ইসলামের নবী
হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতাদের অবমাননাকর মন্তব্যের
জেরে অনেকটা বিপদে পড়েছে ভারত। ইতোমধ্যে অন্তত ১৫টি দেশ ভারতের ওপর নিন্দা জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে
বলা হয়েছে, ইরাক, ইরান, কুয়েত, সৌদি আরব, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডান, আফগানিস্তান,
পাকিস্তান, বাহরাইন, মালদ্বীপ, লিবিয়া, তুর্কিয়ে এবং ইন্দোনেশিয়া সরকারিভাবে বিজেপি
নেতাদের মন্তব্যের জেরে ভারতের বিরুদ্ধে নিন্দা জানিয়েছে।
এসব দেশ নিন্দা
জানানো সঙ্গে নবীর ওপর অপমানের মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে। সেই সঙ্গে ভারতকে প্রকাশ্যে
ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছে।
যদিও গত রবিবার
(৫ জুন) ইতোমধ্যে বিজেপি দলের মুখপাত্র নূপুর শর্মা ও তার সহকর্মী নাভিন কুমার জিন্দালকে
তাদের মন্তব্যের জন্য দল থেকে বহিষ্কার ও বরখাস্ত করেছে। তবে এতে আরব দেশগুলোর ক্ষোভ
তেমন একটা কমেনি বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এর আগে কুয়েত,
ইরান ও কাতার তাদের প্রতিবাদ জানাতে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতদের তলব করেছিল। কড়া ভাষায় বিবৃতি
জারি করেছিল সৌদি আরব। এর জেরে ইতোমধ্যে কুয়েত সিটির এক সুপারমার্কেট থেকে ভারতীয় পণ্য
সরিয়ে ফেলা হচ্ছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে
বলা হয়েছে, ওই সুপারমার্কেটে শেলফে রাখা সব ভারতীয় পণ্য প্লাস্টিক সিট দিয়ে ঢেকে দেওয়া
হচ্ছে। ভারত থেকে আমদানি করা চালের বস্তাও ঢেকে ফেলা হচ্ছে। দোকানের বিভিন্ন স্থানে
লেখা হয়েছে, ভারতীয় পণ্য সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
ভারতীয় পণ্য ও সিনেমা বয়কটের ডাক সেখানকার সামাজিক মাধ্যমে ট্রেন্ডিংয়ের তালিকায়
উঠে এসেছে।
ভারতীয় কূটনীতিকরা
এই দেশগুলোকে কূটনৈতিকভাবে শান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এদিকে দেশটির বিরোধীদলগুলো
বিজেপির এই দুই নেতার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। একইসঙ্গে বিজেপিকে
আন্তর্জাতিক স্তরে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার অভিযোগ করেছে।
তবে ভারতের
পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, এই দুই নেতার টুইট ও মন্তব্য সরকারের মতামতকে
প্রতিফলিত করে না।
ভারতের আলোচিত
জ্ঞানবাপী মসজিদ ইস্যুতে গত সপ্তাহে এক টেলিভিশন টকশোতে মহানবী (সা.) প্রসঙ্গে অবমাননাকর
মন্তব্য করেন নূপুর শর্মা। এ ঘটনায় কানপুরের মুসলিমদের মধ্যে বিক্ষোভ তৈরি হয়। এছাড়া
নবীকে নিয়ে নাভিন কুমার জিন্দালও টুইটারে পোস্ট করেন। এতে মুসলিমদের মধ্যে আরও ক্ষোভ
ছড়িয়ে পড়ে। যদিও তিনি এই টুইট পরবর্তীতে মুছে দেন।
এর জেরে গত
শুক্রবারে কানপুরের একপক্ষ স্থানীয় বাজার বন্ধ করার আহ্বান জানালে অপরপক্ষ পাল্টা অবস্থান
নেয়। এর পরে সংঘর্ষে অন্তত ৪০ জন আহত হয়। এর মধ্যে ২০ জন পুলিশ সদস্য।
ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এছাড়া এই ঘটনায় পুলিশ ৩৬ জনকে গ্রেফতার করেছে, মামলা দায়ের করেছে ১ হাজার ৫০০ লোকের বিরুদ্ধে।