সার্চ কমিটি
নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নেতিবাচক ও বিভ্রান্তিকর
মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি
বলেন, ‘আমরা বিএনপির মর্মবেদনা বুঝি। রাজনীতির মাঠে চরম ব্যর্থতায় নিপতিত দলটি
এখন নিজেদের হতাশা ও নিরাশার মাপকাঠিতে জনপ্রত্যাশা পরিমাপের ব্যর্থ চেষ্টায় নিমজ্জিত
হয়ে পড়েছে।’
আজ মঙ্গলবার
আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব
কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
নির্বাচন কমিশন
গঠনে সাংবিধানিক বিধান ও আইনের যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই সার্চ কমিটি গঠিত হয়েছে
বলে জানান কাদের। তিনি বলেন, এ কমিটির সব সদস্য নিজ নিজ ক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত এবং
তাঁরা প্রত্যেকেই আমাদের জাতীয় জীবনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন। পেশাগত কাজের
বাইরেও আপন কর্মের মহিমায় তাঁরা স্বতন্ত্র পরিচিতি অর্জন করেছেন এবং দেশ-জাতির প্রতি
তাঁদের ভালোবাসা ও দায়বদ্ধতা প্রশ্নাতীত। আইন অনুযায়ী সাংবিধানিক দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি
ও দেশপ্রেমিক বিশিষ্টজনদের সমন্বয়ে যে সার্চ কমিটি গঠিত হয়েছে, এই সার্চ কমিটির প্রতি
জনগণের পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে।
কাদের বলেন,
সার্চ কমিটি একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনে নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলকে
তাদের প্রস্তাব উপস্থাপনের আহ্বান জানিয়েছে এবং সবার মতামতের ভিত্তিতে একটি গ্রহণযোগ্য
ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রত্যয়দৃপ্ত অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে।
জনগণ প্রত্যাশা
করে, একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনের যে শপথ নিয়ে সার্চ কমিটির কার্যক্রম শুরু
হয়েছে, তা পরিপূর্ণরূপে বাস্তবায়িত হবে বলে জানান কাদের।
বিএনপি সব সময়
দলীয় ও গোষ্ঠীস্বার্থে রাজনীতি করে বলে অভিযোগ ওবায়দুল কাদেরের। বলেন, তাই তারা নির্বাচনে
অংশগ্রহণ না করে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকে। ২০১৪ সালের নির্বাচনের
আগে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় একটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন বেগম খালেদা জিয়াকে ফোন করেছিলেন, তখন বিএনপি নেত্রী
কী আচরণ করেছিলেন দেশবাসী তা ভুলে যায়নি!
ওবায়দুল কাদের
বলেন, সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী জনগণের ভোটে নির্বাচিত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে
নির্বাচনকালীন সরকার গঠন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের জন্য তখন বিএনপিকে আহ্বান জানানো হয়।
কিন্তু সংবিধানের মূল চেতনায় সমুন্নত গণতান্ত্রিক রীতি বাস্তবায়নে এবং আলাপ-আলোচনার
মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টির সে আহ্বানে সাড়া দেয়নি বিএনপি। ২০১৮ সালেও তারা
নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল।
কাদের বলেন,
আজও তারা গণতন্ত্রের রীতিনীতি বর্জন ও প্রশ্নবিদ্ধ করার ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। গণতন্ত্রের
স্টেশনে রাজনীতির যে ট্রেনে বিএনপি উঠতে ব্যর্থ হয়েছিল, তা আজ বহু দূর এগিয়ে গেছে।
গণতন্ত্রের ঘড়ির কাঁটা কারও জন্য থেমে থাকে না। তা আপন গতিতে এগিয়ে চলে। রাজনীতির ভুল
ট্রেনে ওঠা বিএনপি নেতৃবৃন্দ এখন পরিত্যক্ত প্ল্যাটফর্মের অন্ধকার বগির দিশেহারা যাত্রীর
মতো প্রলাপ বকছে।
বিএনপি নেতাদের
বর্জন ও পরিত্যাগের ভ্রষ্ট নীতি পরিহার করে গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি অনুশীলনের আহ্বান
জানান কাদের।