একজন হলেও পুরুষ
অভিভাবক থাকতে হবে। অন্যথায় বিমান চড়তে পারবেন না মহিলারা। এমনই এক নয়া নিষেধাজ্ঞা
সম্প্রতি আরোপ করল আফগানিস্তানের তালিবান সরকার । ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স রোববার
(২৭ মার্চ) এ তথ্য সামনে এনেছে।
এর আগে গত (২৩
মার্চ) বুধবার তালেবান মেয়েদের উচ্চমাধ্যমিক স্কুল বন্ধ করে দেয়। অথচ, এবার ক্ষমতা
দখলের পর তারা মেয়েদের স্কুলে যেতে দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
অনেক আফগান তালেবানের
সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করায় হতাশ হয়েছেন। বিদেশি সরকার এবং নানা মানবাধিকার সংগঠন
এজন্য তালেবানের নিন্দা জানিয়েছে। মেয়েদের স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার জেরে যুক্তরাষ্ট্র
গত শুক্রবার অর্থনৈতিক নানা বিষয় নিয়ে তালেবান কর্মকর্তাদের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত বৈঠক
বাতিল করে।
রয়টার্স জানায়,
তারা যে সূত্র থেকে নারীদের উড়োজাহাজে ভ্রমণের বিষয়ে তথ্য পেয়েছেন তারা নিরাপত্তার
খাতিরে নিজেদের নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি।
তারা বলেছেন,
তালেবানের পূণ্যের প্রচার এবং পাপের প্রতিরোধ মন্ত্রণালয় থেকে শনিবার দেশটির সব এয়ার
লাইনসকে চিঠি দিয়ে নতুন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে অবহিত করে।
তবে যেসব নারী এরই মধ্যে পুরুষ সঙ্গী ছাড়া বিমানের টিকিট বুক করে ফেলেছেন, তারা কেবল রোববার ও সোমবার ভ্রমণ করার অনুমতি পাবেন।
এর আগে তালেবান প্রশাসনের একজন মুখপাত্র বলেছিলেন, বিদেশে পড়তে যাওয়া নারীদের উচিত একজন পুরুষ স্বজনকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তান শাসন করে তালেবান। তারপর সেনা অভিযান চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তাদের ক্ষমতা থেকে উৎখাত করে।
গত বছর পুনরায়
আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান। নতুন করে ক্ষমতা দখলের পর তারা বলেছিল, যুগের
সঙ্গে তাল মেলাতে আগের বারের তুলনায় তারা তাদের শাসন ব্যবস্থায় এবার কিছু পরিবর্তন
আনবে।
বলেছিল, ইসলামি
আইন এবং আফগান সংস্কৃতি অনুযায়ী তারা এবার নারীদের বেশ কিছু অধিকার দেবে।
কিন্তু ওই প্রতিশ্রুতির
বাস্তবায়ন নেই। বরং মেয়েদের উচ্চমাধ্যমিক স্কুল বন্ধ করে দেওয়া, কাজের ক্ষেত্রে অসংখ্য
বিধিনিষেধ এবং এবার পুরুষ স্বজন ছাড়া দীর্ঘ পথ ভ্রমণের অনুমতি না দেওয়া সেই পুরান তালেবানকে
মনে করিয়ে দিচ্ছে। যার কঠোর সমালোচনা করছেন আফগান নারী এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়
এখনও তালেবান প্রশাসনকে স্বীকৃতি দেয়নি, বরং দেশেটির উপর নতুন করে নানা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা
আরোপ করেছে। যার ফলে দেশটি সাধারণ জনগণ আবারও চরম মানবিক সংকটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।