প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ নিয়ে বিদেশে পালিয়ে থাকা এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদার ওরফে পি কে হালদারের বিপুল সম্পত্তির খোঁজ মিলেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে।
শুক্রবার সকালে রাজ্যটির রাজধানী কলকাতাসহ অন্তত নয়টি স্থানে একযোগে অভিযান চালায় ভারতের অর্থ সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনী এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট (ইডি)। প্রথমে অভিযান চালানো হয় উত্তর চব্বিশ পরগণার অশোকনগরে তিনজন ব্যবসায়ীর বাড়িতে। এদের মধ্যে একজনকে আটকও করা হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ এইটিন এক প্রতিবেদনে বলেছে, অশোকনগরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের ভারতী ক্লাব এলাকার বাসিন্দা সুকুমার মৃধা নামে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে সকালে প্রথমে অভিযান চালায় ইডি৷ এলাকায় মাছ ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত সুকুমার পিকে হালদারের ঘনিষ্ট সহযোগী। তবে তিনি নিজেকে পিকের ক্লায়েন্ট হিসেবে পরিচয় দিতেন।
ইডির সূত্র বলছে, অশোকনগরের ওই এলাকায় পিকে হালদার ও সুকুমার দীর্ঘদিনের প্রতিবেশী। বাংলাদেশ থেকে পিকে হালদারের লুট করা টাকা দিয়ে বিপুল সম্পত্তি ক্রয়ে এই দুজনের দীর্ঘদিনের যোগসাজশ রয়েছে।
অশোকনগরের ভারতী ক্লাব এলাকার পাশেই নবজীবন পল্লীতে প্রশান্ত কুমার হালদারের আত্মীয় প্রণব কুমার হালদার নামের এক ব্যক্তির বিলাসবহুল বাগানবাড়ি রয়েছে। এটির পাশেই সুকুমার মৃধার আছে আরেকটি বিলাসবহুল বাগানবাড়ি।
ইডির তদন্তে উঠে এসেছে, অশোকনগরের এই এলাকাতেই একাধিক সম্পত্তি ক্রয় করেছে পিকে হালদার-সুকুমার মৃধা জুটি। শুক্রবার এখানকার তিনবাড়িতে অভিযান চালানোর সময় সুকুমার মৃধার জামাতা সঞ্জীব হাওলাদারকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
অশোকনগরের যে বাগানবাড়ি থেকে সঞ্জীবকে আটক করা হয়েছে সেটি পিকে হালদারের ভাই প্রীতিশ সুকুমার হালদারের নামে কেনা। তবে তিন বছর আগে সুকুমার মৃধার কাছে প্রীতিশ বাড়িটি হস্তান্তর করার পর সেখানে সঞ্জীব বাস করতেন। সঞ্জীবও বাংলাদেশি নাগরিক বলে জানা গেছে।
নিউজ এইটিন বলছে, বেশ কয়েকবছর আগে কয়েক কাঠা জায়গার ওপরে এই বিলাসবহুল বাগানবাড়ি তৈরি করা হয়। এদিকে ওই বাড়িটির পাশেই স্বপন মিত্র নামে আরও এক ব্যবসায়ীর বাড়িতেও অভিযান চালিয়েছে ইডি। তাকে আটক করা হয়েছে।
এছাড়াও অশোকনগরের বিল্ডিং মোড় এলাকায় প্রণব হালদার নামে আরও এক ব্যবসায়ীর বাড়িতেও হানা পড়েছে ইডির। এরা প্রত্যেকেই পিকে হালদারের অর্থ পাচারের সহযোগী বলে তদন্তে উঠে এসেছে।