পাবনার চাটমোহর উপজেলার ধুলাউড়ি এলাকায় যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূ নাছিমা খাতুনকে হত্যা মামলায় তাঁর স্বামী মো. সিফাত আলীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়াও আসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে মামলার তিন আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। পাবনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মিজানুর রহমান আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. সিফাত আলী
চাটমোহর উপজেলার ধুলাউড়ি স্কুলপাড়ার বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত
ছিলেন। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। এ ছাড়া খালাস পাওয়া ব্যক্তিদের মুক্তি দেওয়া
হয়।
নিহত নাছিমা খাতুন নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম
উপজেলার ভিটাকাজিপুর গ্রামের মো. আরদেশ প্রামাণিকের মেয়ে। তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে
সন্তান রয়েছে।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, ২০১৩ সালের
২৬ সেপ্টেম্বর সকালে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী নাছিমাকে পরিবারের লোকজন নিয়ে ব্যাপক মারধর
ও গলাটিপে হত্যা করে পালিয়ে যান মো. সিফাত আলী। পরে নাছিমার বাবা আরদেশ বাদী হয়ে
চাটমোহর থানায় পাঁচ জনের নামে একটি হত্যা মামলা করেন। পরের বছরের ১৫ জানুয়ারি পাঁচ
জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। মামলা চলাকালে এক আসামির মৃত্যু হয়।
দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া ও ৯ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ
শেষে আজ রোববার রায় ঘোষণা করা হলো। রায়ে বাদীপক্ষ সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও অসন্তুষ্ট
হয়েছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী ও পরিবার।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইতি হোসেন
মুক্তি বলেন, ‘এই রায়ে আমরা ক্ষুব্ধ। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।
সেখানে আসামি সম্পূর্ণরূপে নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে খালাস পাবেন বলে আশা করছি।’
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ট্রাইব্যুনালের
বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট খন্দকার আব্দুর রকিব বলেন, ‘এটি একটি যুগান্তকারী
রায়। এর মাধ্যমে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। আশা করি, খুব দ্রুত ফাঁসি
কার্যকর হবে।’