দ্বাদশ নির্বাচনে মনোনয়ন পেতে দলীয় এমপি
ও নেতাদের বিরুদ্ধে নানান বিষোদ্গার করার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতার
বিরুদ্ধে। এতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা। এ কারণে দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে বিষোদ্গারকারীদের সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন
দেবেন না বলে জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার (১২ আগস্ট) রাতে গণভবনে অনুষ্ঠিত
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্তের কথা দলটির সভাপতি
জানিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা।
ওই নেতারা বলেন, দলীয় সভাপতি বৈঠকে বলেছেন, কোনো এমপির বিরুদ্ধে দলের কোনো স্তরের নেতা সমালোচনা করা না থামালে দলেও ওই নেতার জায়গা থাকবে না, এটা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন।কারণ হিসেবে জানান, শেখ হাসিনা বলেছেন, দলের নেতা-কর্মীদের কাজ হচ্ছে বিএনপি-জামায়াতের দুঃশাসন ও অপকর্ম তুলে ধরা। কিন্তু তা না করে অনেকেই নিজ দলের জনপ্রতিনিধিদের নামে বদনাম ছড়ান। এমপির বিরুদ্ধে বিষোদ্গার, সমালোচনা প্রকারান্তরে দলের ও সরকারের সমালোচনা করেন। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে। জনগণের পাশে থাকতে হবে। প্রার্থী নয়, দলের পক্ষে, নৌকার পক্ষে ভোট চাইতে মানুষের দরজায় যেতে হবে। যোগ্যতা, দক্ষতা ও জনপ্রিয়তার ওপরই নির্ভর করবে মনোনয়ন। সমালোচনা-বিষোদ্গার করে মনোনয়ন পাওয়া যাবে না। ভোট সামনে রেখে বিভেদ কমাতেই এই বক্তব্য আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দিয়েছেন বলে মনে করছেন দলটির নেতারা।
জানা গেছে, আগামী নির্বাচনের প্রচারে জোরেশোরে
মাঠে নামার আহ্বান জানিয়ে ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের অর্জন তুলে ধরার পরামর্শ দেন
শেখ হাসিনা। তিনি দলের নেতাদের ঘরে ঘরে গিয়ে সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের সুফল প্রচার
করতে বলেন।
জানা গেছে, শনিবারের সভায় আওয়ামী লীগের
আট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকেরা তাঁদের রিপোর্ট দিয়ে বক্তব্য রাখেন।
তাঁরা দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক জেলার কমিটি গঠন এবং সমস্যা সম্পর্কে দলীয় প্রধানকে
জানান। এ সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি তাঁদের বলেন, দলের দুঃসময়ে যাঁরা ছিলেন, যাঁরা দলের
জন্য নানান ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তাঁদের বাদ দেওয়া যাবে না। একই সঙ্গে পুরোনো কমিটিতে
যাঁরা ছিলেন, তাঁদেরও যেন কমিটিতে রাখা হয়।
সভায় চুয়াডাঙ্গা, নোয়াখালী ও শেরপুরের
পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন হচ্ছে না, সেই প্রশ্ন তুলে শেখ হাসিনা বলেন, সময়মতো ও নির্ধারিত
সময়ে কমিটি করতে না পারলে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দাও সেই সব নেতাকে।
আগামী ২ সেপ্টেম্বর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের
উদ্বোধন করা হবে। ওই দিন ঢাকা উত্তরে সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হবে। সেখানে বক্তব্য
রাখবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ কারণে আগামী ২ সেপ্টেম্বর
সিলেটে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জনসভা স্থগিত করা হয়েছে। এই সমাবেশ পরবর্তী সময়ে হবে। সেই
সময় খুলনা ও কুমিল্লায় জনসভা করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি। এরপরে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ
জেলায় সমাবেশ করবেন তিনি।