গাজীপুরের শ্রীপুর আনোয়ারা মান্নান টেক্সটাইল নামক কারখানায় এক শিশুশ্রমিকের বিরুদ্ধে অপর এক শিশুশ্রমিককে পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়। এর আগে ভোর পৌনে ৬টার দিকে উপজেলার মাধখলা এলাকায় অবস্থিত ওই কারখানার ভেতরে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশুশ্রমিকের বয়স ১৩ বছর। সে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার পূর্ব শিয়ালদী গ্রামের পলাশ দেওয়ানের ছেলে। সে বাবার সঙ্গে গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া গ্রামে স্থানীয় আবদুস ছামাদের বাড়িতে ভাড়া থেকে কারখানায় শ্রমিকের কাজ করত। অভিযুক্ত শিশুশ্রমিকের বাড়ি দিনাজপুর জেলায়। সে একই কারখানায় শ্রমিকের কাজ করত।
নিহত শিশুর মা বলেন, ‘গতকাল শুক্রবার রাতে খাবার খেয়ে বাসা থেকে বের হয় আমার ছেলে। আজ সকাল ৬টায় তার ছুটি হওয়ার কথা। কিন্তু কারখানার অপর শ্রমিক এসে জানায় আমার ছেলের অবস্থা খুবই খারাপ। খবর পেয়ে আমার স্বামী দ্রুত কারখানায় ছুটে যায়। পরে আমার ছেলেকে কারখানায় না পেয়ে প্রথমে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যায়। সেখানে আমার ছেলের মরদেহ পাওয়া যায়।’
নিহত শিশুর মা আরও বলেন, ‘চার মাস ধরে ওই কারখানায় ৪ হাজার ৫০০ টাকা বেতনে আমার ছেলে চাকরি করত।’
কারখানার নিরাপত্তাকর্মী মো. মহসিন আলী বলেন, শিশুটির পায়ুপথে বাতাস দেওয়ার পর তার পেট ফুলতে শুরু করে। এরপর অতিরিক্ত ব্যথা শুরু হলে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত অপর শিশুশ্রমিককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
কারখানার সিনিয়র অ্যাডমিন ম্যানেজার মো. জাকারিয়া বলেন, ‘শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।’
মৃত্যুর বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, শিশুর অবস্থা অবনতি হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে গাজীপুর জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার কালিয়াকৈর সার্কেল আজমীর হোসেন বলেন, ঘটনাটি জানার পর কারখানায় গিয়ে অভিযুক্ত শিশুশ্রমিককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।