শরীয়তপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৯ সেন্টিমিটার
বৃদ্ধি পেয়ে সুরেশ্বর পয়েন্টে পদ্মার পানি বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত
হচ্ছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ। এতে পদ্মা তীরবর্তী জাজিরা ৭টি, ভেদরগঞ্জে-৩টি
সহ নড়িয়া উপজেলার ৬টি ও একটি পৌরসভা প্লাবিত হয়েছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড ও উপজেলা প্রশাসন
সূত্রে জানা যায়, গত এক সপ্তাহ আগেও পদ্মা নদীর পানি ক্রমশই কমছে ছিল। কিন্তু হঠাৎ
করে এক সপ্তাহ যাবত পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় উজানের ঢোলের পানি নেমে আসায়
বৃদ্ধি পাচ্ছে পদ্মা নদীর পানি। গতকাল সন্ধ্যায় আরও ১৯ সেন্টিমিটার বেড়ে শরীয়তপুরে
পদ্মা নদীর পানি সুরেশ্বর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে এসব এলাকায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে
প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। তলিয়ে গেছে নড়িয়া-জাজিরা আঞ্চলিক মহাসড়কসহ বিভিন্ন এলাকার কাচা-পাকা
অনেক রাস্তা। নিচু এলাকার অনেক বাড়িঘরেও ঢুকেছে বন্যার পানি। সাপ-বিচ্ছু ও পোকা-মাকড়ের
ভয়ে আতংকে দিন কাটছে তাদের। এরই মধ্যে অনেকের বসতঘর, রান্নাঘর, গভীর নলকূপ ও শৌচাগার
তলিয়ে অনেক সমস্যায় দিন কাটাচ্ছেন তারা। এছাড়া তলিয়ে গেছে প্রায় অর্ধশত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার কথা থাকলেও তলিয়ে যাওয়া এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
খোলা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে।
এছাড়া বেশকিছু স্থানে অব্যাহত রয়েছে নদী
ভাঙন। জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলে ভাঙন রোধের কাজ করে যাচ্ছে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এদিকে উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, পর্যাপ্ত খাদ্য সহায়তা মজুদ ও বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রসহ
সব ধরনের প্রস্তুত রয়েছে তাদের।
মোক্তারের চর ইউনিয়নের দেলোয়ার চোকদার
বলেন, এই তো কিছুক্ষণ আগে ফজরের নামাজ পড়ে হাঁটতে বের হয়েছি। তখনও আমার বাড়িতে ঢোকার
রাস্তাটা শুকনো ছিল। কিছুক্ষণ হেঁটে এসে বাড়িতে ঢোকার সময় দেখি রাস্তাটা তলিয়ে গেছে।
এখন পানি পাড়িয়ে বাড়িতে যেতে হচ্ছে। এরকম বাড়তে থাকলে দু-একদিনের মধ্যে আশপাশের
যতবারই ঘর আছে সব তলিয়ে যাবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম
আজাদ জানান, নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলার কিছু কিছু বিদ্যালয়ের মাঠে এবং মেঝেতে, শ্রেণি
কক্ষে পানি উঠেছে। অনেক জায়গায় বিদ্যালয়ের যাতায়াতের রাস্তা চলে গেছে। বন্যার পানি
নেমে না গেলে এসব বিদ্যালয় আপাতত ক্লাস করা সম্ভব হবে না।
শরীয়তপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী
প্রকৌশলী এস এম আহসান হাবীব জানান, এক সপ্তাহ আগেও পানি কমতে ছিল। উজানের ঢলের পানি
নেমে এসে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত
হচ্ছে। এর ফলে পদ্মা তীরবর্তী যেসকল নিচু এলাকা রয়েছে সেসব এলাকা সহ আশপাশের অনেক
এলাকা তলিয়ে গেছে।