এক সপ্তাহেরও
বেশি সময় ধরে নিজের মন্ত্রিসভা সাজিয়েছেন পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।
বিস্তর টালবাহানার পরে গত কাল শপথ নিয়েছেন সদ্যগঠিত সেই মন্ত্রিসভার সদস্যেরা। আর সেখানে
যথেষ্ট চমক রেখেছেন পিএমএল-এন প্রধান শরিফ। তাঁর মন্ত্রিসভা এখন আলো করছেন পাঁচ নারী
সদস্য। যা নিয়ে পাক সংবাদমাধ্যম শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
সদ্য প্রাক্তন
পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মন্ত্রিসভায় নারীরা তেমন গুরুত্ব পাননি। কিন্তু শাহবাজ ব্যতিক্রমী। নিজের মন্ত্রিসভায় পাঁচ নারীকে গুরুত্বপূর্ণ পদে রেখেছেন তিনি। যাঁর মধ্যে
রয়েছেন শেরি রহমান, হিনা রব্বানি খার, সাজিয়া মারি, মরিয়ম ঔরঙ্গজেব, এবং আয়েষা গউস
পাশা।
পাকিস্তান পিপলস
পার্টির চেয়ারম্যান তথা বেনজির ভুট্টোর পুত্র বিলাবল জারদারি ভুট্টো শরিফের এই মন্ত্রিসভায়
আপাতত কোনও পদ পাননি। তবে পাক সংবাদমাধ্যমগুলিতে জল্পনা চলছিল বিদেশমন্ত্রীর গুরুত্বপূর্ণ
পদ পেতে পারেন বিলাবল। শরিফ আপাতত বিদেশ মন্ত্রকটি নিজের কাছেই রেখেছেন আর সেই মন্ত্রকের
প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছেন প্রাক্তন পাক বিদেশমন্ত্রী তথা পিপিপি নেত্রী হিনা রব্বানি
খারকে।
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা
মনে করছেন ভবিষ্যতে হিনার দলের চেয়ারম্যান অর্থাৎ বিলাবলকেই বিদেশমন্ত্রীর আসনে বসাতে
পারেন শরিফ। তবে তার আগে প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্কের তল নিজে মাপতে চাইছেন
শাহবাজ। তাই আপাতত প্রতিমন্ত্রী হিসেবে রেখেছেন এই মন্ত্রকের অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন এক
নেত্রীকে।
আমেরিকায় পাকিস্তানের
প্রাক্তন দূত শেরি রহমানকেও পরিবেশের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ দিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন
শরিফ। ইমরান খানের আমলে পরিবেশ মন্ত্রকের দায়িত্বে ছিলেন তাঁর দলের জারতাজ গুল। কিন্তু
তিনি ততটা গুরুত্ব দিয়ে সেই মন্ত্রকের দেখভাল করতে পারেননি বলে অভিযোগ ওঠে। এক এক সময়ে
পরিবেশ সংক্রান্ত নানা বিতর্কিত কথা বলে সংবাদের শিরোনামে থেকেছেন গুল। অথচ পাকিস্তানের
বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, কোনও ক্ষেত্রেই পরিবেশকে গুরুত্ব দিতে চাননি তিনি। উল্টো দিকে,
আমেরিকায় পাক দূত হিসেবে শেরির কর্মদক্ষতা প্রশংসা কুড়িয়েছিল তাঁর বিরোধী দলগুলির
কাছেও। এ বারেও তাঁকে জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী করে শরিফ বুদ্ধিমত্তারই পরিচয় দিয়েছেন
বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।
পিএমএল-এন নেত্রী মরিয়ম ঔরঙ্গজেবকে তথ্যমন্ত্রীর পদ দিয়েছেন শাহবাজ। বরাবরের স্পষ্টবাদী মরিয়মও নিজের কাজ ভালই সামলাতে পারবেন বলে মনে করা হচ্ছে। মন্ত্রিসভায় আরও দুই নারী মুখ হলেন পিপিপি-র নেত্রী সাজিয়া মারি এবং পিএমএল-এনের আয়েষা গউস পাশা। এঁরা দু’জনেই প্রথম বারের জন্য পাকিস্তানের মন্ত্রী হলেন। সাজিয়াকে বেনজির ইনকাম সাপোর্ট প্রোগ্রাম (বিআইএসপি)-এর মন্ত্রক এবং আয়েষাকে অর্থ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।