Logo
শিরোনাম

সড়ক-মহাসড়কে নির্বিঘ্নে চলছে পরিবহণ চাঁদাবাজি

প্রকাশিত:বুধবার ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ নভেম্বর ২০২৩ | ১৭০০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

সড়ক-মহাসড়কে নির্বিঘ্নে চলছে পরিবহণ চাঁদাবাজির মহোৎসব। বিভিন্ন বাস কোম্পানি, ব্যক্তি, সংগঠন ও সমিতির নামে টার্মিনাল এবং গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি স্টপেজ থেকে প্রতিদিন মোটা অঙ্কের টাকা উঠানো হচ্ছে। রাজধানীতেই চলাচলকারী গণপরিবহণের মধ্যে শুধু বাস থেকেই উঠে অন্তত ৫০ লাখ টাকা চাঁদা। সেই হিসাবে মাসে এই অঙ্ক দাঁড়ায় প্রায় ১৫ কোটি টাকা।

রুট খরচ, কোম্পানি পরিচালনা, মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের সার্ভিস চার্জসহ বিভিন্ন খাতে ব্যয়ের কথা বলে আদায় করা হচ্ছে এই অর্থ। পরিবহণ সেক্টরে এটা জিপি বা চাঁদা হিসাবে পরিচিত। কেবল বাস থেকেই চাঁদা উঠছে, তা নয়। মোটা অঙ্কের চাঁদা উঠানো হয় ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, লেগুনা, টেম্পোসহ অন্যান্য যানবাহন থেকেও।  নিজস্ব অনুসন্ধান ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে এসব তথ্য।

সূত্র জানায়, ঢাকা ও এর আশপাশ জেলায় কাগজে-কলমে তিনশর বেশি রুটে প্রায় ১০ হাজার বাস ও মিনিবাস চলাচলের অনুমোদন রয়েছে। তবে বাস্তবে প্রতিদিন চলে সাড়ে ছয় থেকে সাত হাজার বাস। এসব যানবাহন চললেই রুট ও কোম্পানি অনুযায়ী দিনে ৮০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকা বিভিন্ন পর্যায়ে চাঁদা দিতে হচ্ছে। কিন্তু প্রভাবশালীদের নামে বা বেনামে চলাচল করা বাসের ওই চাঁদা দিতে হয় না। এছাড়া রাজধানীর অন্তত চারটি রুটে এসি বাস চলে। এগুলোর চাঁদা দেওয়ার অঙ্ক অন্যগুলোর তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম।

জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট) মোশাররফ হোসেন মিয়াজী বলেন, সড়ক-মহাসড়কে ট্রাফিক শৃঙ্খলা ফেরাতে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। এখন থেকে রাস্তায় কেউ চাঁদা তুলতে পারবে না। টার্মিনালগুলোয় সিটি করপোরেশন এবং মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলো নিজ নিজ অফিসে বসে নির্ধারিত চাঁদা তুলতে পারবে।

এর বাইরে কেউ চাঁদাবাজি করলে তা কঠোর হস্তে দমন করা হবে। পুলিশের কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এলে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না। সূত্রমতে, প্রভাবশালী ছাড়া সাধারণ মালিকদের অন্তত ছয় হাজার গাড়ি থেকে চাঁদা নেওয়া হয়। গাড়িপ্রতি ৮০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকা চাঁদা নেওয়া হচ্ছে। গাড়িপ্রতি গড়ে ৮৫০ টাকা চাঁদা ধরলেও দিনে ৫০ লাখ টাকা উঠছে।

এছাড়া মহাসড়কে বিভিন্ন পরিবহণ থেকে চাঁদা তোলার অঙ্কও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এ ব্যাপারে সাম্প্রতিক সময়ের তেমন কোনো পরিসংখ্যান দায়িত্বশীল কারো কাছ থেকে সুনির্দিষ্টভাবে পাওয়া যায়নি। তবে ২০১৯ সালে হাইওয়ে পুলিশের এক প্রতিবেদনে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া গিয়েছিল। এখন তা আরও বেড়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, দেশের মহাসড়কগুলো থেকে প্রতিদিন চাঁদা উঠছে ২৩ লাখ ৩৯ হাজার ৯৫ টাকা। যা বছরে দাঁড়ায় ৮৫ কোটি ৩৭ লাখ ৬৯ হাজার ৬৭৫ টাকা। বিভিন্ন মহাসড়ক দিয়ে চলাচলকারী ৫৮ হাজার ৭১৯টি যানবাহন থেকে তোলা হয়েছে মোটা অঙ্কের এ চাঁদা। এ টাকা আদায় করছে পরিবহণের মালিক-শ্রমিকের নামে ২১৫টি সংগঠন।

এগুলোর নেতৃত্বে আছেন সরকারি দলের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের প্রভাবশালী নেতা। পরিবহণ মালিক-শ্রমিক ছাড়াও মহসড়কের কোনো কোনো স্থানে পৌর কর ও মসজিদ উন্নয়নের নামেও প্রতিদিন আদায় করা হচ্ছে মোট অঙ্কের অর্থ। ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, চাঁদাবাজির এ চিত্র শুধু মহাসড়কের। তবে জেলার অভ্যন্তরে বিভিন্ন সড়কে চাঁদা আদায়ের ব্যাপকতা আরও অনেক বেশি।

এ ধরনের চাঁদা আদায় না করতে ২০১৫ সালের ৩ ডিসেম্বর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশ কমিশনার, ডিআইজি, জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে চিঠিও দেওয়া হয়েছিল। এরপরও বন্ধ হয়নি চাঁদাবাজি।

চাঁদাবাজির প্রতিবাদে সম্প্রতি ধর্মঘটের ডাক দেয় বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান, ট্যাংক, লরি প্রাইম মুভার মালিক-শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ। বিষয়টি নিয়ে রোববার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ে দীর্ঘ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে চাঁদাবাজি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পুলিশের কেউ চাঁদা দাবি করলে তা সঙ্গে সঙ্গেই হটলাইনে জানানোর নির্দেশ দেন মন্ত্রী।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির সভাপতি মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, চাঁদাবাজি অগের অবস্থায় ফিরে গেছে। এটি বন্ধের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছি। ওই বৈঠকে চাঁদাবাজি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কোম্পানির নামে চাঁদাবাজি বিষয়ে তিনি বলেন, মালিকরা চাঁদা নিয়ে থাকলে সেটি অন্যায়। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশের চাঁদাবাজির বিষয়ে তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিষয়টি জানানো হয়েছে, পুলিশ একটি হটলাইন নম্বর চালু করেছে। ভুক্তভোগীরা সেখানে অভিযোগ জানাতে পারেন

নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রজাপতি পরিবহণের অধীনে রাজধানীর সড়কে চলাচলকারী একাধিক গাড়ির মালিক  বলেন, মালিক সমিতি, শ্রমিক ইউনিয়ন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সরকারদলীয় সংগঠন এবং পুলিশের নামে চাঁদা দিতে হয়। আমাদের গাড়ি আব্দুল্লাহপুর থেকে ঘাটারচর (বছিলা, মোহাম্মদপুর) পর্যন্ত চলে। গাড়ি রাস্তায় বের করলেই ১ হাজার ৪০০ টাকা চাঁদা দিতে হচ্ছে।

মালিক সমিতিকে দিতে হচ্ছে ৪০০ টাকা, ঘাটারচর এবং আব্দুল্লাহপুরে চাঁদাবাজ চক্রকে দিতে হচ্ছে ২০০ টাকা, যাওয়া-আসার পথে ১৫ জন সুপারভাইজারকে ২০ টাকা করে দিতে হয়। এই টাকার অর্ধেক কোম্পানি পরিচালনা পরিষদ নেয়। বাকি অর্ধেক সুপারভাইজাররা নেয়। তিনি বলেন, পুলিশ আমাদের কাছ থেকে আগে সরাসরি মাসোহারা নিলেও এখন নেয় না। এখন কোম্পানির (পরিবহণের পরিচালনা পরিষদ) কাছ থেকে নেয়। তবে আমাদের কাছ থেকে কোম্পানি যে হারে টাকা নেয়, কোনো কোনো ক্ষেত্রে সেই হারে পুলিশকে দেওয়া হয় না। তখনই পুলিশ ঝামেলা করে। মামলা দেয়। এছাড়া পুলিশ গাড়ি ধরলেই ২০০ থেকে ৫০০ টাকা দিতে হচ্ছে।

প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, রুট খরচের নামে নীলাচল পরিবহণ বাস থেকে দিনে ২ হাজার ৩০০, ঠিকানা পরিবহণ ৮০০, মৌমিতা ১ হাজার ২০০, ডি-লিংক ৮০০, সাভার পরিবহণ ১০০০, ভিক্টর ক্লাসিক ১ হাজার ৩০০, রবরব ৯০০ ও মক্কা পরিবহণ ১ হাজার ৪০০ টাকা। এছাড়া বলাকা পরিবহণ ১ হাজার ৮০০, আকাশ পরিবহণ ১ হাজার ২০০, রমজান পরিবহণ ১ হাজার ৩০০, প্রভাতী-বনশ্রী ৮০০, রজনীগন্ধা এক হাজার ৫০০, শিকড় পরিবহণ ৮০০, বিকাশ পরিবহণ ১ হাজার ৮০০, বিহঙ্গ পরিবহণ ১ হাজার ৭০০, গাজীপুর পরিবহণ ১ হাজার ৬০০, স্বজন ৯০০, বসুমতী ১ হাজার ৬০০, আজমেরি ১ হাজার ৫০০, আসমানি ১ হাজার ৩০০, দেওয়ান পরিবহণ ৭০০, শুভযাত্রা ৮০০ টাকা, মিডলাইট ৯০০, ইতিহাস ১ হাজার ১০০, রাজধানী পরিবহণ ৮০০, মোহনা ৮০০, ট্রান্স সিলভা ৯০০, রাইদা ১ হাজার ৮০০, অনাবিল ১ হাজার ৩০০ এবং বৈশাখী থেকে ৮০০ টাকা করে নেওয়া হয়।

সরেজমিন দেখা গেছে, রবিবার দিবাগত রাত ১২টা ২০ মিনিটে যাত্রাবাড়ীর কুতুপখালী বিশ্বরোড (ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রোডে যেতে হাতের ডান পাশে)। ডাচ্-বাংলা এটিএম বুথের পাশে পঁচা ডোর অ্যান্ড ফার্নিচারের সামনে মূল রাস্তার ফুটপাতে বেঞ্চে বসেছিলেন দুই পুলিশ সদস্য। রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন অপর এক পুলিশ সদস্য। তবে তাদের কোনো তৎপরতা ছিল না।

কিন্তু পুলিশের লাইট দিয়ে নীল আলো জ্বালিয়ে এদিক-সেদিক ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছিলেন দুই যুবক। এদের একজনের পরনে ছিল লাল শার্ট। অন্যজনের পরনে সাদা শার্ট। তারা রিকশা, ভ্যান এবং নানা ধরনের গাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল তারাই পুলিশ সদস্য। এ সময় রং-সাইড দিয়ে ইটভর্তি একটি ট্রাক (মোমেনশাহী-১৭) যাচ্ছিল। লাল শার্ট পরিহিত যুবক ওই ট্রাক থামিয়ে ২০০ টাকা দাবি করলেন।

পরে চালক তাকে ৫০ টাকা দিলেন। পাশে দাঁড়িয়ে যুগান্তর প্রতিবেদক বিষয়টি দেখছিলেন। ওই দুই যুবক এবং পুলিশ সদস্য বিষয়টি বুঝতে পরে তাদের তৎপরতা কমিয়ে দিলেন। এরপর আধা ঘণ্টা ধরে সেখানে অবস্থান করলেও পুলিশ বা যুবকদের তৎপরতা সে অর্থে দেখা যায়নি। তিন পুলিশ সদস্য বসেছিলেন ফুটপাতের বেঞ্চে। এদের একজনের নেমপ্লেটে লেখা জিয়াউর। পাশেই পার্কিং করা ছিল পুলিশের একটি গাড়ি (ই : নং ২৭৮৭)।

ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন নারায়ণগঞ্জ শাখার যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার হোসেন আনু বলেন, প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত সাইনবোর্ড এলাকায় ট্রাক ধরা হয়। কাগজপত্র চেকিংয়ের নামে সেখানে চাঁদাবাজি করা হয়। গাড়িপ্রতি ১০০ টাকা থেকে শুরু করে সেখানে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়। তিনি বলেন, পুলিশ এখন সরাসরি নিজের হাতে টাকা নেয় না।

তারা সোর্সের মাধ্যমে গাড়ি আটকায়। টাকাও তাদের মাধ্যমে নেয়। গাড়ি আটকানোর সময় পুলিশ সদস্যরা পাশেই থাকেন। সোর্সরা অনেক সময় বেশি টাকার লোভে চালক-হেলপারদের মাদক দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করে। তিনি বলেন, কাঁচপুর এবং তারাবো এলাকায়ও একই কায়দায় চাঁদা আদায় করা হয়। সিটি করপোরেশনের নামে রাস্তায় কোনো গাড়ি থেকে চাঁদা তোলা যাবে না বলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা আছে।

তারপরও রাজধানীর শনিরআখড়া, কাজলা এবং রায়েরবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় সিটি করপোরেশনের নামে গাড়িপ্রতি ৩০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা তোলা হচ্ছে। চাঁদা আদায়কারীরা রাস্তায় লাঠিসোঁটা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। চালকরা তাদের ভয়েই টাকা দিয়ে দেন। এই টাকার ভাগ যাচ্ছে পুলিশের পকেটেও। তিনি আরও বলেন, কোনাবাড়ী এলাকা সিটি করপোরেশনের মধ্যে নয়। সেখানেও সিটি করপোরেশনের নামে চাঁদা তোলা হচ্ছে।

সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বলেন, সারা দেশেই পরিবহণ সেক্টরে পুলিশের হয়রানি, চাঁদাবাজি এবং মাসোহারা সিস্টেম চালু আছে। এছাড়া স্পট চাঁদাবাজি তো আছেই। চাঁদাবাজির কয়েকটি স্পট সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাইপাইলে সাভার থানা পুলিশ, এলেঙ্গায় হাইওয়ে পুলিশ গাড়িপ্রতি ১০০ থেকে ২০০ টাকা করে নিচ্ছে।

সড়ক দুর্ঘটনা ঘটলে গাড়ি ছাড়িয়ে আনতে ১০ থেকে ২০ হাজার পর্যন্ত টাকা লাগছে। তিনি বলেন, সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল এবং রংপুর মেডিকেল কলেজ মোড়ে থানা পুলিশ টাকা আদায় করছে। চট্টগ্রামের বাড়ইহাট এলাকায় হাইওয়ে পুলিশ গাড়িপ্রতি ১০০ থেকে ২০০ টাকা করে নিচ্ছে। দৌলতদিয়া ঘাটে পুলিশ, মাস্তান, বিআইডব্লিউটিএ এবং বিআইডব্লিউটিসি চাঁদাবাজি করছে।

ট্রাক পারাপারে যেখানে দুই হাজার ২০০ টাকা লাগে সেখানে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, রাজধানীর গুলিস্তান, জয়কালী মন্দির, ইত্তেফাক মোড়, মতিঝিল, গোলাপবাগ, রাজধানী মার্কেট, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, কাজলা, শনিরআখড়া, রায়েরবাগ, স্টাফ কোয়ার্টার, দোলাইরপাড়, কোনাপাড়া, পোস্তগোলা ব্রিজের দুই পাশে এবং ফকিরাপুলসহ বিভিন্ন এলাকায় থানা ও ট্রাফিক পুলিশ চাঁদাবাজি করে।

শনি এবং রবিবার সরেজমিনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী মোড় থেকে শুরু করে সাইনবোর্ড পর্যন্ত মহাসড়কে চাঁদাবাজির দৃশ্য চোখে পড়ে। চাঁদা আদায় করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ নামধারী নেতা ও পুলিশ সদস্যরা। যাত্রাবাড়ী থানার সামনে রয়েছে হিউম্যান হলার ও লেগুনা স্ট্যান্ড। এসব লেগুনা থেকে জিপির নামে দৈনিক ৫৫০ টাকা, লাইনম্যানের নামে ২০ টাকা করে আদায় করা হয়। রায়েরবাগ ফুটওভার ব্রিজের দক্ষিণ পাশে দুই শতাধিক অটোরিকশা ও সিএনজি থেকে ১০০ টাকা করে আদায় করেন স্থানীয় জাহাঙ্গীর। এ টাকার ভাগ যায় ট্রাফিক ওয়ারী বিভাগেও।

অনুসন্ধানে জানা যায়, টাকা ভাংতির নামে হচ্ছে চাঁদাবাজি। যেটি পরিবহণ খাতে ব্যাকমানি হিসাবে পরিচিত। প্রতিদিন সকালে বাস ছাড়ার সময় বাসচালক ও চালকের সহকারীদের বাধ্যতামূলক দেওয়া হয় খুচরা টাকা। ট্রিপ শেষে ওই বাসচালকদের কাছ থেকে নেওয়া হয় এক হাজার বা ৫০০ টাকার নোট। প্রয়োজন না হলেও চালক-হেলপারদের নিতে হচ্ছে খুচরা টাকা। আর ফেরত দিতে হচ্ছে টাকার বড় নোট। সাধারণত ৯০০ টাকার খুচরা টাকার বিপরীতে বাসের চালককে বাধ্যতামূলকভাবে দিতে হয় এক হাজার টাকা।এ চাঁদার টাকার ভাগ যায় পুলিশ এবং রাজনৈতিক নেতাদের পকেটেও। সূত্র: যুগান্তর


আরও খবর

রাজধানীর ৯০ ভাগ হিজড়াই নকল

শনিবার ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩