
শরীয়তপুরের জাজিরা
উপজেলায় কৃষক সামাদ মাদবর হত্যা মামলায় ১২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শেখ মফিজুর রহমান এই রায় দেন।
একই সঙ্গে প্রত্যেক
আসামির ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
রায়ের সময় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত
আসামিরা হলেন আজিজুল মাদবর, রফিকুল মৃধা, লিটন মাদবর, মান্নান মৃধা, আ. আলিম মাদবর,
মফিজ মৃধা, তারন ফরাজী, নুরুল হক মাদবর, জুলহাস মাদবর, আলাউদ্দিন ফকির, আ. বারেক মাদবর
ও মনির মাদবর। তাদের সবার বাড়ি জাজিরা উপজেলার চরখোরাতলা গ্রামে।
মামলার নথি ও
আদালত সূত্রে জানা যায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উপজেলার চরখোরাতলা গ্রামে আজিজুল
মাদবর ও মালেক ফকিরের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। তারই জেরে ২০১৪ সালের ১৩ এপ্রিল
তাদের মধ্যে সংঘর্ষে মালেকের বাবা সাহেব আলী ফকির মারা যান। ১৫ এপ্রিল নিহত সাহেব আলীর
ভাগনে মোতালেব মাদবর ৩৪ জনকে আসামি করে জাজিরা থানায় একটি মামলা করেন। এই ঘটনায় থানায়
৪৪ জনকে আসামি করে কাউন্টার মামলা করেন প্রতিপক্ষ আজিজুল মাদবর।
এদিকে, ২০১৫ সালের
১ অক্টোবর সামাদ মাদবরকে কে বা কারা হত্যা করে ওই এলাকার ফসলি জমিতে ফেলে রেখে যায়।
এ ঘটনায় জাজিরা থানার একটি মামলা হয়। সঠিক তদন্তের জন্য মামলাটি শরীয়তপুর সিআইডিতে
হস্তান্তর করা হয়। পরে সিআইডি মামলাটিকে তদন্ত শেষে জানতে পারে, আসামি আজিজুল মাদবরসহ
১২ জন মিলে আগের মামলার সাক্ষী ও বাদীকে ফাঁসিয়ে দিতে নিজ দলের সমর্থক সামাদ মাদবরকে
কুপিয়ে হত্যা করেন। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে শাহজালাল মাদবর বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে
জাজিরা থানায় হত্যা মামলা করেন।
নিহত সামাদ মাদবরের
ছেলে শাহজালাল মাদবর বলেন, আসামি ১২ জন আমার বাবাকে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।
আমি আশাবাদী ছিলাম ৫/৭ জনের ফাঁসির আদেশ হবে। তবে বিচারক যা রায় দিয়েছেন, তাতে আমরা
সন্তুষ্ট।
রাষ্ট্রপক্ষের
আইনজীবী (পিপি) মির্জা হজরত আলী বলেন, আমি মনে করি, এরকম দৃষ্টান্তমূলক সাজা হলে এলাকায়
এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ এই রায়ে সন্তুষ্ট। আসামিপক্ষের
আইনজীবী মো. শাহ আলম বলেন, আমরা ন্যায়বিচার পাইনি বলে মনে করি। আসামিপক্ষ হাইকোর্টে
আপিল করবে।