আগামী জানুয়ারি
থেকে পদ্মা সেতুতে চলবে না ২৭ টনের বেশি ওজনের যানবাহন। সম্প্রতি এই সিদ্ধান্তের কথা
জানিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ।
নির্ধারিত সীমার
বেশি ওজনের যানবাহন নিয়ন্ত্রণে সেতুর জাজিরা ও মাওয়া প্রান্তে শেষ হয়েছে ইলেকট্রিক
সেন্সর নিয়ন্ত্রিত ওজন পরিমাপের যন্ত্র ওয়েস্কেল। তিন লেনের ওয়েস্কেলের নির্মাণ শেষে
চলছে পরীক্ষামূলক পরিমাপ। যানবাহনের গতিবিধি পর্যবেক্ষণে বসানো হয়েছে মোশন ক্যামেরা।
গত সপ্তাহে শেষ হয়েছে সিগন্যাল বাতি, ডিজিটাল ডিসপ্লে, ডিভাইডার সাইন বসানোর কাজও।
ডিজিটাল পদ্ধতির এই ওয়েস্কেলে দাঁড়াতে হবে না যানবাহনকে, চলতি পথেই হবে ওজন পরিমাপ।
আজ শুক্রবার পদ্মা
সেতুর জাজিরা প্রান্তে গিয়ে দেখা যায়, সেতুর মূল টোল প্লাজার ১০০ মিটার সামনেই প্রস্তুত
করা হয়েছে ওয়েস্কেল। বিদেশি প্রকৌশলীরা ওয়েস্কেলের কার্যক্ষমতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন।
শ্রমিকরা ওয়েস্কেলের লেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ ও নির্ধারিত লেন তৈরির মার্কিং
করছেন। এ সময় একটি বালু ভর্তি ট্রাককে বারবার ওয়েস্কেল অতিক্রম করতে দেখা যায়, যা পুনরায়
ফিরে আসছিল। ফলে যানবাহনের প্রকৃত ওজন প্রদর্শিত হচ্ছিল ডিজিটাল ডিসপ্লেতে। ওজন বা
গতি বেশি হলে বেজে উঠছিল সাইরেন।
সেতু কর্তৃপক্ষ
সূত্রে জানা গেছে, ৬৯২ কোটি টাকা ব্যয়ে ওয়েস্কেলটি বসিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোরিয়ান
একপ্রেসওয়ে। তবে উদ্বোধনের পর থেকে পদ্মা সেতুতে এতদিন স্বয়ংক্রিয় ওজন পরিমাপের ব্যবস্থা
না থাকায় সব ধরনের যানবাহন পারাপার করা হয়েছে।
এরপর থেকে পদ্মা
সেতু পার হতে উভয় প্রান্তে এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে আসা প্রতিটি পণ্যবাহী যানবাহনকে ওজন পরিমাপ
করতে টোল প্লাজার আগে নির্ধারিত তিনটি আলাদা লেনে আসতে হবে ওয়েস্কেলে। নির্ধারিত ইলেকট্রিক
সেন্সর ও সড়কে থাকা ওজন পরিমাপের বিশেষ ডিভাইসের ওপর দিয়ে পার হতে হবে ওয়েস্কেলের বিশেষ
লেন।
২৭ টন পর্যন্ত
ওজন বহনকারী যানবাহন টোল পরিশোধ করে গ্রিন জোন দিয়ে সরাসরি পার হবে পদ্মা সেতু। আর
বেশি ওজন বহনকারী যানবাহন রেড জোন দিয়ে চলে যাবে টোল প্লাজার পাশে নির্মিত স্টকইয়ার্ডে।
সেখানে সর্বোচ্চ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ওজন কমিয়ে পুনরায় ওয়েস্কেলে ওজন পরিমাপ শেষে গ্রিন
জোন দিয়ে পদ্মা সেতু পার হবে ওই যানবাহন।
স্টকইয়ার্ডে নামিয়ে
রাখা অতিরিক্ত পণ্য সর্বোচ্চ সাত দিনের মধ্যে সংগ্রহ করতে হবে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ
সেতু কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী মোহাম্মদ ফেরদৌস বলেন, ‘জানুয়ারির শুরু থেকেই ওয়েস্কেলে ওজন
পরিমাপ শুরুর চিন্তা রয়েছে আমাদের। বেশি ওজনের যানবাহনে পদ্মা সেতু পারাপারের কোনো
সুযোগ থাকবে না। জাজিরা ও মাওয়া প্রান্তে সফল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে সংযোগ
সড়কের নির্মাণ কাজও শেষের পথে রয়েছে।’