২০১৯ সালের জরিপ বলছে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর বিভিন্ন ভবনের কাঁচের সঙ্গে ধাক্কা লেগে মারা যাওয়া পাখির সংখ্যা প্রায় একশ কোটি হতে পারে। প্রতিবছর শীত শুরুর আগে পাখিরা মধ্য ও দক্ষিণ অ্যামেরিকার দিকে যায়৷ পরে আবার ফিরে আসে৷ রাতে ওড়ার সময় পাখিরা আলোকিত কাঁচের ভবনকে তারার আলো মনে করে সেদিকে ছুটে এভাবে পাখি মারা যায়।
পাখির এমন মৃত্যু
নিয়ে গত প্রায় ৫০ বছর ধরে কাজ করছেন ডেনিয়েল ক্লেম। বর্তমানে তিনি পেনসিলভেনিয়ার একটি
কলেজের অধ্যাপক। তিনি মনে করেন পাখিদের আবাস ধ্বংসের পরই পাখিদের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি
হচ্ছে কাঁচের ভবন। এছাড়া উঁচু ভবনের চেয়ে নীচু ও মাঝারি আকারের কাঁচের ভবন পাখিদের
জন্য বেশি হুমকি বলে মনে করেন তিনি।
গত সেপ্টেম্বরের
এক সকালে নিউইয়র্কের ওয়ান ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের আশপাশ থেকে এক ঘণ্টায় ২২৬টি মৃত
পাখি খুঁজে পেয়েছিলেন মেলিসা ব্রেয়ার। সেই খবর ও ছবি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত
হয়েছিল।
মেলিসা ব্রেয়ার
‘এনওয়াইসি
আডবন' নামে একটি সংস্থার স্বেচ্ছাসেবক। এই সংস্থার এক গবেষণা বলছে নিউইয়র্কে প্রতিবছর
ভবনের কাঁচের সঙ্গে সংঘর্ষে ৯০ হাজার থেকে দুই লাখ ৩০ হাজার পাখি মারা যায়।
পাখির মৃত্যু ঠেকাতে এনওয়াইসি আডবন ভবন মালিকদের কাঁচের উপর এক বিশেষ ধরনের ফয়েল জড়ানোর অনুরোধ করছে।এতে প্রতিফলন কিছুটা কমবে বলে মনে করছে তারা। এছাড়া এই ধরনের ফয়েল ঘর গরম ও ঠান্ডা রাখার খরচও কমাবে। গত জানুয়ারিতে নিউইয়র্ক শহর কর্তৃপক্ষ পরিযায়ী পাখি চলাচলের মৌসুমে সরকারি ভবনগুলোতে রাতের বেলায় লাইট বন্ধ রাখার আইন করেছে।
এছাড়া গতবছর
থেকে নতুন ভবনের নকশা করার সময় স্থপতিদের পাখিবান্ধব নকশা ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।
যেমন কাচে আলট্রাভায়োলেট প্রলেপ দিতে বলা হয়েছে যেটা মানুষ দেখতে পাবে না, তবে পাখিরা
দেখতে পাবে।
যুক্তরাষ্ট্র
ও ক্যানাডায় কয়েকটি সংগঠন পাখির মৃত্যু কমাতে আইন প্রনয়ণে স্থানীয় সরকারের সঙ্গে কাজ
করছে।