ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের একজন শিক্ষকের
বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর মানহানিকর মিথ্যা অভিযোগ এনে কর্মসূচি পালন করায় মেডিক্যাল
কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল হাসানকে ৩ বছরের জন্য কলেজ থেকে বহিষ্কার
করেছে কলেজের একাডেমিক কাউন্সিল।
শনিবার (৫ মার্চ) বিকেল পৌনে ৬টায় ময়মনসিংহ
মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. চিত্তরঞ্জন দেবনাথ বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত
করেছেন।
জানা গেছে, মমেক হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের
অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে ৫৩ ব্যাচের শিক্ষার্থীর
দেওয়া যৌন হয়রানির আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।
এ ঘটনায় আরও ২ শিক্ষার্থীকে ২ বছরের জন্য
এবং ৭ শিক্ষার্থীকে ১ বছরের জন্য কলেজ থেকে বহিষ্কার করা হয়। সতর্ক করা হয় আরও ৮ শিক্ষার্থীকে।
বহিষ্কৃতরা কলেজের ছাত্রাবাসে অবস্থান করতে পারবে না বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়। একই সাথে
কলেজে কোনো সভা সমাবেশও নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃতরা হলেন- ছাত্রলীগ কলেজ শাখার
সাধারণ সম্পাদক ও ৫ম বর্ষের আব্দুল্লাহ আল হাসান। তাকে ৩ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
৩য় বর্ষের ফায়াদুর রহমান আকাশ ও তামান্না তাসমিন বহিষ্কার হয়েছেন ২ বছরের জন্য। সুনীতি
কুমার দাস, সানবীম খান, মাহিদুল হক, তানবিন হাসান, কাশফী তাবরীজ, রাপ্পু কর্মকার, ও
সাখাওয়াত হোসেন সিফাত বহিষ্কার হয়েছেন ১ বছরের জন্য।
এছাড়া সতর্ক করা হয়েছে ৮ শিক্ষার্থীকে।
এরা হলেন মাহমুদুজ্জামান, মেহরাব হোসেন, নাজমুছ সাকিব, রিজবী আল নাহিয়ান হিয়া, জিম
রহমান, সাকিব খান শাওন, জেরিন তাসনিম, জিহাদুল হক তাঈব।
মেডিক্যাল কলেজ সূত্র জানায়, সকাল ১১টায়
সভা শুরু হয়। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সভা শেষ হয়। সভা শেষে কলেজ অধ্যক্ষ অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের
সভার সিদ্ধান্ত জানান।
অধ্যক্ষ ডা. চিত্ত রঞ্জণ দেবনাথ বলেন,
ডা. আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। মিথ্যা অভিযোগকারী
শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি কলেজ ক্যাম্পাসে
একদল শিক্ষার্থী কলেজের সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ ফাইনাল
পরীক্ষায় পাস করানোর শর্তে একজন ছাত্রীকে খারাপ প্রস্তাব দেন এমন অভিযোগ তুলে মানববন্ধন
কর্মসূচি পালন করেন। পরবর্তীতে, মেডিক্যালের কতিপয় ছাত্র কর্তৃক শিক্ষকের বিরুদ্ধে
ছাত্রীকে মিথ্যা যৌন হয়রানির অপবাদ দেওয়ার প্রতিবাদে ও দোষীদের বিচার দাবিতে ক্লাস
ও পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষকরা।
এদিকে ঘটনা তদন্তে হাসপাতালের গাইনি বিভাগের
প্রধান অধ্যাপক ডা. তায়েবা তানজিলা মির্জাকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন
করা হয়। এই কমিটি গত বৃহস্পতিবার কলেজ প্রশাসনের কাছে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেন। এই রিপোর্টের
ভিত্তিতে কলেজের একাডেমিক কাউন্সিল এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।