চাহিদা না থাকলেও দেশের বিভিন্ন স্থানে শুটকির চাহিদা থাকায় কুয়াকাটায় শুটকি শিল্পের যাত্রা শুরু হয়। সমুদ্র সৈকতের পশ্চিম পাশে লেম্বুর চরে অস্থায়ীভাবে বাশ দিয়ে শুটকির মাচা তৈরি করা হয়।

স্বপ্নরাজ্য পার্ক ও রিসোর্ট: কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে তিন কিলোমিটার পশ্চিমে ভেড়ি বাধের সাথেই স্বপ্নরাজ্য পার্ক ও রিসোর্ট অবস্থিত। এখানে ছোট একটি পার্ক রয়েছে। পার্কে কয়েকটি জীবন্ত প্রাণি রয়েছে।

লেম্বুর বন: পর্যটকরা লেবু বন বা বাগান মনে করতে পারেন আসলে লেম্বু ছিল রাখাইন সম্প্রদায়ের একটি মেয়ে। তার বাড়ি ও বাগান এখানে ছিল। সমুদ্রে সে বাড়ি হারিয়ে গেছে। এখান থেকে পশ্চিমে ফাতরার বন দেখা যায়। লেম্বু বাগান থেকে সূর্যাস্ত সবথেকে ভাল দেখা যায়। এখানে সামুদ্রিক শামুক ঝিনুকের প্রচুর খোলস পাওয়া যায়। এখানে বেশ কিছু দোকান গড়ে উঠেছে। কাকড়া বা মাছ ফ্রাই করে খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।

ফাতরার বন: আন্ধারমানিক নদীর মোহনা পার হয়ে বঙ্গোপসাগরের তীর ঘেষে এ ম্যানগ্রোভ বন গড়ে উঠেছে। এ বনের মধ্যে হরিণ, বানর, শুকর, বন মোরগ, শিয়াল, বাঘডাস, মেছোবাঘ, ভোদর, খরগোশ, অজগর দেখতে পাওয়া যায়। বনের দক্ষিণ পশ্চিম পাশে সরকারের অর্থায়নে ইকোপার্ক তৈরি হয়েছে।

লাল কাঁকড়ার চর: লালকুয়াকাটার বেশ কিছু স্থানেই লাল কাঁকড়া দেখতে পাওয়া যায়।

পানি জাদুঘর: মানুষকে পানি সম্পদ ব্যবহারে সচেতন করার জন্য এ জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এশিয়ার প্রথম পানি জাদুঘর। কলাপাড়া উপজেলা থেকে ৬ কিলোমিটার দক্ষিণে পাখিমারা বাজারে পাশে অবস্থিত। একটি বেসরকারি সংস্থার উদ্যেগে এটি প্রতিষ্ঠিত। শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল নয়টা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত খোলা থাকে।

সোনার চর: পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলায় সোনার চর অবস্থিত। বঙ্গোপসাগরের বুকের এ চরটি দক্ষিণ সীমার শেষ ভূখন্ড। এখানেও বিভিন্ন ধরনের পশু পাখি রয়েছে।

কুয়াকাটা ভ্রমণ: কুয়াকাটায় ভ্রমণ করতে গেলে পর্যটকদের হাতে সর্বনিম্ন দুই দিন রাখতে হবে। কুয়াকাটায় বিভিন্ন ধরনের প্যাকেজ ট্যুরের ব্যবস্থা রয়েছে। জল ও স্থল পথে এ ভ্রমণ গুলোর ব্যবস্থা রয়েছে। কুয়াকাটা জিরো পয়েন্টের ভেড়ি বাঁধ, কেরানি পাড়া সহ বিভিন্ন জায়গায় খাবার হোটেল রয়েছে। কম দামী ও বেশি দামী বিভিন্ন মানের খাবার পাওয়া যায়। কুয়াকাটার রাখাইনদের লোকসঙ্গীত, অভিনয়, নৃত্য আয়োজনের ব্যবস্থা রয়েছে। পর্যটকদের চাহিদা অনুসারে তারা আয়োজন করে থাকে। কুয়াকাটায় অনেকগুলি মার্কেট রয়েছে তার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পোশাক, শামুক, ঝিনুকের কাজ সহ বিভিন্ন দ্রব্যাদি পাওয়া যায়। পর্যটক সহ স্থানীয়দের স্বাস্থ্য সেবা দেয়ার জন্য তুলাতলীতে ২০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রয়েছে। কুয়াকাটায় পর্যটকদের আবাসনের ব্যবস্থা করার জন্য সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন ধরনের হোটেল ও মোটেল রয়েছে। এসব হোটেলে বিভিন্ন ধরনের বেড এসি, নন এসি থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। কুয়াকাটায় অন্তত: ৬০ টি হোটেল মোটেলে ১০,০০০ লোকের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় বিভিন্ন ভাবে যাতায়াত ব্যবস্থা রয়েছে। ঢাকা কুয়াকাটা এসি, নন এসি বাস রয়েছে। এছাড়া ঢাকা পটুয়াখালী লঞ্চ সার্ভিস রয়েছে। আকাশপথে বরিশাল গিয়ে কুয়াকাটায় যাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।


আরও খবর

অরণ্যযাপনের আগে যে বিষয়গুলি মাথায় রাখবেন

বৃহস্পতিবার ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩




জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৮৫৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

রাজধানীর হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদ জামাত শুরু হয়।

ঈদের প্রধান জামাতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, রাজনৈতিক নেতা, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকসহ অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা ও বয়সের লাখো মুসল্লি।

ঈদের প্রধান জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ রুহুল আমিন। দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ শেষে সমগ্র মুসলিম উম্মাহসহ দেশ ও জাতির কল্যাণ, সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এরপর রাষ্ট্রপতি উপস্থিত সবার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

সিটি কর্পোরেশন থেকে জানানো হয়, এবার জাতীয় ঈদগাহের ২৫ হাজার ৪০০ বর্গমিটার আয়তনের মূল প্যান্ডেলে একসঙ্গে ৩৫ হাজার মুসল্লি ঈদের জামাত আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়। ছিল ঈদগাহে নারীদের জন্যও আলাদা নামাজের ব্যবস্থা।

এদিকে জাতীয় ঈদগাহ ছাড়াও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মোট পাঁচটি জামাত আদায়ের ব্যবস্থা রয়েছে।  ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, বায়তুল মোকাররমে সকাল ৭, ৮, ৯ ও ১০ ও ১০টা ৪৫ মিনিটে ঈদের জামাত হবে।


আরও খবর



আজ ঈদ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৯২৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

রোজা শেষে আবারও এলো ঈদ। খুশির বার্তা নিয়ে ঈদের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে। বাংলাদেশের আকাশে মঙ্গলবার শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা না যাওয়ায় এবার ৩০ রোজা পূর্ণ হলো। এক মাস সিয়াম সাধনার পর আজ উৎসবের আমেজে মেতে উঠবেনে দেশবাসী।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মুসলিম উম্মাহর প্রতি নিয়ামত হিসেবে ঈদ দান করেছেন। হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদিনায় আগমন করলেন তখন মদিনাবাসীদের দুটো দিবস ছিল যে দিবসে তারা খেলাধুলা করতো। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, এ দুদিনের কী তাৎপর্য আছে? মদিনাবাসী উত্তর দিলেন, আমরা জাহেলি যুগে এ দুই দিনে খেলাধুলা করতাম। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এ দুই দিনের পরিবর্তে তোমাদের এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ দুটো দিন দিয়েছেন। তা হলো ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতর। (সুনানে আবু দাউদ: ১১৩৪)

ঈদের দিনের শুরু হয় ঈদের নামাজের মধ্য দিয়ে।ঈদের দিন সকালে পুরুষদের জন্য ঈদের নামাজ আদায় করা ওয়াজিব। বিশেষ পদ্ধতিতে অতিরিক্ত তাকবিরসহ জামাতে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা এবং তারপর ঈদের খুতবা দেওয়া ও শ্রবণ করা। ঈদের নামাজ খোলা ময়দানে আদায় করা উত্তম। 

ঈদুল ফিতরের দিন দেশের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। আবহাওয়া খারাপ হলে জাতীয় ঈদগাহে সম্ভব না হলে বায়তুল মোকাররমে জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়।

এছাড়া প্রতিবারের মতো এবারও পবিত্র ঈদুল ফিতরে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যায়ক্রমে ৫টি ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৭টায়। দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায়।  তৃতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়।  চতুর্থ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টায়। পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে।

পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন  সর্বসাধারণের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারি বাসভবন বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও তার স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। আর নিজের সরকারি বাসভবন গণভবনে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

এবার পবিত্র ঈদুল ফিতর এবং বাংলা নববর্ষে সরকারি কর্মচারীদের ছুটি শুরু হয়েছে ১০ এপ্রিল। অফিস খুলবে ১৫ এপ্রিল। তবে অনেকেই ৮ ও ৯ এপ্রিল দুদিনের ছুটি নিয়ে ঈদের ছুটি কাটাচ্ছেন টানা ১০ দিন। লম্বা ছুটির কারণে ঈদযাত্রায় ভোগান্তি হয়েছে কম। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ সময় নিয়ে নিজের শেকড়ে ফিরতে পেরেছেন।

কর্মব্যস্ত এই নগরীর সবাই যখন ঈদ উদযাপনে ঢাকা ছেড়েছেন তখন এই ঢাকা হয়ে উঠেছে এক অন্য শহর। বদলে গেছে রাজধানীর চিত্র, নেই চিরচেনা রূপ। এখন আর ঢাকার সড়কে ঘণ্টা পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় না। মুহূর্তেই চলে যাওয়া যাচ্ছে শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে।

এদিকে দেশের সবার জন্য সুখী, আনন্দময় ও নিরাপদ ঈদুল ফিতরের কামনা করে সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, একমাস সিয়াম সাধনার পর আবার আমাদের মধ্যে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর এসেছে। ঈদ মানে আনন্দ। আসুন আমরা আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশীসহ সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করি।

রাজনৈতিক নেতাদের অধিকাংশই নিজ এলাকায় ঈদ উদযাপন করবেন এবার। কেউ কেউ ঢাকায় ঈদ করবেন, আবার কেউ নামাজ শেষে যাবেন এলাকায়। সব মিলিয়ে  নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করবেন তারা, যোগ দেবেন সামাজিক অনুষ্ঠানেও।


আরও খবর



বায়তুল মোকাররমে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৮৫৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল ৭টায় এ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্তের মুসল্লিদের উপচেপড়া ভিড় নামে।

প্রথম জামায়াতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মো. মিজানুর রহমান। মুকাব্বির হিসেবে ছিলেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের মোয়াজ্জিন ক্বারী মো. ইসহাক।

জাতীয় মসজিদে ঈদের প্রথম জামাতে অংশ নিতে ভোর থেকেই বিভিন্ন প্রান্তের মুসল্লিরা আসতে শুরু করেন। নামাজের সময়ে মুসল্লিদের ঢল নামে। নামাজ শেষে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। নামাজের পর একে অন্যের সঙ্গে কোলাকুলি করে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন।

জাতীয় মসজিদে বেলা ১১টা পর্যন্ত ঈদের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতি মুহীউদ্দিন কাসেম। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের মোয়াজ্জিন (অব.) হাফেজ মো. আতাউর রহমান।

তৃতীয় জামাত সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন আজিমপুর কবরস্থান মেয়র হানিফ জামে মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা ইমরান বিন নূরউদ্দীন। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. আব্দুল হাদী।

চতুর্থ জামাত সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির ড. মো. আবু ছালেহ পাটোয়ারী। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. জসিম উদ্দিন।

পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল পৌনে ১১টায়। ইমামতি করবেন মিরপুর জামেয়া আরাবিয়া আশরাফিয়া ও এতিমখানার মুহতামিম মাওলানা সৈয়দ ওয়াহীদুজ্জামান। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. রুহুল আমিন।

৫টি জামাতে কোন ইমাম অনুপস্থিত থাকলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ভাষা শিক্ষক মাওলানা মোহাম্মদ নূর উদ্দীন বিকল্প ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।


আরও খবর