সিলেট ও সুনামগঞ্জের ৪টি পয়েন্টে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি কমায় বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকায় কিছুটা স্বস্তি আসলেও আরও বৃষ্টি ও দীর্ঘমেয়াদী জলাবদ্ধতা সৃষ্টির আশঙ্কায় আছেন বানভাসি মানুষ।
এদিকে গতরাত ১২টার দিকে সিলেটের জকিগঞ্জের অমলশীদ এলাকায় ভারতের বরাক নদী প্রবেশ করে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর উৎপত্তি হওয়া এলাকায় নদী রক্ষা বাঁধ ভেঙে সীমান্তবর্তী বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, সুরমা নদী আজ সকাল ৯টায় কানাইঘাট পয়েন্টে গতকালের চেয়ে ১৭ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৯৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্লাবিত হচ্ছে।
একই সময়ে সুরমা নদী সিলেট নগরীর পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে এবং সুনামগঞ্জ শহর পয়েন্টে ৩ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ১৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্লাবিত হচ্ছে।
কুশিয়ারা নদী সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার অমলশীদে ৬ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ১৬৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে এ নদীর পানি বিয়ানীবাজার উপজেলার শেওলা পয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমেদ বলেন, 'পানি আপাতত কমলেও বন্যা পরিস্থিতি নির্ভর করছে সীমান্তের ওপারে উজানে বৃষ্টিপাতের উপর। তবে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে আজ থেকে বৃষ্টিপাত কমতে শুরু করবে। সেক্ষেত্রে আশা করছি দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি হবে।'
এদিকে জকিগঞ্জের অমলশীদে বরাক-সুরমা-কুশিয়ারার মোহনায় কুশিয়ারা নদীর পাড়ের নদী রক্ষা বাঁধ ভেঙে গিয়ে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে উপজেলার ফিল্লাকান্দি, অমলশিদ, বারঠাকুরী, খাসিরচক, খাইরচক, বারোঘাট্টা, সোনাসার এবং আরও বেশ কিছু এলাকা।
গত ১২ মে থেকে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতিতে সিলেট ও সুনামগঞ্জের অন্তত ২০ লাখ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছেন।
ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয়ের তথ্যমতে, দুই জেলার ১১০টি আশ্রয় কেন্দ্রে কয়েকহাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। আরও প্রস্তুত রাখা হয়েছে ২৯১টি আশ্রয় কেন্দ্র। চলমান বন্যা পরিস্থিতি পানিতে ডুবে এবং টিলা ধ্বসে এখন পর্যন্ত ৪ জন মারা গেছেন এবং ৯৬জন মানুষ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।