শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় নিখোঁজের ৫ দিন পর মাটি খুঁড়ে হাত-পা বাধা অবস্থায় এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ বলছে, অলংকারের জন্য ওই নারীকে হত্যা করেছিলেন তারা। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন—উপজেলার বিশগিরি পাড়ার মৃত আফাজ উদ্দিনের ছেলে নজরুল ইসলাম (৩৫) এবং আব্দুল রশিদের ছেলে হেলিম মিয়া (৪০)।
থানা-পুলিশ সূত্রে
জানা যায়, গত ২১ আগস্ট বিকেলে উপজেলার বিশগিরি পাড়া গ্রামের নিজ বাসা থেকে বের হয়ে
নিখোঁজ হন নছিমা বেগম (৩৮) নামের এক গৃহবধূ। পরে নিখোঁজের ৫ দিন পর গত ২৫ আগস্ট ওই
এলাকার এক বাগান থেকে মাটি খুঁড়ে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করা
হয়।
এ ঘটনার পরদিন
নিহতের বাবা নাজিম উদ্দিন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
পরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে সাক্ষ্য প্রমাণ পেয়ে মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের
মাধ্যমে ঢাকার বংশাল এলাকা থেকে গত রোববার নজরুল নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে তাঁর দেওয়া তথ্যমতে গতকাল সোমবার বিকেলে উপজেলার বিশগিরি পাড়া এলাকা থেকে হেলিম
নামের আরেক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার আসামিরা
পুলিশকে জানায়, গত ২০ আগস্ট ৫০ টাকা ধার নিতে অভিযুক্ত নজরুলের বাড়িতে যান নছিমা। এ
সময় কথাবার্তার একপর্যায়ে বাড়ির কাছে এক ঝোপে তাঁদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
এ ঘটনা আরেক আসামি হেলিম দেখে ফেলেন এবং এলাকাবাসীকে জানিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন।
পরে নছিমার গলার
থাকা রুপার চেন, কানের দুল ও নাকফুল দাবি করেন হেলিম। নছিমা নিজের অলংকার খুলে দিতে
অস্বীকৃতি জানালে গলায় থাকা ওড়না পেঁচিয়ে ধরে নজরুল ও হেলিম। একপর্যায়ে নাছিমা মাটিতে
লুটিয়ে পড়ে। পরে নছিমার অলংকার খুলে নিয়ে তাঁকে মাটি চাপা দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন
তারা।
বিষয়টি নিশ্চিত
করে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক বলেন, তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে
প্রথমে নজরুলকে এবং তাঁর তথ্যমতে হেলিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। অলংকারের জন্য হত্যার কথা
তাঁরা স্বীকার করেছে। মঙ্গলবার দুপুরে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।