ফরিদপুর জেনারেল
হাসপাতালে ভর্তি এক রোগীর স্বামীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে যুবলীগ কর্মী। কাটাকাটির
জেরে খাবাসপুর এলাকার যুবলীগ কর্মী দেবাশীষ নয়নকে ফোন করে ডেকে এনে এমন ঘটনা ঘটানোর
অভিযোগ উঠেছে দায়িত্বপ্রাপ্ত এক নার্সের বিরুদ্ধে। বুধবার রাত ৮টার দিকে হাসপাতালের
নারী ওয়ার্ডে ওই ঘটনাটি ঘটে।
হাসপাতাল সূত্রে
জানা গেছে, শহরের টেপাখোলা বিন্দাবনের মোড় এলাকার বাসিন্দা রাসেলের স্ত্রী হীরা গত
২১ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের নারী ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন। তাকে প্রতিদিন
দুবার রক্ত পরীক্ষার নির্দেশনা দেন চিকিৎসক।
বুধবার রাতে জেনারেল
হাসপাতালের প্যাথলজি ল্যাব বন্ধ থাকায় বাইরের বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে পরীক্ষা
করানোর জন্য দায়িত্বরত নার্সকে সিরিঞ্জে রক্ত টেনে দিতে বলেন হীরার স্বামী রাসেল। এতে
নার্স ইলা সিকদার রক্ত টেনে দেয়া তার দায়িত্ব না জানিয়ে রাসেলের সঙ্গে দুর্ব্যবহার
করেন।
এ সময় রাসেল ইলাকে
বলেন, ‘সরকারি বেতন খান,
রক্ত টানবেন না কেন?’ পরে ইলা সিকদার নার্স সুপারভাইজারের কাছে
রাসেলের নামে নালিশ করেন। একই সঙ্গে শহরের খাবাসপুর এলাকার যুবলীগ কর্মী দেবাশীষ নয়নকে
ফোন করে ডেকে আনেন।
রাসেল নার্স সুপারভাইজারের
কাছে দুঃখ প্রকাশ করে বের হওয়ার পর পরই দেবাশীষ নয়ন ও তার সঙ্গে থাকা আরও দু-তিনজন
রাসেলকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করে চলে যান।
খবর পেয়ে কোতোয়ালি
থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
রাসেলের স্ত্রী
হীরা জানান, তার শরীরের এক অংশ প্যারালাইজড। প্রতিদিন দুবার তাকে রক্ত পরীক্ষা করাতে
হয়। কাল সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করলে দেরি হয়ে যাবে, তাই সিস্টারকে অনুরোধ করা হয়েছিল
রক্ত টেনে দিতে।
নার্স সুপারভাইজার
জহুরা বেগম বলেন, রোগী ও নার্সের মাঝে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। সেটা মিটমাট করেছি। কিন্তু
এই ঘটনায় ইলা জড়িত কি না আমার জানা নেই।
ঘটনার পর ইলা
আত্মগোপনে থাকায় তার কোনো বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
কর্তব্যরত চিকিৎসক
ডা. সাইফুজ্জামান বলেন, আহত রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার প্রচুর ব্লিডিং হয়েছে। প্রাথমিক
চিকিৎসা দিয়ে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে।’
এ বিষয়ে অতিরিক্ত
পুলিশ সুপার সদর সার্কেল সুমন রঞ্জন সরকার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘অভিযুক্তদের ধরতে
পুলিশ কাজ শুরু করেছে।’
সিভিল সার্জন ডা. ছিদ্দিকুর রহমান বলেছেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব। এ ঘটনার পর ওই নার্স আত্মগোপনে আছেন। ঘটনার তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।