সমৃদ্ধ ‘জীববৈচিত্র্যের
আধার’ হিসাবে বিবেচিত দেশের একমাত্র প্রবালসমৃদ্ধ
দ্বীপ সেন্টমার্টিনের প্রবালগুলো রোগাক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। গত চার দশকে এ দ্বীপ
উপকূল থেকে হারিয়ে গেছে হাজার হাজার টন প্রবাল ও পাথর। এ কারণে ক্ষয়ের শিকার হয়ে উপকূলের
বিস্তীর্ণ ভূমি সমুদ্রগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে, বিশেষ করে দ্বীপের উত্তর উপকূলে সৃষ্টি
হয়েছে ভাঙনের। মনুষ্যঘটিত বেশ কয়েকটি প্রভাবে দ্বীপটি পরিবেশগত এক ব্যাপক নেতিবাচক
প্রভাবের শিকার হয়েছে। অবিলম্বে পরিবেশগত পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ নেওয়া না হলে অদূর ভবিষ্যতে
দ্বীপটি সাগরগর্ভে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।
শনিবার কক্সবাজারের
পেঁচারদ্বীপস্থ বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বুরি) বিজ্ঞানীদের ২০২০-২১ অর্থবছরে
সম্পাদিত গবেষণা ফলাফল উপস্থাপনের ওপর আয়োজিত এক সেমিনারে বিজ্ঞানীরা এ তথ্য প্রকাশ
করেন।
বাংলাদেশ সমুদ্র
গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দরের সভাপতিত্বে
অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব
জিয়াউল হাসান এবং বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের
সদস্য (সচিব) অধ্যাপক ড. মো. কাউসার আহাম্মদ।
প্রধান অতিথি
বলেন, বর্তমান সরকার দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। পরিবেশ
ও পর্যটনের উন্নয়নের মাধ্যমেই সুনীল অর্থনীতির বিকাশ ঘটাতে হবে। যদি আমাদের প্রাকৃতিক
রিসোর্স বা সম্পদ শেষ হয়ে যায়, তাহলে উন্নয়ন কখনো টেকসই হবে না। তাই প্রাকৃতিক সম্পদের
সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেই অর্থনীতির বিকাশ ঘটাতে সরকার বদ্ধপরিকর। সেমিনারে ‘প্রবাল ও সেন্টমার্টিন
দ্বীপ’ শীর্ষক মূল গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ও সমুদ্র বিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল
হায়দর (অতিরিক্ত সচিব)।
সেন্টমার্টিন
দ্বীপের পরিবেশগত পুনরুদ্ধারের জন্য বুরি বিজ্ঞানীরা কয়েকটি প্রজাতি চিহ্নিত করেছেন
এবং যার মাধ্যমে সেন্টমার্টিনে দ্বীপে কৃত্রিম উপায়ে কোরাল রিফ গড়ে তোলার কৌশলও অর্জন
করেছেন বলে জানান মহাপরিচালক সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর।
তিনি দ্বীপে পরিবেশগত
বিপর্যয়ের জন্য প্রবাল মরে যাওয়া, আহরণের কারণে উপকূল থেকে প্রবাল ও পাথর হারিয়ে যাওয়াকে
দায়ী করছেন। তিনি অপরিকল্পিতভাবে পর্যটন শিল্প গড়ে তোলা, প্লাস্টিক ও অন্যান্য দূষণ,
ক্ষতিকর পদ্ধতিতে মাছ ধরা, অতিরিক্ত মাছ ধরা ও বড় বড় জাহাজ চলাচলসহ মনুষ্যঘটিত অন্যান্য
কারণেই এ দ্বীপের প্রবালগুলোর রোগাক্রান্ত হওয়া ও মরে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে বলে মনে করেন।
সেমিনারে বাংলাদেশ
সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০২০-২১ অর্থবছরের গবেষণা ফলাফলসহ মোট সাতটি প্রবন্ধ উপস্থাপন
করা হয়।