মোবাইলে লুডু
খেলার সময় গালি দেওয়ায় রতন মোল্লা নামে এক শিশুকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ
ঘটনায় সোহান নামে আরও এক শিশুকে হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে। বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে
আটক মেহেদী প্রাথমিকভাবে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।
পুলিশ ও পারিবারিক
সূত্রে জানা যায়, জেলার শিবচর উপজেলার কাদিরপুর ইউনিয়নের চরকান্দি এলাকার আনসু বেপারির
বাড়িতে কয়েক দিন আগে ঢাকা থেকে বেড়াতে আসে মেয়ের ছেলে মেহেদী হাসান (১৮)। বাড়িতে আসার
পর মেহেদী পার্শ্ববর্তী কৃষক জসিম মোল্লার একমাত্র ছেলে রতন মোল্লা (৮) ও নাসির সিকদারের
ছেলে সোহানের (৯) সঙ্গে মোবাইলে গেম খেলত। মঙ্গলবার সকালে সোহানের মায়ের মোবাইলে আবারও
তিনজন লুডু খেলে। খেলার সময় রতন ও সোহান মেহেদীকে গালি দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মেহেদী
শিশু দুটিকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
শিবচর থানা পুলিশ
জানায়, মেহেদী মঙ্গলবার বিকেলে ঘোরানো ও নতুন রেস্টুরেন্টে খাওয়ানোর কথা বলে পদ্মা
সেতুর অ্যাপ্রোচ সড়ক সংলগ্ন নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে সোহানকে পানি আর চানাচুর
কেনার জন্য দোকানে পাঠায়। সোহান খাবার নিতে চলে গেলে মেহেদী রতনকে নির্জন স্থানে শ্বাসরোধ
করে হত্যা করে। প্রায় ২০ মিনিট পর সোহান এসে রতন কোথায় জানতে চায়।
মেহেদী জানায়,
রতন বাড়ি চলে গেছে। এ কথা বলে মেহেদী সোহানকে নিয়ে বাংলাবাজার ঘাট এলাকায় যায়। সেখানে
নিয়ে সোহানকেও শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করে। সোহানের চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে মেহেদী
নানা বাড়ি পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা সোহানকে উদ্ধার করে। নানা বাড়িতে পৌঁছালে মেহেদীর
সারা শরীরে কাদা মাখা দেখে তারা রতন ও সোহানের খোঁজ জানতে চায়। কৌশলে মেহেদী বিষয়টি
এড়িয়ে যেতে চাইলে স্বজনরা শিবচর থানায় খবর দেয়।
সহকারী পুলিশ
সুপার মো. আনিসুর রহমান, শিবচর থানার ওসি মো. মিরাজ হোসেন, পরিদর্শক (তদন্ত) আমির সেরনিয়াবাতসহ
পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে মেহেদীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে মেহেদী হত্যাকাণ্ডের
বিষয়টি স্বীকার করে। মঙ্গলবার মধ্যরাতে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে।
ঘাতক মেহেদী সাংবাদিকদের
বলেন, মোবাইলে লুডু খেলার সময় ওরা আমার বাবা-মাকে গালি দেয়। তাই আমি ওকে হত্যা করেছি।
আহত শিশুর মামা
ইউসুফ মাতবর জানান, আমার মেঝ বোনের একমাত্র ছেলেকেও মেহেদী হত্যার চেষ্টা করেছিল। আল্লাহর
রহমতে সে বেঁচে আছে। তবে ওর বন্ধুকে গলা টিপে মেরে ফেলেছে। আমরা এই নির্মম হত্যার কঠোর
বিচার চাই।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত
কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিরাজ হোসেন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোবাইলে লুডু খেলার সময়
গালি দেওয়া নিয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তদন্ত করলে বিষয়টি বোঝা যাবে।