Logo
শিরোনাম

শুকিয়ে যাচ্ছে বিশ্বের বড় ছয় নদী

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৬ আগস্ট ২০২২ | হালনাগাদ:শনিবার ০৪ নভেম্বর ২০২৩ | ৬৪৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

অপ্রতুল বৃষ্টি এবং টানা তাপপ্রবাহে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের নদীগুলো ক্রমাগত শুকিয়ে যাচ্ছে। অনেক নদ-নদী আবার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে সঙ্কুচিত হয়ে আসছে। প্রতিনিয়তই নদীর তলদেশ পানির ওপর থেকে দৃশ্যমান হচ্ছে। কিছু নদী এতই শুকিয়ে গেছে যে, সেগুলো কার্যত চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। যার ফলে জনজীবন হুমকির মুখে পড়েছে। এদিকে প্রকট খরার কবলে পড়েছে ইউরোপ মহাদেশ। এই খরা এতটাই তীব্র যে সেটিকে সম্ভবত গত ৫০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম।

জলবায়ু সঙ্কট বৈশ্বিক আবহাওয়াকে দিন দিন বৈরী করে তুলেছে। এ কারণে শুধু নদ-নদীই নয়, এগুলোর ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করা মানুষের ওপরও বিরূপ প্রভাব পড়ছে। বিশ্বের প্রত্যেক মানুষ কোন না কোনভাবে নদীর ওপর নির্ভরশীল। এটি হতে পারে খাওয়ার পানি, কৃষিকাজে কিংবা জ্বালানি উৎপাদনে অথবা পণ্য পরিবহনে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে জনজীবন। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হুমকির মুখে থাকা বিশ্বের ছয়টি নদীর স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবি প্রকাশ করেছে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন। এসব ছবিতে নদীগুলোর আগের অবস্থার সঙ্গে বর্তমান অবস্থার পার্থক্য তুলে ধরা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে সম্প্রতি তীব্র দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে। দেখা দিয়েছে খরার মতো পরিবেশ বিপর্যয়। ভবিষ্যতে এ খরা কমারও কোন লক্ষণ নেই। খরায় কলোরাডো নদী আশঙ্কাজনকভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের দুটি বৃহত্তম জলাধার দ্বারা নদীটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। নদী অববাহিকাকে রক্ষা করতে সরকার বাধ্যতামূলক পানির ব্যবহার কমানো কার্যকর করেছে এবং অঙ্গরাজ্যের সরকারগুলোকে করণীয় পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে আসতে বলেছে। সেই জলাধারগুলোর একটি মিড হ্রদ। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় হ্রদের আকার সঙ্কুচিত হচ্ছে। হ্রদের পানির স্তর ২০০০ সাল থেকে কমতে শুরু করেছে। তবে ২০২০ সাল থেকে আশঙ্কাজনকভাবে হ্রদের পানি কমতে শুরু করে। এশিয়ার অন্যতম নদী চীনের ইয়াংশি খুব দ্রুত শুকিয়ে যাচ্ছে। ইয়াংশির উপনদীগুলো ইতোমধ্যেই শুকিয়ে গেছে। সম্প্রতি চীন গত নয় বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো দেশব্যাপী খরার সতর্কতা ঘোষণা করেছে এবং দেশটির তাপপ্রবাহ ছয় দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে চলেছে। ইয়াংশি নদী শুকানোয় এর আশপাশের অঞ্চলগুলোয় ব্যাপক প্রভাব পড়েছে।

রাইন সুইস পর্বত থেকে প্রবাহিত হয়ে জার্মানি ও নেদারল্যান্ডসের মধ্য দিয়ে উত্তর সাগরে পড়া একটি নদী। জার্মানির এ নদী ইউরোপীয় অঞ্চলে পণ্য পরিবহনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যানেল। কিন্তু বর্তমানে এ পথে জাহাজ চালানো দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। রাইন নদীর তলদেশ ভেসে উঠেছে। এ কারণে এই পথে চলাচল করা সব জাহাজকে অনেক বাধা পার হতে হয় এখন, যা পুরো পণ্য পরিবহনের প্রক্রিয়াকে ধীর করে দিয়েছে। পো নদীটির উৎপত্তিস্থল ইতালি, যা পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়েছে এ্যাড্রিয়াটিক সাগরে গিয়ে পড়েছে। শীতে পর্বতের চূড়ায় এর পানি জমে বরফ হয়ে যায় এবং বসন্তে ভারি বৃষ্টিপাতে প্রবল স্রোত সৃষ্টি হয়। এ নদীর একটি সমস্যা হচ্ছে, এর কারণে আশপাশের এলাকা প্রায়ই প্লাবিত হয়। সৃষ্টি হয় বিধ্বংসী বন্যা। কিন্তু এখন পো নদীর রূপ পাল্টে গেছে। ইতালির উত্তরাঞ্চলে শীতকাল শুষ্ক ছিল।

লয়ার নদীটি প্রায় ৬০০ মাইলজুড়ে বিস্তৃত এবং ফ্রান্সের শেষ নদী, যেটি বনের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। নদীটি সমগ্র উপত্যকায় জীববৈচিত্র্য বাস্তুতন্ত্রকে টিকিয়ে রেখেছে। নদীর কিছু অংশ ইতোমধ্যেই মোটামুটি অগভীর। তবে আবহাওয়ার পরিবর্তনের সঙ্গে এবং এর উৎসের বরফ গলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এর স্তর ও প্রবাহ দ্রুত পরিবর্তন হতে পারে। কিছু অংশ বৃষ্টির অভাবে ও প্রচ- গরমে এতটাই শুকিয়ে গেছে যে, মানুষ হেঁটে নদী পাড়ি দিতে পারে। দানিয়ুব হাঙ্গেরির নদী। এটি পশ্চিম ইউরোপের দীর্ঘতম নদী এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ শিপিং চ্যানেল, যা ১০টি দেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। রোমানিয়া, সার্বিয়া ও বুলগেরিয়ায় শ্রমিকেরা নদীটি ড্রেজিং করছেন, যাতে পণ্যবাহী জাহাজগুলো এখনও এটিতে চলাচল করতে পারে। ইউরোপের অন্যান্য নদীর তুলনায় এ নদীর অবস্থা খানিকটা ভাল। তবে হাঙ্গেরির মতো দেশগুলো পর্যটনের জন্য দানিয়ুবের ওপর এতই নির্ভরশীল যে, এর প্রভাব ইতোমধ্যেই পড়তে শুরু করেছে। এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপের দুই-তৃতীয়াংশ এক ধরনের খরা সতর্কতার মধ্যে রয়েছে, যা সম্ভবত গত ৫০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ঘটনা। গ্লোবাল ড্রাউট অবজারভেটরির সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপ মহাদেশের ৪৭ শতাংশ এলাকা সতর্কতা অবস্থায় রয়েছে, যার অর্থ সেখানকার মাটি শুকিয়ে গেছে।

নিউজ ট্যাগ: কলোরাডো নদী

আরও খবর

রাশিয়া সফরে যাচ্ছেন এরদোয়ান

মঙ্গলবার ২৯ আগস্ট ২০২৩