Logo
শিরোনাম

শ্রীরামকাঠী ইউপি চেয়ারম্যান কোটিপতি উত্তম মৈত্রের অর্থের উৎস কি

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৪ মে ২০২১ | হালনাগাদ:রবিবার ২৬ নভেম্বর ২০২৩ | ৮২২০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image
নৈলতলা গ্রামের জ্যোতি প্রকাশ বেপারীর বাড়ির নিকট আয়রন ব্রিজ মেরামত বাবদ ২ লক্ষ টাকা, খেজুরতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন আয়রন ব্রিজ মেরামত বাবদ ১লক্ষ ৬০ হাজার টাকা ইউনিয়ন পরিষদ কতৃক বরাদ্দ করে কোন কাজ না করে

পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার ৮নং শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান উত্তম মৈত্রের বিরুদ্ধে পরিষদের কার্যক্রমে ব্যপক অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ আৎসাত, ভুমি দখল, পরিষদ থেকে পরিচয়পত্র, ওয়ারিশ সনদ পত্র, জন্ম নিবন্ধন গ্রহন করায় সাধারণ জনগণের কাছ থেকে উৎকোচ গ্রহণের বিস্তর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অত্র ইউনিয়নের ৬ বার জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত জনপ্রিয় চেয়ারম্যন আ. মালেক বেপারী ২০১৭ সালের ১৪ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করায় উক্ত ইউনিয়নটি শুন্য হয়। এনজিওর চাকুরী ছেড়ে দিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় না থেকে ও হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে এই ইউনিয়নটি চিহ্নিত হওয়ায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতিকে ২০১৮ সালের ১৬ এপ্রিলে অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এই উত্তম কুমার মৈত্র। চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে তার ভাগ্য বদলে যায়, ফিরে তাকাতে হয়নি আর পিছনের দিকে।

একের পর এক অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাত, ভুমি দখল করে এক বছর যেতে না যেতেই তিনি শ্রীরামকাঠী বন্দর সংলগ্ন ভীমকাঠীতে গড়ে তোলেন কোটি টাকা ব্যয়ে তিন তলা সুদৃশ্য পাকা ভবন। অথচ নির্বাচন কালীন সময় কর্মী খরচ না দিতে পারায় কর্মীদের হাতে লাঞ্চিত হতে হয়েছে তার বড় ভাইকে। অবৈধ ভাবে অর্থ আৎসাত করে বিত্তবান হওয়ার অহংকারে এমনকি তার নির্মম নির্যাতনের শিকার তার জন্মদাতা পিতা, আপন বোন ও বোন জামাই। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে এই চেয়ারম্যান নাজিরপুর উপজেলার একটি ঐতিহ্যবাহী ইউনিয়নকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে। চেয়ারম্যানের অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে পরিষদের ১২ জন ইউপি সদস্যের মধ্যে ১১জন সদস্য জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন।

লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, নৈলতলা গ্রামের জ্যোতি প্রকাশ বেপারীর বাড়ির নিকট আয়রন ব্রিজ মেরামত বাবদ ২ লক্ষ টাকা, খেজুরতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন আয়রন ব্রিজ মেরামত বাবদ ১লক্ষ ৬০ হাজার টাকা ইউনিয়ন পরিষদ কতৃক বরাদ্দ করে কোন কাজ না করে পুরো টাকা আত্মসাত করে। এলজিএসপির-৩ এর আওতায় প্রতি বছর বরাদ্দকৃত ২০ লক্ষ টাকা ইউপি সদস্যদের সাথে কোন আলাপ আলোচনা ছাড়াই নিজের খেয়াল খুশি মত প্রকল্প দেখিয়ে আৎসাত করে।

মধুরাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিকট আয়রন ব্রিজ মেরামতের প্রকল্প দেখিয়ে কোন কাজ না করে পুরো টাকা নিজেই আৎসাত করে। ইউনিয়নের উন্নয়ন মুলক কাজ টিআর-কাবিখা বাস্তবায়নের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে ইউপি সদস্যদের ৩০ ভাগ অর্থ উৎকোচ হিসেবে চেয়ারম্যানকে দিতে হয়। বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, পঙ্গু ভাতা, হরিজন ভাতা, মৎস্য ভিজিএফ কার্যক্রম, দুস্থদের সাহায্যের তালিকা, গভীর নলকুপ, ওয়ারিশ সনদপত্র প্রদানে তার বিরুদ্ধে রয়েছে বিপুল পরিমান অর্থ বানিজ্যের অভিযোগ। এ ছাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন শালিস বৈঠক থেকে হাতিয়ে নিয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা। ভুক্তভোগীরা ইউনিয়নের সচেতন মহলের নিকট অভিযোগ করেও কোন সমাধান পায়নি।

চেয়ারম্যান উত্তম মৈত্রের পিতা প্রফুল রঞ্জন মৈত্র ফেইজবুক লাইভে এসে পুত্রের অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র জন সম্মুখে তুলে ধরেন এবং বলেন আমার স্ত্রী মারা যাবার পর এই উত্তম আলমারী ভেংগে ৭ লক্ষ টাকা ও চাকুরীর প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র, জায়গা জমির দলিল সব নিয়ে যায়। তিনি বর্তমানে খুব অসহায় অবস্থায় জীবন যাপন করছে। চেয়ারম্যান পুত্রের এহেন অপরাধের জন্য প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট তিনি বিচার প্রার্থনা করছেন।

মধ্য জয়পুর গ্রামের মো. মশিউর রহমান জানান, এই চেয়ারম্যান ওয়ারিশ সনদ বাবদ আমার নিকট থেকে তিন হাজার টাকা গ্রহন করেন। দক্ষিণ জয়পুর গ্রামের অনুপ সিকদার জানান, চেয়ারম্যানের বাসার পিছনে আমার ক্রয়কৃত তিন কাঠা জমি দখল করে জমির সমস্ত মাটি কেটে নিয়ে যায় এবং লোকের কাছে বলে উক্ত জায়গা আমি ক্রয় করেছি। এ ব্যপারে আমি থানায় অভিযোগ করেছি। এহেন দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যানের হাত থেকে রক্ষা পেতে ইউনিয়নবাসী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছে।


আরও খবর