প্রেসিডেন্টের
বাসভবনের সামনে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পর গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়
শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয় জারি করা কারফিউ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ছাড়া বিক্ষোভ
থেকে ৪৫ ব্যক্তিকে আটক করেছে কলম্বো পুলিশ।শুক্রবার (০১ এপ্রিল) ভোর ৫টায় কারফিউ প্রত্যাহার
করা হয় বলে কলম্বো পুলিশের মুখপাত্র এসএসপি নিহাল থালডুয়ার বরাতে জানায় শ্রীলঙ্কার
ডেইলি মিরর।
শ্রীলঙ্কার কর্মকর্তারা
বলেছেন, বিক্ষোভকারীরা বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেওয়ার সময় পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার
একটানা ১৩ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকার পর রাজধানী মিরিহানা জেলায় শত শত বিক্ষোভকারী
প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপক্ষের বাসভবনের সামনের রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে।
জনতা ‘গোটা তুমি পদত্যাগ
করো, গোটা একজন স্বৈরশাসক’ ইত্যাদি বলে স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ
হয় বিক্ষোভকারীদের। ফেসবুকে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যায়, একটি পুলিশ বাসে আগুন জ্বলছে।
এ ছাড়া এক ব্যক্তিকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখা গেছে।
এরপরই পুলিশের
মহাপরিদর্শক সিডি বিক্রমারত্নে এক বিবৃতির মাধ্যমে উত্তর কলম্বো, দক্ষিণ কলম্বো, সেন্ট্রাল
কলম্বো, নুগেগোদা, মাউন্ট লাভিনিয়া ও কেলানিয়ায় কারফিউ জারি করেন। বিবৃতিতে বলা হয়,
পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকবে। রাতে জারি করা সেই কারফিউ ভোর ৫টায়
প্রত্যাহার করা হয়েছে।
শ্রীলঙ্কায় সম্প্রতি
অর্থনৈতিক মন্দার কারণে বিদ্যুতের সমস্যা, গ্যাস ও পানির অপ্রতুলতা, খাদ্যের সংকট,
নিত্যপণ্যের লাগামহীন দামসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। গত ডিসেম্বরে
শ্রীলঙ্কার বাণিজ্য ঘাটতি ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। শ্রীলঙ্কার সাধারণ মানুষ
বলছেন, ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর থেকে এমন অর্থনৈতিক বিপর্যয় আর দেখেননি তাঁরা।
এদিকে শ্রীলঙ্কায়
যে ভয়াবহ অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে, তা থেকে উত্তরণের জন্য শ্রীলঙ্কা ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক
মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), চীন ও ভারতের কাছে আর্থিক সাহায্য চেয়েছে। বেইজিং ও নয়াদিল্লি
প্রত্যেকে রাজাপক্ষে সরকারের অনুরোধে দেড় বিলিয়ন ডলার ঋণসুবিধা দেওয়ার কথা বিবেচনা
করছে বলে জানা গেছে।