জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণ দেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল জানিয়ে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন-র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রজ্ঞা, দিকনির্দেশনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একযোগে কাজ শুরু করে। র্যাব হলি আর্টিজান হামলার মূল পরিকল্পনাকারীর বিরুদ্ধে সফল অভিযান পরিচালনা করে। পরে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত নীতি ও কৌশল বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ আজ জঙ্গিঝুঁকি মুক্ত। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির আলোকে বাংলাদেশ বিশ্বে আজ জঙ্গি দমনে রোল মডেল।’
সোমবার (২৮ মার্চ) সকালে র্যাবের ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশ প্রধান ড. বেনজীর আহমেদ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।
র্যাব ডিজি তার বক্তব্যের শুরুতে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। একই সঙ্গে তিনি স্মরণ করেন বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছাসহ জাতির পিতার পরিবারের সব শহীদ সদস্যকে, যারা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকের বুলেটের আঘাতে নির্মমভাবে শহীদ হন।
সেইসঙ্গে তিনি স্মরণ করেন মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে নিহত ৩০ লাখ শহীদ এবং ২ লাখ সম্ভ্রমহারা মা-বোনকে এবং র্যাব সদস্যদের, যারা দেশের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সু-নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। আমাদের মাথাপিছু আয় আড়াই হাজার মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নতশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ আজ শতভাগ বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত।’
প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ডিজিটাল সেবা এখন মানুষের দৌড়গড়ায় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণসহ বিভিন্ন মেগাপ্রজেক্ট বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক দেশব্যাপী করোনা মহামারি মোকাবিলা সম্ভব হয়েছে। তার দূরদর্শীতায় আমরা ভ্যাকসিন পেয়েছি। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বিশ্ব দরবারে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এতে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে একটি “মানবতাবাদী দেশ” হিসেবে পরিচিত করেছেন।’
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে র্যাব চরমপন্থী, জঙ্গিবাদ, জলদস্যু ও সন্ত্রাস দমন, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার এবং চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের আসামি গ্রেফতারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ঈর্ষণীয় ভূমিকা রাখছে জানিয়ে র্যাব্প্রধান বলেন, ‘র্যাব জল, স্থল ও আকাশে অভিযান পরিচালনার সক্ষমতা সম্পন্ন একটি ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। একটা সময় ছিল যখন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে রক্তাক্ত করেছিল চরমপন্থীরা। র্যাব সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে চরমপন্থীদের দৌরাত্ম্য নিয়ন্ত্রণ করেছে। দেশে একটি গোষ্ঠীর ছত্রছায়ায় জঙ্গিবাদের বীজ বপণ করা হয়েছিল। তারা এ দেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল। ২১ আগস্ট ওই একই গোষ্ঠীর মদদে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। র্যাব হামলা বাস্তবায়নকারীদের গ্রেনেডসহ গ্রেফতার করেছে।’
র্যাব ডিজি বলেন, ‘আমরা সুন্দরবন জলদস্যু মুক্ত করেছি। প্রধানমন্ত্রীর “জিরো টলারেন্স” নীতির আলোকে দেশকে মাদকমুক্ত করে সে সব মাদকাসক্তদের আলোর মুখ দেখাতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এই অঞ্চলে প্রতিটি মানুষ আজ শান্তিতে বাস করছে, সুন্দরবন অঞ্চলে পর্যটন শিল্প বিকশিত হচ্ছে। আত্মসমর্পণ করা ৩২৮ জন জলদস্যু পুনর্বাসিত হয়েছে।’