করোনা মহামারির মধ্যে পানির দাম ফের ৪০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে ঢাকা ওয়াসা। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর তা কার্যকর হবে। ঢাকা ওয়াসার বিশেষ বোর্ড সভায় গত সোমবার এই দাম বাড়ানোর প্রস্তাব তোলা হয়।
বর্তমানে আবাসিক গ্রাহক প্রতি ১ হাজার লিটার পানির দাম ১৫ টাকা ১৮ পয়সা দেন ওয়াসাকে। আর বাণিজ্যিক সংযোগের ক্ষেত্রে প্রতি ১ হাজার লিটার পানির দাম দেন ৪২ টাকা। পানির দাম ৪০ শতাংশ বাড়ালে সেটি আবাসিকে পড়বে ২১ টাকা ২৫ পয়সা। আর বাণিজ্যিকে পড়বে ৫৮ টাকা ৮ পয়সা। প্রস্তবাটি মন্ত্রণালয়ের সম্মতি পেলে আগামী ১ জুলাই থেকে এই নতুন দাম কার্যকর করতে চায় তারা। পাশাপাশি পানির বিল বাড়লে সু্যয়ারেজের বিলও সমহারে বাড়বে, যা গ্রাহককেই পরিশোধ করতে হবে।
“ওয়াসা বোর্ডে থাকা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং ওয়াসার
ব্যবস্থাপনা পরিচালক পানির দাম ৪০ শতাংশ বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়েছেন। তবে বোর্ডের অধিকাংশ
সদস্য এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন।”
বোর্ডের ওই
সদস্য্য বলেন, “ব্যবস্থাপনা পরিচালক দাম বাড়াতে চান, আমরা বলেছি দাম বাড়ালে মানুষের
জীবনমানের ওপর এর প্রভাব পড়বে। ফলে এটা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের
সঙ্গে আলোচনা করতে হবে বিষয়টি নিয়ে।”
এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান বলেন, ওয়াসা বোর্ডের সভার সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করবেন না। তবে তিনি বলেছেন, ‘কস্টিং এবং সিস্টেম লস কমানো এবং সরকারের ভর্তুকি কমানো যায় কীভাবে’, সেসব বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
গত বছরের ২৫
মে ঢাকা ওয়াসা পানির দাম ৫ শতাংশ বাড়ায়। যাতে আবাসিকে ঢাকা ওয়াসার সরবরাহ করা প্রতি
ইউনিট (এক হাজার লিটার) পানির দাম ১৪ টাকা ৪৬ পয়সা পয়সা থেকে বেড়ে ১৫ টাকা ১৮ পয়সা
হয়। আর বাণিজ্যিক সংযোগে প্রতি ইউনিট পানির দাম ৪০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪২ টাকা করা হয়।
২০২০ সালের এপ্রিলেও পানির দাম বাড়িয়েছিল ঢাকা ওয়াসা। তখন আবাসিকে প্রতি ইউনিটের দাম বেড়েছিল ২ টাকা ৯০ পয়সা। এর আগে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে, ২০১৮ সালের জুলাইতে, ২০১৭ সালের অগাস্টে পানির দাম বাড়ায় ওয়াসা, তাদের ভাষায়, এটা ‘মূল্য সমন্বয়’।
কনস্যুমারস
অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, “এই মুহূর্তে পানির দাম বাড়ানো হবে
গণবিরোধী কাজের মধ্যে একটা। দাম বৃদ্ধি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য না।
“সাধারণ মানুষের অবস্থা এখন খুব খারাপ। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে, আয় কমেছে। এই সময় যদি পানির দাম বাড়ানো হয়। উনাদের (ওয়াসা) বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির যথেষ্ট অভিযোগ রয়েছে। সেই দিকে, কস্ট কমানোর দিকে মনোযোগ না দিয়ে মূল্যবৃদ্ধি বারবার করা কিছুতেই গ্রহণযোগ্য না।”