কুমিল্লার মুরাদনগরে খুরুইল সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. আনিসুর রহমান মোল্লার বিরুদ্ধে একই প্রতিষ্ঠানের সহকারি শিক্ষিকাকে শ্লীলতাহানি ও কু-প্রস্তাব, ছাত্রীদের যৌন হয়রানি ও প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগ উঠেছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ১২টায় মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে ওই প্রতিষ্ঠানের ভুক্তভোগী শিক্ষিকা, ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক ও স্থানীয় এলাকাবাসী। এ সময় ছাত্রছাত্রীরা অধ্যক্ষের অপসারণের দাবি জানান। দ্রুত অপসারণ না হলে পরীক্ষা ও ক্লাস বর্জনের হুমকি দেন তারা।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ শেষে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আলাউদ্দিন ভূঁইয়া জনীর কাছে ভুক্তভোগীসহ ১৭ জন শিক্ষক ও এলাকাবাসী স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ইউএনও আলাউদ্দিন ভূঁইয়া জনী।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগী একাধিক শিক্ষিকা ও ছাত্রীরা বলেন, আমরা খবরের শিরোনাম হতে চাইনি কখনো। তাই এতোদিন চুপ থেকেছি, কিন্তু আর না। ফেনীর নুসরাতের মত হতে চলেছে আমাদের অবস্থা। অধ্যক্ষের কু-প্রস্তাবের যন্ত্রনায় আমাদের মাদ্রাসায় আসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম। তিনি বিভিন্ন সময়ে আমাদেরকে শ্লীলতাহানি ও কু-প্রস্তাব দেয়। তিনি একবার এক শিক্ষিকাকে টেঁনে হেঁচরে খালি ক্লাসরুমে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। পরে ওই শিক্ষিকার চিৎকারে মানুষ জড়ো হয়ে তাকে জুতা পিঠা করে। এরপর তিনি এমন কাজ আর করবে না মর্মে লিখিত দিয়েছেন। এরপরও তার অপকর্ম থামেনি। আমরা তার অপসারণের দাবি জানাই।
ছাত্র-ছাত্রীরা আরও অভিযোগ করে বলেন, অধ্যক্ষ আনিসুর রহমান মোল্লা ক্লাসরুমে ছাত্রীদের যৌন উত্তেজক কথাবার্তা বলত। এটা শুধু একবার নয়, নয় বছর ধরে তিনি এই অপকর্ম চালাচ্ছেন। আমরা আমাদের অভিভাবককে জানালে তারা এসে কমিটিকে জানায়। কমিটির কাছে তিনি দোষ স্বীকার করে কয়েকবার ক্ষমা চেয়ে পার পেয়েছেন। কিন্তু কিছুদিন পরই শিক্ষিকাকে জড়িয়ে ধরে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছেন তিনি। আমরা এ প্রতিষ্ঠান থেকে তার অপসারণের দাবি জানাচ্ছি। না হয় আমরা ক্লাস বর্জন করব।
সাবেক সভাপতি মো. আলমগীর কবির জানান, আনিসুর রহমান মোল্লার থেকে মাদ্রাসার ছাত্রী ও শিক্ষিকারা কেউ নিরাপদ নয়। তার অপকর্মের বর্ণনা দিয়ে শেষ করা যাবে না। তিনি মাদ্রাসার রেজুলেশন বই, আয়-ব্যয়ের হিসাবসহ প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র সরিয়ে ফেলেছেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়ায় মুরাদনগরে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী মো. বেলাল আহম্মেদ তাকে সাসপেন্ড করে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। ওই মামলায় তিনি জেলও খেটেছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ মো. আনিসুর রহমান মোল্লা দোষ স্বীকার করে বলেছেন, আমি এ প্রতিষ্ঠান থেকে স্বেচ্ছায় চলে যাব। এ মর্মে আমি শিক্ষক ও এলাকাবাসীর কাছে লিখিত দিয়েছি।