Logo
শিরোনাম

অভিনেত্রী শিমুকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে স্বামী: ওসি তদন্ত

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৮ জানুয়ারী ২০২২ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ নভেম্বর ২০২৩ | ১৫৭০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম শিমুকে তার স্বামী হত্যা করেছেন। পারিবারিক কলহের জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আজ মঙ্গলবার কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী রমজানুল হক বলেন, 'রাইমা ইসলাম শিমুর স্বামী সাখাওয়াত আলী নোবেল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। পারিবারিক কলহের জেরেই তিনি এই হত্যা করেছেন বলে জানিয়েছেন।'

রাজধানীর কেরানীগঞ্জের হযরতপুর ব্রিজের নীচ থেকে গতকাল সোমবার দুপুরে শিমুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

এর আগে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী রমজানুল হক জানান, শিমুর বাসা ঢাকার গ্রিন রোড এলাকায়। তিনি গত ৩-৪ দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন। নিখোঁজের ঘটনায় কলাবাগান থানায় একটি জিডি করা হয়েছিল বলেও জানান তিনি। এ ঘটনায় শিমুর স্বামীসহ ২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়।


আরও খবর



লুট হওয়া অস্ত্র জমা দেওয়ার শেষদিন আজ, কাল থেকে অভিযান

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৭৮০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে ও পরে সারাদেশে বিভিন্ন থানা ও ফাঁড়িতে হামলা এবং অস্ত্র-গোলাবারুদ লুট করে দুর্বৃত্তরা। এর প্রেক্ষিতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এক নির্দেশনায় কোনো ব্যক্তির কাছে এ ধরনের অস্ত্র ও গোলাবারুদ রক্ষিত থাকলে মঙ্গবারের মধ্যে তা নিকটস্থ থানায় জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়। পরিসংখ্যান অনুযায়ী- দেশে বিভিন্ন জনের কাছে থাকা বৈধ অস্ত্রের সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার। এসব বৈধ অস্ত্রের মধ্যে সোমবার পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে ৩ হাজার ৮৮০টি, অর্থাৎ এখনও জমা হয়নি ৪৬ হাজারের বেশি অস্ত্র। আজ মঙ্গলবারের মধ্যে জমা দিতে হবে এসব অস্ত্র। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে সারা দেশে বুধবার থেকে যৌথ অভিযান চালানো হবে।

পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি ইনামুল হক সাগর বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার আলোকে সব বাহিনীর সমন্বয়ে অস্ত্র উদ্ধারে যৌথ অভিযান চলবে। এ বিষয়ে পরিকল্পনা ঠিক করা হবে।

একটি সূত্র থেকে জানা যায়, রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কোর কমিটির বৈঠক হয়েছে। এতে সব বাহিনী ও গোয়েন্দাপ্রধান এবং তাদের প্রতিনিধিরা ছিলেন। সম্প্রতি থানা, ফাঁড়ি ও পুলিশ স্টেশন থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করার বিষয়ে এতে জোর দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ছাত্র আন্দোলন ঠেকাতে যারা নির্বিচারে গুলি করে গা-ঢাকা দিয়েছেন, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। গুলি করার অনেক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এসব ঘটনায় দায়ীদের চিহ্নিত করার কথাও বলা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যেসব সদস্য নির্বিচারে গুলি করায় সরাসরি জড়িত ও পলাতক রয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

যৌথ অভিযানে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র‍্যাবসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা থাকবেন। অবৈধ অস্ত্রধারীদের গ্রেপ্তারে দেশব্যাপী অভিযান চালানো হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন কর্মকর্তা জানান, জেল পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে জোর দেওয়া হবে।

পুলিশ সদরদপ্তর থেকে পাঠানো খুদে বার্তায় জানা গেছে, গতকাল পর্যন্ত লুণ্ঠিতসহ বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে ৩ হাজার ৮৮০টি। গুলি জব্দ করা হয়েছে দুই লাখ ৮৬ হাজার ৩৫৩ রাউন্ড, টিয়ার গ্যাসের শেল ২২ হাজার ২০১টি ও সাউন্ড গ্রেনেড দুই হাজার ১৩৯টি।

২৫ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে গত ৫ আগস্ট পর্যন্ত বেসামরিক লোকজনকে দেওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে। ওই সময়ে যাদের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে, তাদের ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে গোলাবারুদসহ আগ্নেয়াস্ত্র সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দিতে হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী, অস্ত্র-গোলাবারুদ জমা দেওয়ার শেষ দিন পেরিয়ে যাওয়ার পর অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে যৌথ অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, দেশে এখন লোকজনের কাছে বৈধ অস্ত্র প্রায় ৫০ হাজার। এর মধ্যে ১০ হাজারের বেশি অস্ত্র রয়েছে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর হাতে। তাদের বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী। তাদের অনেকেই ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর অস্ত্রের লাইসেন্স পেয়েছেন।

এ ছাড়া পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, থানা ও ফাঁড়ি থেকে লুণ্ঠিত অস্ত্র ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যারা এ সময়ের মধ্যে অস্ত্র-গুলি জমা না দেবেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


আরও খবর

শহীদি মার্চে লাখো ছাত্র-জনতার ঢল

বৃহস্পতিবার ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪




ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেতা গঞ্জালেজ দেশ ছেড়েছেন, গন্তব্য স্পেন

প্রকাশিত:রবিবার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৭১৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেতা এডমান্ডো গঞ্জালেজ দেশ ছেড়েছেন। তাঁর গন্তব্য স্পেন। তিনি স্পেনে আশ্রয় চাচ্ছেন। ভেনেজুয়েলা ও স্পেনের কর্মকর্তারা গতকাল শনিবার রাতে এ তথ্য জানিয়েছেন। গত জুলাইয়ে ভেনেজুয়েলায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়। এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরোর বিপক্ষে লড়েন বিরোধী প্রার্থী গঞ্জালেজ (৭৫)।

নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। মাদুরোকে জয়ী ঘোষণা করে দেশটির নির্বাচন কর্তৃপক্ষ। তবে বিরোধীরা এই ফলাফল মানতে অস্বীকৃতি জানায়। তারা দাবি করে, নির্বাচনে বিরোধী প্রার্থী গঞ্জালেজ জয়ী হয়েছেন।

বিতর্কিত নির্বাচনের পর থেকে বিরোধীদের ওপর দমন-নিপীড়ন চালিয়ে আসছে মাদুরো সরকার। সম্প্রতি গঞ্জালেজের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন দেশটির একটি আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে উসকানির অভিযোগ আনা হয়। এ ছাড়া অন্যান্য অপরাধের অভিযোগও আনা হয়। এখন তিনি দেশ ছাড়লেন।

ভেনেজুয়েলার ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেলসি রদ্রিগেজ ইনস্টাগ্রামে পোস্টে বলেছেন, বেশ কয়েক দিন আগে রাজধানী কারাকাসের স্প্যানিশ দূতাবাসে স্বেচ্ছায় আশ্রয় নেওয়ার পর এখন গঞ্জালেজ দেশ ছেড়েছেন।

স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসে ম্যানুয়েল আলবারেস এক্সে (সাবেক টুইটার) বলেছেন, গঞ্জালেজ কারাকাস থেকে স্প্যানিশ বিমানবাহিনীর একটি উড়োজাহাজে করে স্পেনের উদ্দেশে যাত্রা করেছেন। গঞ্জালেজের কাছ থেকে আসা একটি অনুরোধে সাড়া দিচ্ছে মাদ্রিদ।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, গঞ্জালেজ এত দিন ভেনেজুয়েলায় আত্মগোপনে ছিলেন। তিন স্প্যানিশ সরকারের কাছে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন।

স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, গঞ্জালেজকে নিরাপদে যেতে দিতে রাজি হয় কারাকাস। এরপর তিনি দেশ ছাড়েন।

স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ভেনেজুয়েলার সব নাগরিকের রাজনৈতিক অধিকারের ব্যাপারে স্পেন সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

গঞ্জালেজের এক আইনজীবী বার্তা সংস্থা এএফপিকে নিশ্চিত করেছেন যে তিনি (গঞ্জালেজ) স্পেনের উদ্দেশে দেশ ছেড়েছেন। তবে এ বিষয়ে তিনি আর কোনো বিস্তারিত তথ্য জানান নি।


আরও খবর



খুলনা মেডিকেলের ৪১ চিকিৎসককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা, চিকিৎসাসেবা বন্ধ

প্রকাশিত:বুধবার ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৬৭৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

ভেঙে পড়েছে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা। হাসপাতালের ৪১ চিকিৎসককে অবাঞ্ছিত ও কালো তালিকাভুক্ত করায় বন্ধ রয়েছে বহির্বিভাগের অধিকাংশ সেবা। বুধবার (৪ আগস্ট) সকাল থেকে কর্মস্থলে আসেনি বহির্বিভাগের অধিকাংশ চিকিৎসক। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা।

হাসপাতাল সূত্র বলছে, মঙ্গলবার খুলনা মে‌ডি‌কেল কলেজের শিক্ষার্থী‌দের এক‌টি অংশ হাসপাতা‌লের ভারপ্রাপ্ত উপপ‌রিচালক ডা. আক্তারুজ্জামানকে পদ‌ত‌্যাগ করতে বাধ্য করেন। এ সময় আরও ৪১ জন চি‌কিৎসক‌কে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। শিক্ষার্থী‌দের নেতৃত্ব দেন কা‌র্ডিও‌লো‌জি বিভাগের সহকারী অধ‌্যাপক ডা. মোস্তফা কামাল। ফলে বুধবার নিরাপত্তা ঝুঁকি‌তে হাসপাতা‌লে আসেন‌নি অনেক চি‌কিৎসক।

সরেজমিন দেখা যায়, ব‌হির্বিভা‌গের ২০২নং রুমের প্রীতম চক্রবর্তী, ২০৯নং রুমের ডা. হিমেল সাহা, ২০৭নং রুমের ডা. অনিরুদ্ধ সরদার, ২০৫নং রুমের ডা. শেখ তাসনুভা আলম, ২০৪নং রুমের ডা. সুব্রত কুমার মন্ডল, ২০৩নং রুমের আরএমও ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার, ২১১নং রুমের ডা. দীপ কুমার দাশ, ২১২নং রুমের আরএমও ডা. সুমন রায়, ১০৩নং রুমের ডা. তড়িৎ কান্তি ঘোষ, ৩০৮নং রুমের ডা. নিরুপম মন্ডল, ২০৪নং রুমের ডা. আবদুল্লাহ আল মামুন, ৪১১নং রুমের ডা. রনি দেবনাথ তালুকদার, ৪১০নং রুমের ডা. মিথুন কুমার পাল, ৪১২নং রুমের ডা. জিল্লুর রহমান তরুণ, ১০৫নং রুমের চিকিৎসক শিবেন্দু মিস্ত্রিসহ প্রায় ২০ জন চি‌কিৎসক অনুপস্থিত। নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকায় তারা হাসপাতালে আসেননি বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা।

এ ছাড়া আন্তঃবিভাগের সহকা‌রী রেজিস্ট্রার কনসালট‌্যান্টসহ আরও ২১ জন চি‌কিৎসক অনুপ‌স্থিত। এতে পুরো হাসপাতালের চি‌কিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা সেবা না পেয়ে ফেরত যাচ্ছেন।

বাগেরহাটের রামপাল উপজেলা থেকে আসা আরেফিন বিল্লাহ বলেন, বাড়ি থেকে ডাক্তার দেখাতে এসেছি সকাল ১০টার দিকে। দুপুর পার হলেও চিকিৎসক আসেননি। আমি শিক্ষকতা করি, আজ ছুটি থাকায় এসেছি। অথচ এসে ডাক্তার দেখাতে পারিনি। শুধু আমি নই, অন্য রোগীরাও ফিরে যাচ্ছেন।

হাসপাতালে আসা রোগী সাদিয়া আফরিন বলেন, ডাক্তার দেখাতে এসেছি সেই সকালে, এখনও দেখাতে পারিনি। আজ তো দেখাতে পারিনি, আগামীকালও ডাক্তার আসবে কি না জানি না।

ডাক্তারদের রুমের সামনে রোগীদের সিরিয়াল দেখভালের দায়িত্বরতরা জানান, সকালে আমরা এসেছি। এসে দেখি চিকিৎসকরা আসেননি। ফোন করলে তারা জানিয়েছেন, নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রয়েছেন তারা, এ জন্য আসেননি। রোগীরা আসছেন, আবার ফিরে যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. সুমন রায় মুঠোফোনে বলেন, গতকাল ইনটার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে তাদের দাবির বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছিল। এ সময় ডাক্তার মোস্তফা কামালের নেতৃত্বে কিছু শিক্ষার্থী এসে আমাদের ঘিরে ধরে। পরে তারা উপপরিচালককে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন। আর আমাদের প্রায় ৫১ জন চিকিৎসককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। ফলে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকায় আমরা আসিনি।

মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল-সংলগ্ন নগরীর ১৭নং ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক মো. ফারুক বলেন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাড. শফিকুল আলম মনা আমাকে পাঠিয়েছেন, হাসপাতালে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে চিকিৎসকদের নিয়ে কোনো বিশৃঙ্খলা হচ্ছে কিনা দেখতে। সকালে আমরা এখানে এসেছি, এসে দেখি ডা. মোস্তফা কামাল নেই। বহির্বিভাগে অনেক রোগী এসে ফিরে যাচ্ছে। এটা কাম্য নয়। আমরা চাই হাসপাতালের সুষ্ঠু পরিবেশ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি বলেন, গত ১৬ বছর বৈষম্যের শিকার হয়েছেন, তারা নিগৃহের শিকার হোক আমরা চাই না। আমরা জানতে পেরেছি, অনেকেই ব্যক্তিগত আক্রোশ মিটাচ্ছেন। একজনকে সরিয়ে দিয়ে আরেকজনকে বসানোর একটা ফাইদা লোটার চেষ্টা চলছে।

তিনি বলেন, এখানে বার বার একজন ডাক্তারের নাম উঠে আসছে। তিনি হলেন, কার্ডিওলোজি বিভাগের ডা. মোস্তফা কামাল। তাকে আমরা পায়নি। তার ব্যাপারেও আমরা তদন্ত করে দেখছি। কাউকে জোর করে সরিয়ে দেওয়া আমরা সমর্থন করি না। কাউকে সরাতে হলে নিয়মতান্ত্রিকভাবে তদন্ত সাপেক্ষে ধাপে ধাপে করতে হবে। এক দিনেই ৪০ জনকে সরিয়ে দেব, এতে চিকিৎসা সেবা বিঘ্নিত হবে। পুরো খুলনা বিভাগে এর প্রভাব পড়ছে। আমরা সবার সঙ্গে কথা বলছি, স্বাস্থ্য সচিবের সঙ্গেও কথা বলবো। এখানে দুটি পার্ট রয়েছে, স্বাস্থ্য সেবা ও শিক্ষা। শিক্ষা পার্টের শিক্ষার্থীদের একটি অংশ এই কাজটি করেছেন। তবে স্বাস্থ্য বিভাগে শুধু শিক্ষার্থীদের অধিকার নেই, এখানে খুলনা বিভাগের নাগরিক ও রোগীদের অধিকারটাই বেশি। আমরা এখানে সুষ্ঠু সমাধানে একটি ভূমিকা রাখতে চাই।


আরও খবর



আরব আমিরাতে দণ্ডপ্রাপ্ত সেই ৫৭ বাংলাদেশিকে ক্ষমা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৫১০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফেডারেল আদালতের দোষী সাব্যস্ত হওয়া ৫৭ বাংলাদেশিকে ক্ষমা করেছেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান। শিগগিরই তাদের বাংলাদেশে পাঠানো হবে।

মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গণমাধ্যম সম্পাদক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ কথা জানান। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গত ১৯ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করায় ৫৭ জন বাংলাদেশিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন দেশটির একটি আদালত। তাদের মধ্যে তিনজনকে যাবজ্জীবন, ৫৩ জনকে ১০ বছর এবং বাকি একজনকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আমিরাতের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা আমিরাতি নিউজ এজেন্সি (ডব্লিউএএম) তখন জানিয়েছিল, কারাদণ্ডের মেয়াদ শেষে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে।

ডব্লিউএএমের প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ব্যক্তিরা তাদের নিজ দেশের সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছিলেন। একজন প্রত্যক্ষদর্শী নিশ্চিত করেছেন যে বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে তারা সংযুক্ত আরব আমিরাতের বেশ কয়েকটি সড়কে বড় ধরনের বিক্ষোভের আয়োজন করেছিলেন।

এদিকে গত ১৮ আগসট ফাউন্ডেশন ফর ল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ফ্লাড) চেয়ারপারসন সিনিয়র অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছিলেন, তখন (দূতাবাসের) দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা দুবাইয়ের কর্মকর্তাদেরকে জানিয়েছেন এরা সন্ত্রাসী, (প্রবাসী আন্দোলনকারীরা) এরা স্বাধীনতাবিরোধী, এদেরকে অ্যারেস্ট করলে ওনাদের আপত্তি নেই। যার কারণে কোনো প্রকার আইনগত সহায়তা দেওয়া হয়নি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রত্যেক দূতাবাসে চিঠি দিয়েছে এদেরকে (আন্দোলকারীদের) চুপ করাতে হবে, শাস্তি দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা প্রধান উপদেষ্টা অন্যান্য উপদেষ্টাসহ পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে চিঠি দিয়েছি। ওনারা যেন রেমিটেন্স যোদ্ধাদের নিয়ে ব্যবস্থা নেন। আমরা দেশ থেকে লিগ্যাল সাপোর্ট দেব।

সেদিন ফাওজিয়া করিম ফিরোজ আরও বলেন, দুবাইয়ের যিনি কনসাল জেনারেল বিএম জামাল হোসেন। তিনি কিন্তু সবচেয়ে দায়ী ব্যক্তি যিনি এই ৫৭ জনের দণ্ডের জন্য দায়ী। কোনো ধরনের লিগ্যাল সাপোর্ট দেননি তিনি। তিনি ওদেরকে (আন্দোলনকারীদেরকে) স্বাধীনতাবিরোধী বলেছেন। এটা খুব ফেভারিট ডায়ালগ ছিল। স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবির, যদি দ্বিমত পোষণ করতো তখন আপনি হয়ে যেতেন আরেক দলের ব্যক্তি। আপনি স্বাধীনতাবিরোধী। যখন মানবাধিকার কমিশনে ছিলাম তখন এ কথা আমি নিজেও শুনেছি।

তিনি বলেন, শুধু ৫৭ জনই নয়। আরও বেশি লোকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অনেকে জানেন না ট্রেস লেস হয়ে গেছে। শুধু আমিরাতে নয়, অন্যান্য দেশেও হয়েছে। আমাদের কাছে কিছু আত্মীয়-স্বজন এসেছেন। যারা ৫৭ জনের মধ্যে পড়ছেন না। আমরা সব ধরনের সহায়তা দেব। আমরা দুবাইতে স্বেচ্ছায় একটি চেষ্টা করছি। সরকারকে তার ব্যবস্থা অবিলম্বে নিতে হবে।

এ ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশন থেকে নিন্দা জানানো হয়।


আরও খবর



রেমিট্যান্স চোরাকারবারিদের পেটে, হুন্ডিতে তছনছ রিজার্ভ!

প্রকাশিত:সোমবার ০২ সেপ্টেম্বর 2০২4 | হালনাগাদ:সোমবার ০২ সেপ্টেম্বর 2০২4 | ৮৩০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

বিগত ১৫ বছরে অবৈধ হুন্ডিতে তছনছ হয়েছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। সূত্র বলছে- প্রবাসীদের রক্তে-ঘামে অর্জিত রেমিট্যান্স গেছে চোরাকারবারিদের পেটে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য থেকে মার্কিন ডলারের বদলে পাচার হয়ে প্রতিদিন দেশে ঢুকেছে শত শত কোটি টাকার অবৈধ সেনা। এই সোনার বড় অংশ পুনরায় পাচার হয়েছে দেশের স্থল ও নৌপথে অন্য দেশে। একইভাবে চোরাচালানের মাধ্যমে প্রতিবছর দেশে আসছে হাজার হাজার কোটি টাকার হীরা ও হীরাসদৃশ বস্তু। সোনা আর হীরার বৈধ আমদানি নামমাত্র হলেও, চোরাচালানের মাধ্যমে বছরে ৯১ হাজার কোটি টাকা হুন্ডিতে পাচার হওয়ার তথ্য দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন-বাজুস।

এ পরিস্থিতিতে অংশীজনরা বলছেন, হুন্ডিতে জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে নতুন সরকারকে। এই লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক, দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআরের অনুসন্ধান ও বিদেশে গোয়েন্দা নজরদারির তাগিদ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। জানা গেছে, অব্যাহত ডলার সংকটের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। নানা উদ্যোগ নেওয়ার পরও  সংকট কাটছে না ডলার সংকট। ফলে ব্যাংকগুলো সময়মতো এলসি খুলতে পারছে না। এতে ব্যাহত হচ্ছে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। ডলার সংকটের সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে জ্বালানি খাতে। জ্বালানির মূল্য বাড়ার কারণে সব ধরনের জিনিসপত্রের দাম অনিয়ন্ত্রিতভাবে বেড়েছে। এতে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ছে হুহু করে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য বলছে, আগস্ট মাসে প্রবাসীরা ২২২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাইয়ে ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ, আগস্টে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ, সেপ্টেম্বরে ১৩৩ কোটি ৪৩ লাখ, অক্টোবরে ১৯৭ কোটি ১৪ লাখ, নভেম্বরে ১৯৩ কোটি, ডিসেম্বরে ১৯৯ কোটি ১২ লাখ, জানুয়ারিতে ২১১ কোটি ৩১ লাখ, ফেব্রুয়ারিতে ২১৬ কোটি ৪৫ লাখ, মার্চে ১৯৯ কোটি ৭০ লাখ, এপ্রিলে ২০৪ কোটি ৪২ লাখ, মে মাসে ২২৫ কোটি ৩৮ লাখ এবং জুন মাসে আসে ২৫৪ কোটি ১৬ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।

 এ প্রসঙ্গে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন-এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু  বলেন, অর্থনীতিতে হুন্ডি বড় ফ্যাক্টর। প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স ব্যাংকিং চ্যানেলের চেয়েও বেশি আসে হুন্ডিতে। সরকার মুদ্রা মান ম্যানুয়ালি করায় হুন্ডিতে উৎসাহিত হন প্রবাসীরা। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে রেমিট্যান্সের প্রকৃত প্রতিফলন নেই। রিজার্ভের অর্থ হুন্ডিতে আসার ফলে সোনা চোরাচালানসহ সব ধরনের চোরাকারবারি বেড়ে যায়। এই সংকট উত্তরণে নতুন সরকারকে মুদ্রামান যথাযথ রাখার উদ্যোগ নিতে হবে। কেন ৯১ হাজার কোটি টাকার সোনা ও হীরা চোরাচালান হচ্ছে তা সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে খতিয়ে দেখতে হবে এবং প্রতিরোধ করতে হবে। সংশ্লিষ্টরা এ কাজে ব্যর্থতার পরিচয় দিলে অর্থনীতিতে দুর্বৃত্তায়নের পুনরাবৃত্তি হবে।

 এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ- সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ডলারের  ক্ষেত্রে ব্যাংকের চেয়ে হুন্ডিতে বাড়তি দর পাওয়ায় প্রবাসীরা উৎসাহী হন। হুন্ডির সঙ্গে আন্তর্জাতিক চক্র জড়িত। এ চক্রের সঙ্গে আছে  দেশি চোরাকারবারিরা। এদের ধরতে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) সক্রিয় হতে হবে। দেশি চক্রকে ধরা বিএফআইইর পক্ষে কঠিন নয়। চোরাচালানে সোনা কীভাবে আসে তা খতিয়ে দেখতে হবে। সোনা চোরাচালান বন্ধে কেন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি, সেটাও বেরিয়ে আসবে দেশি চক্রের সদস্যদের ধরতে পারলে। পাচার হওয়া সোনা কীভাবে দেশে আসছে, সেই পথ বন্ধ করতে হবে। আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা আনতে চোরাচালান বন্ধের বিকল্প নেই।

সর্বশেষ গত ৩ জুন সোনা ও হীরা চোরাচালানে বছরে ৯১ হাজার ২৫০ কোটি টাকা পাচার হওয়ার তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে বাজুস বলেছে, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ৩০টি জেলার সীমান্ত অবস্থিত। এর মধ্যে খুলনা বিভাগের মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, যশোর ও সাতক্ষীরা জেলা সোনা চোরাচালানের নিরাপদ রুটে পরিণত হয়েছে। ভারতে পাচার হওয়া সোনার বড় একটি অংশ এসব জেলার সীমান্ত দিয়ে পাচার হয়ে থাকে। বাজুসের প্রাথমিক ধারণা- প্রবাসী শ্রমিকদের রক্ত-ঘামে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার অপব্যবহার করে প্রতিদিন সারা দেশের জল, স্থল ও আকাশ পথে কমপক্ষে প্রায় ২৫০ কোটি টাকার অবৈধ সোনার অলংকার, সোনার বার, ব্যবহৃত পুরনো জুয়েলারি (যা ভাঙ্গারি হিসেবে বিবেচিত হয়) ও হীরার অলংকার (ডায়মন্ড জুয়েলারি) চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসছে। যা ৩৬৫ দিন বা এক বছর শেষে দাঁড়ায় প্রায় ৯১ হাজার ২৫০ কোটি টাকা বা তার অধিক। এর মধ্যে প্রতিদিন গড়ে ২২০ কোটি টাকার সোনা ও গয়না এবং ৩০ কোটি টাকার হীরা ও হীরার অলংকার বাংলাদেশে আসছে। সে হিসাবে ৩৬৫ দিন বা এক বছরে ৮০ হাজার ৩০০ কোটি টাকার সোনা ও ১০ হাজার ৯৫০ কোটি টাকার হীরা অবৈধভাবে বাংলাদেশে আসছে। এই পুরো টাকাটাই হুন্ডির মাধ্যমে সোনা ও হীরা চোরাকারবারিরা বিদেশে পাচার করে থাকে। যার ফলে সরকার রেমিট্যান্স হারাচ্ছে এবং সোনা ও হীরা চোরাকারবারিরা তাদের অবৈধ অর্থ বিদেশে পাচার করে যাচ্ছে। দেশে চলমান ডলার সংকটে প্রায় ৯১ হাজার ২৫০ কোটি টাকার অর্থ পাচার ও চোরাচালান বন্ধে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।

বাজুস চোরাকারবারিদের ধরতে সুপারিশে বলেছে, সোনা ও হীরা চোরাচালানে জড়িতদের ধরতে আইন-প্রয়োগকারী সংস্থার জোরালো অভিযান পরিচালনা করা প্রয়োজন। সোনা ও হীরা চোরাচালান প্রতিরোধে বাজুসকে সম্পৃক্ত করে পৃথকভাবে সরকারি মনিটরিং সেল গঠন করা জরুরি। বাজুস মনে করে, দেশে অবৈধভাবে আসা সোনা ও হীরার  সিকি ভাগও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নজরে আসছে না। ফলে নিরাপদে দেশে আসছে চোরাচালানের বিপুল পরিমাণ সোনা ও হীরার চালান। আবার একইভাবে পাচার হচ্ছে। বাংলাদেশ সোনা চোরাচালানের বড় রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ঝিনাইদহের মহেশপুর ও চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্ত। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নিয়মিত কড়া নজরদারি প্রয়োজন।

 দেশে চলমান ডলার সংকট ও অর্থ পাচারের সঙ্গে সোনা চোরাচালানের সিন্ডিকেটের সুসম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করেন অনেকে। এমন পরিস্থিতিতে সোনার বাজারের অস্থিরতার নেপথ্যে জড়িত চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে কাস্টমসসহ দেশের সব আইন- প্রয়োগকারী সংস্থার জোরালো অভিযান ও শাস্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সোনার বাজারে শৃঙ্খলা আনতে কঠোর অভিযানের বিকল্প নেই। বিশেষ করে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সোনা চোরাচালানের ক্ষেত্রে আলোচিত জেলাগুলোতে চিরুনি অভিযানের দাবি করছে বাজুস। এ প্রসঙ্গে পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের (পিইবি) চেয়ারম্যান এম. মাশরুর রিয়াজ বলেন, রেমিট্যান্স বৈধ চ্যানেলে বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। প্রবাসী শ্রমিকদের আয়ের বেশির ভাগ অর্থই হুন্ডিতে আসে। হুন্ডি বন্ধে ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলারের দর বাড়াতে হবে। বৈধপথে কীভাবে প্রবাসী আয় তাদের পরিবারের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া যায় সেই উদ্যোগ নিতে হবে। এই পদক্ষেপের ফলে মধ্যপ্রাচ্য থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ সোনা আসে, সেটা অনেকাংশে কমবে।

 বাজুসের মুখপাত্র ও কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেন বলেন, হুন্ডি বন্ধ করতে চাইলে প্রথমেই সোনা চোরাচালান বন্ধ করতে হবে। এ জন্য সোনা চোরাচালানের সঙ্গে জড়িতদের ধরতে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা জরুরি। এ ছাড়া ব্যাগেজ রুলের অপব্যবহার বন্ধ করতে হবে। দেশে বড় আকারের বিদেশি সোনা এবং হীরার অলংকার কোথা থেকে কীভাবে আসে, এই সোনার বৈধ উৎস কী, কোনো বৈধ কাগজপত্র আছে  কি না তা খতিয়ে দেখতে হবে।

 বৈদেশিক মুদ্রা ও চোরাচালান বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তে দেখা যায়, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, শাহ্ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর  ও সিলেট ওসমানী বিমানবন্দর দিয়ে প্রচুর সোনার বার, অলংকার ও হীরা খচিত অলংকার দেশে প্রবেশ করে। এক্ষেত্রে বিমানে কর্মরত কর্মীরাও সম্পৃক্ত থাকার বেশ কয়েকটি ঘটনায় প্রমাণ পাওয়া যায়। সাধারণত বিমানবন্দর দিয়ে ছাড় হওয়ার পর কর্মীরা বাস ও ট্রেনযোগে ঝিনাইদহের মহেশপুর ও চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার করে থাকে। সোনা চোরাকারবারিরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিদেশ থেকে সোনার বার আনছে। উদ্বেগজনক তথ্য হলো- গত কয়েক মাসে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের জেলা চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, যশোর, মেহেরপুর, সাতক্ষীরা সীমান্তবর্তী থেকে প্রায় ২৬ কেজি চোরাচালানের সোনা জব্দ করা হয়। যার বাজারমূল্য প্রায় ২৬ কোটি টাকা।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবির তথ্যানুযায়ী ২০২৩ সালে ১০১ দশমিক ৮৯ কোটি টাকার সোনা জব্দ করা হয়েছে। এ ছাড়াও ২০১৪ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিজিবি সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে ৯২৫ দশমিক ৯১৯ কেজি চোরাচালানের সোনা জব্দ করে। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত বিজিবি বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে ২৭ দশমিক ৭১৩ কেজি চোরাচালানের সোনা জব্দ করা হয়। ২০১৪ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বিজিবির হাতে গ্রেফতার আসামির সংখ্যা ২৯০ জন এবং দায়ের করা মামলার সংখ্যা ২৮৯টি। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য থাকে যে, আসামি ও মামলার পরবর্তী কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। গত ১০ বছরে শুল্ক গোয়েন্দা, কাস্টম হাউস, বিজিবি, পুলিশ ও এয়ারপোর্ট এপিবিএন সারা দেশে অভিযান চালিয়ে ২ হাজার ৫৮৩ কেজি সোনা জব্দ করে। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের তথ্য অনুযায়ী, এই সোনা যদি আনুষ্ঠানিক পথে আমদানি করা হতো তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংকে ২২ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ জমা হতো, যা থেকে সরকারের রাজস্ব আহরণ হতো প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। এপিবিএনের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এপিবিএন বিগত কয়েক বছরে ১৩১ দশমিক ১১০ কেজি সোনার বার, অলংকার জব্দ করেছে যার বর্তমান বাজারদর ১৩০ কোটি ৪৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকা।

 ঢাকা কাস্টমস হাউসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শুধু হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মাধ্যমেই ২০২০ সালে ২ দশমিক ৭৭৫ টন, ২০২১ সালে ২৫ দশমিক ৬৮৯ টন, ২০২২ সালে ৩৫ দশমিক ৭৩৩ টন এবং ২০২৩ সালে ৩১ দশমিক ৪৬৮ টন সোনার বার ব্যাগেজ রুলের আওতায় আমদানি হয়েছে। কাস্টমসের তথ্যমতে, ২০২০ থেকে ২০২২ সালে শিল্পে ব্যবহারের জন্য ৪টি চালানে ২ কেজি ১৬০ গ্রাম ডায়মন্ড আমদানি করা হয়েছে। তবে ডায়মন্ডের অলংকার আমদানি হয়নি। গত ১৯ বছরে যত ডায়মন্ড আমদানি হয়েছে, তার ৮৭ শতাংশই আনা হয়েছে ভারত থেকে। ভারতের গুজরাটের সুরাটে বিশ্বের ৬৫ শতাংশের বেশি হীরা কাটিং ও পলিশিং করা হয়। খুব সহজে বহন করা যায় বলে দেশটি থেকে অবৈধভাবে হীরা আসছে বলে অনেকের ধারণা।

 বিজিবি জোয়ানরা ভারত থেকে বাংলাদেশে পাচারের সময় বিগত কয়েক বছরে কয়েকটি চালান জব্দ করেছে। ২০২১ সালে সাতক্ষীরা সীমান্তে পৌনে ২ কোটি টাকার ১৪৪টি হীরার গয়না জব্দ করেছে বিজিবি। ২০১৮ সালে ৭০ লাখ টাকার হীরার গয়না জব্দ করা হয়। অবৈধ পথে হীরা আমদানির বড় কারণ শুল্ক ফাঁকি। হীরা আমদানিতে শুল্ককর অনেক বেশি। যেমন বন্ড সুবিধা ছাড়া অমসৃণ হীরা আমদানিতে কর ৮৯ শতাংশ। মসৃণ হীরা আমদানিতে কর প্রায় ১৫১ শতাংশ। এই শুল্ককর ফাঁকি দিতেই মূলত অবৈধ পথে বিপুল পরিমাণ হীরা আসছে। গত ১৯ বছরে এই মূল্যবান রত্ন আমদানিতে সরকার মাত্র ১২ কোটি টাকার রাজস্ব পেয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে- দেশের হীরার বাজার প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার। এই হীরার বাজার পুরোটাই চোরাচালান নির্ভর হয়ে আছে। সোনা চোরাচালানের খবর পাওয়া গেলেও, আমরা হীরা চোরাচালানের খবর না পাওয়া রহস্যজনক। হীরা চোরাচালানের সঙ্গে কারা জড়িত, তাও দ্রুত চিহিৃত করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর জোরালো ভূমিকা প্রয়োজন বলে মনে করছে বাজুস।

 মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ২ ধারায় সোনা চোরাচালানকে মানি লন্ডারিংয়ের সম্পৃক্ত অপরাধ হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে। আইনে সেখানে ১২ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড এবং ২০ লাখ টাকা জরিমানা করার বিধান রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় যে, অপরাধীর মূল হোতা আড়ালে থেকে যায় এবং ধরা পড়ে চুনোপুঁটিরা। কিন্তু সেক্ষেত্রেও আইনের বেড়াজালে জামিনে মুক্তি পেয়ে যাচ্ছে চুনোপুঁটির দল। ফলে চোরাচালান চলছে তাদের নিজস্ব গতিতেই। বিগত ২০২২ সালের ৮ নভেম্বর বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাই কোর্ট বেঞ্চ মন্তব্য করে বলেছেন- জনগণের টাকা আত্মসাৎ, লুটপাট ও পাচারকারীদের স্যুট ডাউন করা উচিত। অর্থ পাচারকারীরা জাতির শত্রু। অর্থ লুটপাট, পাচারের মামলার সামারি ট্রায়াল (দ্রুত বিচার) হওয়া উচিত।


আরও খবর

বাড়ল এলপি গ্যাসের দাম

সোমবার ০২ সেপ্টেম্বর 2০২4

এলপিজির দাম আরও বাড়ল

বৃহস্পতিবার ০২ নভেম্বর 2০২3