Logo
শিরোনাম

রোজ গার্ডেন রূপ নিচ্ছে জাদুঘরে

প্রকাশিত:বুধবার ২৩ জুন ২০২১ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৩ নভেম্বর 20২৩ | ১৫৯০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেয়া রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের আঁতুড়ঘর রোজ গার্ডেন সরকারের কিনে নেয়ার আড়াই বছরের বেশি সময় পর সেটিকে জাদুঘরে রূপ দেয়া ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে সংরক্ষণের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

এ-সংক্রান্ত একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) তৈরি করেছে সরকার। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ সপ্তাহের মধ্যেই প্রকল্প প্রস্তাবনাটি পাঠানো হবে পরিকল্পনা কমিশনে।

মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. শামীম খান বলেন, আমরা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়ে দিচ্ছি। একবার পাঠিয়েছিলাম। আবারও এই সপ্তাহের মধ্যে অনুমোদনের জন্য পাঠাব।

তবে জাদুঘর তৈরির কাজ কবে শুরু হবে সে বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য নেই সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কাছে। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে যুগ্ম সচিব শামীম খান বলেন, অনুমোদনের (প্রকল্প) এখতিয়ার তো তাদের। তারা কবে ওঠাবে সেটা তাদের বিষয়। আমরা এই সপ্তাহের মধ্যে পাঠিয়ে দেব।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ব্যয় ধরা হয়েছে ২২ কোটি টাকা। উপসচিব আহমেদ শিবলী বলেন, প্রজেক্ট রেডি হচ্ছে। অনুমোদনের জন্য চেষ্টা চলছে। অনুমোদন হয়ে গেলেই কাজ শুরু হবে।

কী কী থাকছে সেই প্রকল্পে জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, ওখানে একটা জাদুঘর করা, রোজ গার্ডেনকে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে সংরক্ষণ করা, আর ভেতরে দর্শনার্থীদের জন্য যে সুযোগসুবিধাগুলো দরকার, সেগুলো নিশ্চিত করা।

পুরান ঢাকার টিকাটুলির কে এম দাস লেনে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে রোজ গার্ডেন নামের ভবনটি। এখান থেকে পথচলা মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেয়া ও উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের।

১৯৩১ সালে ওই সময়ের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী ঋষিকেশ দাস নির্মাণ করেন ভবনটি। তবে সময় বদলের সঙ্গে সঙ্গে পাল্টে গেছে ভবন ও ভূমির মালিকানা। হাত ঘুরে ওই সম্পত্তির মালিক এখন রাষ্ট্র নিজেই।

২০১৮ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর ৩৩১ কোটি ৭০ লাখ টাকা দিয়ে ঐতিহাসিক রোজ গার্ডেন কিনে নেয় সরকার। ওই দিন গণভবনে মালিকের কাছ থেকে সম্পত্তি কেনার নিবন্ধিত দলিল গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

এর আগে ওই বছরের ৮ আগস্ট রোজ গার্ডেন কেনার প্রস্তাবে অনুমোদন দেয় সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এরপর সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় মালিকের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে রোজ গার্ডেনের মূল্য ৩৩১ কোটি ৭০ লাখ টাকা নির্ধারণ করে।

রোজ গার্ডেনের দলিল গ্রহণের পর এটিকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করার ইচ্ছে পোষণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ জন্য ১ হাজার ১ টাকা টোকেন মূল্যে সম্পত্তিটি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করেন। ওই সময় প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে বাড়িটির দলিল গ্রহণ করেন সে সময় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।

সেদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, পুরান ঢাকার ইতিহাস তুলে ধরতে ঐতিহাসিক রোজ গার্ডেনকে জাদুঘরে পরিণত করা হবে। রোজ গার্ডেনের একটি ঐতিহাসিক মূল্য রয়েছে। কেননা, দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন এখান থেকেই যাত্রা শুরু করে। এমন স্থাপনা নষ্ট হতে দেওয়া যায় না।

তবে প্রকল্প প্রস্তুত করতেই আড়াই বছরেরও বেশি সময় চলে গেল। এখন পরিকল্পনা কমিশন প্রাথমিক অনুমোদন দিলে সেটা একনেকে তোলা হবে। সেখানে অনুমোদন মিললেই শুরু হবে কাজ।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রত্নতত্ত্ব ও জাদুঘর অধিশাখার যুগ্ম সচিব আতাউর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ডিজাইনটা কয়েকবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়। ওনার কিছু নির্দেশনা ছিল। সবশেষ ডিজাইনসহ এটার ডিপিপি করা হয়। ডিপিপিটা সাবমিটও করা হয়। পাস হলে কাজ শুরু হবে।



আরও খবর