রাজধানীর নিউমার্কেট
এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের সময় নিহত নাহিদ হাসানের
মৃত্যুর ঘটনায় করা হত্যা মামলায় ঢাকা কলেজের ছাত্র মাহমুদুল হাসান সিয়ামকে তিন দিনের
রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার ঢাকার মহানগর হাকিম মোশারফ হোসেন রিমান্ডে নেওয়ার
নির্দেশ দেন।
আদালতে নিউমার্কেট
থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) এসআই সাফায়েত হোসেন এ তথ্য জানান।
আজ দুপুরের পর
আসামিকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশ পরিদর্শক মো. তারিকুল
আলম জুয়েল। একই সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানি শেষে
আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে সিয়ামকে
গত বুধবার শরীয়তপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সিয়াম ঢাকা কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের
ছাত্র। তিনি ঢাকা কলেজের কোনো হলে থাকেন না। বাইরে থেকে এসে তিনি ছাত্রদের সঙ্গে সংঘর্ষে
যোগ দেন।
রিমান্ড আবেদনে
বলা হয়, আসামি মাহমুদুল হাসান সিয়াম নাহিদ হত্যার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। ঘটনার
সময় করা ভিডিও ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখা গেছে ইটের আঘাতে পড়ে যাওয়া নাহিদকে শোয়া অবস্থায়
সিয়াম রড দিয়ে পেটান। তাঁর সঙ্গে অন্য যাঁরা জড়িত ছিলেন, তাঁদের গ্রেপ্তার এবং তাঁদের
সম্পর্কে তথ্য জানার জন্য সিয়ামকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।
এই মামলায় ঢাকা
কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অনার্স চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আব্দুল কাইয়ুম, সমাজবিজ্ঞান
বিভাগের অনার্স চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মাহমুদ এরফান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের
প্রথম বর্ষের ছাত্র জুনাইদ বুগদাদী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র পলাশ
মিয়া ও বাংলা অনার্স চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ফয়সাল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে দুই দিনের রিমান্ড
শেষে গত ১ মে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গত ২০ এপ্রিল
নিহত নাহিদের বাবা মো. নাদিম হোসেন বাদী হয়ে নিউমার্কেট থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায়
তিনি অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করেন।
নাহিদ একটি কুরিয়ার
সার্ভিসে ডেলিভারিম্যান হিসেবে কাজ করতেন। ঘটনার দিন গত ১৯ এপ্রিল কামরাঙ্গীরচরের বাসা
থেকে বের হয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। এ সময় সংঘর্ষের মধ্যে গুরুতর আহত হন নাহিদ। পরে
হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানেই তিনি মারা যান।
এর আগে ১৮ এপ্রিল
রাত ১২টার দিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ও দোকানকর্মীদের
সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা চলে এই সংঘর্ষ। এরপর রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও
১৯ এপ্রিল সকাল ১০টার পর থেকে ফের দফায় দফায় শুরু হয় সংঘর্ষ, যা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
এ ঘটনায় উভয় পক্ষের
অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।
আহতদের মধ্যে মারা যান নাহিদ ও মোরসালিন নামের একজন।