জমি ক্রয়ের নামে ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ টাকার বেশি আত্মসাতের অভিযোগে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিনসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
দুদক সচিব সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের বলেন, জমি ক্রয়ের নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল দুদক। মামলার তদন্তে অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্যপ্রমাণ পাওয়ায় আরও তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।
যাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দেয়া হয়েছে তারা হলেন—নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদ, বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য এম এ কাশেম, বেনজীর আহমেদ, রেহানা রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান ও আশালয় হাউজিং অ্যান্ড ডেভেলপার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিন মো. হিলালী।
চার্জশিটে নতুন করে আসামি করা হয়েছে আশালয় হাউজিং অ্যান্ড ডেভেলপার্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক, দুই পরিচালক আনোয়ারা বেগম ও এ কে এম আনোয়ারুজ্জামান। তবে মামলা বা চার্জশিটে উপাচার্যকে আসামি করা হয়নি।
চার্জশিটে বলা হয়েছে, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ হলো বোর্ড অব ট্রাস্টিজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন অ্যান্ড আর্টিকেলস (রুলস অ্যান্ড রেগুলেশনস) অনুযায়ী ওই বিশ্ববিদ্যালয় একটি দাতব্য, কল্যাণমুখী, অবাণিজ্যিক ও অলাভজনক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনকে পাশ কাটিয়ে বোর্ড অব ট্রাস্ট্রিজের কয়েকজন সদস্য নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ডেভেলপমেন্টের নামে ৯ হাজার ৯৭ ডেসিমাল জমির ক্রয়মূল্য বাবদ ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ ১৩ হাজার ৪৯৭ টাকা বেশি দেখিয়ে আত্মসাৎ করেন।
চার্জশিটে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে কম দামে জমি ক্রয় সত্ত্বেও বেশি দাম দেখিয়ে প্রথমে বিক্রেতার নামে টাকা প্রদান করেন। পরে বিক্রেতার কাছ থেকে কমিশন বা ঘুষ হিসেবে নগদ চেক ও পে-অর্ডারের মাধ্যমে টাকা নিয়ে উত্তোলন এবং নিজেদের নামে এফডিআর করে রাখেন। এরপর ওই এফডিআরের অর্থ মেয়াদ পূর্তির আগে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।
দুদকের তদন্তে আসামিদের বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে নিজেরা অন্যায়ভাবে লাভবান হয়েছেন এবং ওই বেআইনি কার্যক্রম করার ক্ষেত্রে প্রতারণা ও জালজালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে কমিশন বা ঘুষের আদান প্রদান করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় ৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দেয় কমিশন। তদন্ত কর্মকর্তা শিগগিরই আদালতে চার্জশিট দাখিল করবেন।