বাংলাদেশ দলের
ক্রিকেটারদের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়ে দুঃসহ এক স্মৃতির সাক্ষী হতে হলো। দ্বিতীয় টেস্টের
ভেন্যু সেন্ট লুসিয়া থেকে টি-টোয়েন্টি খেলতে ডমিনিকায় সমুদ্র পথে ফেরিতে যান মাহমুদুল্লাহ
রিয়াদরা। আগে কখনো এত দীর্ঘ সমুদ্রযাত্রার অভিজ্ঞতা নেই বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটারের।
তাই ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজের (সিডব্লিউসি) আন্টলান্টিক মহাসাগর পার হয়ে ক্রিকেটারদের
যাওয়ার প্রস্তাব লুফে নিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এই যাত্রায় ভয়ঙ্কর
অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে তাদের।
আন্টলান্টিক মহাসাগরের
মতো এত বিশাল জলরাশির ঢেউ পেরিয়ে পাঁচ ঘণ্টার যাত্রা আসলে কেমন হয় তা সম্পর্কে খোঁজখবর
না নিয়েই সিডব্লিউসির প্রস্তাবে রাজি হয়েছিল বিসিবি। যে কারনেই বিরূপ ফল ভোগ করতে হলো
বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলের খেলোয়াড়দের। মূলত কিন্তু বিপত্তি বাঁধে দুই দিন আগের সাইক্লোনে।
যার কারণে সমুদ্রে ঢেউয়ের তোড়ও বেশি ছিল। এই ঢেউয়ের মধ্যে জার্নি আর ‘মোশন সিকনেসে’সব মিলিয়ে বিভীষিকাময় এক অভিজ্ঞতাই হয়েছে
ক্রিকেটারদের।
দলের সেই সদস্যের
মতে ফেরি সাইজ খুব বড় নয়। এর সঙ্গে ৭-১০ ফুট উচ্চতার ঢেউ মনে ভয় ধরিয়ে দেওয়ার জন্য
যথেষ্ট। ঢেউয়ের ধাক্কায় ফেরি যেভাবে দুলছিল, তাতে দলের কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাঁহাতি
পেসার শরিফুল, উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান, অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, ম্যানেজার নাফিস
ইকবাল এবং সাপোর্ট স্টাফের এক সদস্য ‘মোশন সিকনেসে’ আক্রান্ত হন। তাদের কয়েকজন বমিও করেন
এসময়।
কারণ কারোই যে
এত দীর্ঘ পথ সমুদ্রযাত্রার অভিজ্ঞতা ছিল না। তাদের জানা ছিল না কীভাবে মানিয়ে নিতে
হয় আন্টলান্টিকের এই বিশাল ঢেউয়ের ছন্দের সাথে। পাঁচ ঘণ্টার সমুদ্রযাত্রার মাঝে একবার
ছিল যাত্রাবিরতি। যাত্রাবিরতিতে অনেক ক্রিকেটারই আপত্তি জানিয়েছিলেন আবারও ফেরিতে উঠতে।
তারা চেয়েছিলেন বাকিটা পথ যেন তাদেরকে বিমানে করে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে তাদের অনুরোধে
সাড়া দেওয়া হয়নি। বাধ্য হয়েই ভয় ও অসুস্থতা নিয়ে আন্টলান্টিক পাড়ি দিয়েই ডমিনিকায় গেছে
বাংলাদেশ।
এই ভয়ংকর অভিজ্ঞতার
পর টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ প্রকাশ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। দলের অন্যান্য
ক্রিকেটাররাও ক্ষুব্ধ হয়েছেন বিসিবির এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে। তবে
স্বস্তির খবর হচ্ছে এই বীভৎস যাত্রা শেষে সেন্ট লুসিয়া থেকে ডোমিনিকায় পৌঁছেছে দল।
সেখান থেকে ম্যানেজার নাফিস ইকবাল জানান, তারা এখন বিশ্রামে আছেন। এখন সবকিছু মোটামুটি
স্বাভাবিক। সবাই সুস্থ আছেন। পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন।
ডোমিনিকায় ৩ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ২ ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ দল। প্রথমটি ২ ও দ্বিতীয়টি ৩ জুলাই। এই ভয়ঙ্কর যাত্রার মাত্র একদিনের পরেই মাঠের লড়াই, টেস্ট সিরিজ হারের পর সে লড়াইয়ে কেমন করে সফরকারীরা, এখন সেটিই সেখার অপেক্ষা।