যশোরে বসেছে
৫১তম শীতকালীন স্কুল মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্রীড়া প্রতিযোগিতার
জাতীয় আসর। বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২ টায় যশোর শামস-উল-হুদা স্টেডিয়ামে ৬
দিনব্যাপী এই প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, দেশে এক শ্রেণির অপশক্তি পাঠ্যবইয়ে যে তথ্য নেই,
তা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। মিথ্যাচার প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।
যদি ভুল থাকে সেটি স্বীকার করে সংশোধন করা হবে। ইতোমধ্যে যেখানে ভুল দেখা গেছে, সংশোধন
করে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন,
নতুন কারিকুলামের পাঠ্যবইয়ে কোথাও কোথাও ভুল থাকতে পারে। সংশোধনের জন্য দুটি কমিটি
করা হয়েছে। যখনই ভুল চিহ্নত হবে সাথে সাথে সংশোধন করা হবে। তবে যেখানে ভুল নেই; সেই
বইয়ে ভুল আছে বলে মিথ্যাচার করছে একটি অপশক্তি। তারা দেশকে পিছিয়ে নিয়ে যেতে চায়। যারা
মিথ্যাচার করছে সেই অপশক্তি প্রচেষ্টাকারীদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করা হবে। এ সময়
মিথ্যা অপপ্রচারে কান না দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী
আরও বলেন, জাতির পিতার স্বপ্ন ছিলো স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার। তারই কন্যা শেখ হাসিনার
নেতৃত্বে দেশ দৃপ্ত পদক্ষেপে এগিয়ে চলছে সেই পথে। আমাদের অনেক লক্ষ্য রয়েছে। ২০৩০ সালে
উন্নত সম্মৃদ্ধ, টেকসই বাংলাদেশ গড়ার। দেশ গড়বার জন্য যেমন সম্ভাবনা রয়েছে, তেমনি চ্যালেঞ্জও
রয়েছে। সম্ভাবনাকে সম্ভব করতে সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিজেদের তৈরি করতে হবে। তার
অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের যুগোপযোগী শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। তারা যেন সুস্থ ধারায়
সুন্দর মন নিয়ে কর্মের লক্ষে এগিয়ে যেতে পারে, তারই অংশ হিসেবে বিগত শিক্ষাব্যবস্থাকে
রূপান্তর করা হয়েছে। নতুন কারিকুলামে শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরা জ্ঞানের দক্ষতা
বৃদ্ধি, চিন্তা করবার দক্ষতা, সমসাময়িক সমস্যা সমাধানের দক্ষতা অর্জন করতে পারবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ
অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য
কাজী নাবিল আহমেদ, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের সিনিয়র সচিব কামাল হোসেন, মাধ্যমিক ও
উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. ওমর
ফারুক, মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হাবিবুর রহমান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক
শিক্ষা বোর্ড ঢাকার চেয়ারম্যান প্রফেসর তপন কুমার সরকার, যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল
ইসলাম খান, পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার।
মাধ্যমিক ও
উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য
রাখেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড যশোরের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড.আহসান হাবিব।
বক্তব্য শেষে অংশগ্রহণকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মশাল প্রজ্জ্বলন, সুশৃঙ্খল
প্যারেড, স্কুল শাখার ছাত্রীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ মাঠ ডিসপ্লে এবং ক্রীড়া ডিসপ্লে প্রদর্শন
করে।
মাধ্যমিক ও
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড যশোরের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আহসান হাবীব জানান, পদ্ম,
গোলাপ, বকুল ও চাঁপা এই চারটি অঞ্চলের শ্রেষ্ঠ প্রতিযোগীদের নিয়ে হবে প্রতিযোগিতা।
ময়মনসিংহ ও ঢাকা অঞ্চলকে নিয়ে গঠিত পদ্ম। রাজশাহী ও দিনাজপুর অঞ্চলকে নিয়ে গঠিত চাঁপা।
সিলেট, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা এই অঞ্চলের নামকরণ করা হয়েছে বকুল। বরিশাল ও খুলনা অঞ্চলকে
নিয়ে গঠিত গোলাপ।
শামস-উল হুদা
স্টেডিয়ামে অ্যাথলেটিকসের পাশাপাশি হকি ও সাইক্লিং প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। নাদিরা
ইসলাম স্মৃতি ইনডোর ভলিবল গ্রাউন্ডে ভলিবল, বাস্কেটবল গ্রাউন্ডে বাস্কেটবল, জিমনেসিয়ামে
ব্যাডমিন্টন ও টেবিল টেনিস অনুষ্ঠিত হবে। ছাত্রী ক্রিকেট শামস্-উল হুদা ফুটবল একাডেমি
মাঠে ও ছাত্র ক্রিকেট প্রতিযোগিতা উপশহর কেন্দ্রীয় ক্রীড়া উদ্যানে অনুষ্ঠিত হবে।
এই প্রতিযোগিতার
৫১তম আসর চলবে মঙ্গলবার পর্যন্ত। ৬ দিনব্যাপী শুরু হওয়া ৮টি ইভেন্টে ৮২৪ জন ক্রীড়াবিদ
অংশ গ্রহণ করবেন। এর মধ্যে ছাত্র ৪৪০ জন ও ছাত্রী ৩৮৪ জন। অ্যাথলেটিক্স, ছাত্র ও ছাত্রীদের
ভলিবল, বাস্কেটবল, হকি, ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস ও সাইক্লিং ইভেন্ট রয়েছে।
অ্যাথলেটিক্সে সবচেয়ে বেশি ৩৪৪ জন অংশ গ্রহণ করবে। বাংলাদেশ জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা
ও কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া সমিতির আয়োজনে ও যশোর শিক্ষা বোর্ডের ব্যবস্থাপনায় চারদিন
মাঠের লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে যশোরের ৬টি মাঠ।
জাতীয় পর্যায়ে
প্রথম হওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ, দ্বিতীয় হওয়া প্রতিষ্ঠানকে ৭০ হাজার ও তৃতীয়
প্রতিষ্ঠানকে ৫০ হাজার টাকা করে প্রদান করা হবে। এছাড়া বিজয়ী প্রতিযোগিদের ট্রফি, মেডেল,
প্রাইজবন্ড ও সনদপত্র প্রদান করা হবে। এই প্রতিযোগিতাকে ঘিরে যশোর শহরে উৎসব বিরাজ
করছে।