Logo
শিরোনাম

সুলতানি আমলের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ‘দরসবাড়ি মসজিদ’

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০২ ফেব্রুয়ারী 2০২3 | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২১ নভেম্বর ২০২৩ | ১৩০৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

সালাহউদ্দীন জাহাঙ্গীর

বাংলাদেশে মুসলিম শাসন ও ইসলামি সভ্যতার অনেক নিদর্শন আবিষ্কার হয়েছে। তবে বাংলার ইসলামি শিক্ষাকেন্দ্রের একমাত্র প্রাচীন নিদর্শন দরসবাড়ি মসজিদ ও মাদ্রাসা। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বেশকিছু ইসলামি শিক্ষাকেন্দ্রের উল্লেখ পাওয়া গেলেও প্রত্নতাত্ত্বিক ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হয়েছে কেবল দরসবাড়িতে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় কানসাটের কাছাকাছি দরসবাড়ি মসজিদ ও মাদরাসা। এর আশেপাশে রয়েছে বাংলার প্রাচীন রাজধানী গৌড়-পাণ্ডুয়ার বিভিন্ন ঐতিহাসিক নিদর্শন। এগুলো হলো ছোট সোনা মসজিদ, তাহখানা কমপ্লেক্স, কোতয়ালী দরজা, সোনা মসজিদ স্থলবন্দর, চামচিক্কা মসজিদ, বালিয়াদীঘি, খানিয়াদীঘি। এসব প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা কাছাকাছি অবস্থিত। তাই সবখানেই একবেলায় ঘুরে আসা যায়।

আজ থেকে ৫০০ বছর আগে বাংলার প্রাচীন রাজধানী গৌড়ে স্থাপিত হয়েছিল দরসবাড়ি মসজিদ ও মাদরাসা কমপ্লেক্স। বিভিন্ন ঐতিহাসিক তথ্যমতে, সুলতান শামছুদ্দীন আবুল মুজাফফর ইউসুফ শাহ (শাসন ১৪৭৫-১৪৮১) ১৪৭৯ খ্রিষ্টাব্দে অনিন্দ্যসুন্দর এই কমপ্লেক্স নির্মাণ শুরু করেন। কিন্তু ১৪৮১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মৃত্যুবরণ করলে এর নির্মাণকাজ স্থগিত হয়ে যায়। কিছুদিন পর বাংলায় অল্প সময়ের জন্য হাবশী শাসনের গোড়াপত্তন হয়। বিভিন্ন বিশৃঙ্খলায় তখন রাষ্ট্রীয় উন্নয়নমূলক কাজে খুব একটা অগ্রগতি হয়নি। পরবর্তী সময়ে সুলতান আলাউদ্দীন হোসাইন শাহ (শাসন ১৪৯৪-১৫২০) ১৫০২ খ্রিষ্টাব্দে দরসবাড়ি মসজিদ-মাদ্রাসার নির্মাণ বাকি কাজ সম্পন্ন করেন।

২. দরসবাড়ি মসজিদ বা মাদ্রাসার কথা বললে স্থানীয়রা খুব একটা চেনে না। তাদের কাছে পরিচিত নয় গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনটি। অথচ সোনা মসজিদ বা তাহখানা কমপ্লেক্সের কথা অনেকেই জানে, এগুলোর নাম বললেই তারা অনায়াসে চিনতে পারে। যদিও ঐতিহাসিকভাবে দরসবাড়ি মাদ্রাসার গুরুত্ব অনেক বেশিই হওয়ার কথা।  সোনা মসজিদ ও দরসবাড়ি মসজিদ কাছাকাছি, বড়জোর এক কিলোমিটার দূরত্বে দুটির অবস্থান। কানসাট থেকে সোনা মসজিদ ও দরসবাড়ির দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। আমরা যে অটোরিকশায় দরসবাড়ি যাচ্ছি, তার চালক দরসবাড়ির নাম শোনেননি আগে। আমরাই রাস্তার পশ্চিম পাশে ধুলো জমা সাইনবোর্ড দেখতে পেলাম। আশেপাশে পাথর ব্যবসায়ীদের ভাঙানো পাথর স্তূপ করে রাখা। সোনা মসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতীয় ট্রাকে করে এসব পাথর আমদানি হয়। পাথরের জগদ্দলের ভেতর দিয়ে একটি কাঁচা রাস্তা ধরে সামনে এগোলে দরসবাড়ি মসজিদ ও মাদ্রাসা।

কাঁচা রাস্তা ধরে ১০০ গজ সামনে এগিয়ে পাকা রাস্তা চোখে পড়লো। তারপর আবারও কাঁচা রাস্তা ধরে আরেকটু সামনে এগোলে হাতের ডান দিকে দরসবাড়ি মসজিদ। রাস্তা থেকে আমবাগানের ভেতর দিয়ে তাকালে লাল ইটের ইমারতের অবয়ব নজরে আসে। সাধারণ পথচারী কেউ না জানলে রাস্তা ধরে সামনে চলে যাবে। কেননা রাস্তা থেকে তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে না দেখলে আমবাগানের ভেতর দিয়ে মসজিদটি চোখে পড়ে না। এখানে সরকারি কোনও নির্দেশিকা দেওয়া নেই। আমরা কৌতূহল নিয়ে এসেছি বলে আশেপাশে নজর রেখে এগোচ্ছিলাম। আমবাগানের ভেতর দিয়ে মসজিদে যাওয়ার নির্দিষ্ট কোনও রাস্তা নেই। স্থানীয়দের যাতায়াতের একটি মাটির আলপথ তৈরি হয়েছে। সেটাই মসজিদে যাওয়ার একমাত্র পথ। সেই সরু মাটির পথ ধরে মসজিদ চত্বরে দাঁড়ালাম। আমাদের স্বাগত জানালো ছড়িয়ে রাখা মাসকালাই। আশেপাশের কৃষকরা ক্ষেত থেকে মাসকালাই গাছ তুলে শুকাতে দিয়েছেন মসজিদ চত্বরের সামনে ও পেছনে। মাসকালাই মাড়াইয়ের একটি যন্ত্রও বিদ্যমান এখানে। ভটভট শব্দে চলছে সেটি। পাঁচ-সাতজন কৃষক-মজুর মাসকালাই মাড়াই করে হাত-পা থেকে ধুলো ঝেড়ে ফেলছিলেন। পঞ্চদশ শতকের একটি প্রাচীন মসজিদের ধ্বংসাবশেষ এমন জবুথবু, ভাবা যায়! এটি ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন নাকি কৃষকদের গুদাম তা ভেবে অবাক হতে হয়।

৩. মসজিদ চত্বর পেরিয়ে আমরা দরসবাড়ি মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করলাম। চারপাশের দেয়াল প্রায় সম্পূর্ণই অক্ষত। মূল মসজিদের ছাদ খসে পড়েছে অনেক আগেই। বারান্দার পিলারগুলোর শুধু নিচের অংশ অবশিষ্ট রয়েছে, উপরিভাগ এখন আর নেই। ভেতরের অনেক পাথরের পিলার খসে পড়েছে।  মসজিদটি পোড়া ইটের তৈরি হলেও পিলারগুলো পাথরের। পাথরের পিলারের কারণে হয়তো মসজিদের দেয়াল এখনও দাঁড়িয়ে আছে। যেসব পিলার খসে পড়েছে সেগুলো অবিন্যস্তভাবে মসজিদের ভেতরের মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। মেঝে বলতে যদিও এখন আর কিছু অবশিষ্ট নেই। মাটি ও ঘাসের ওপর পড়ে আছে বিরাটাকার পাথরের পিলার, ভেঙে পড়া দেয়াল এবং খসে পড়া ইট। মসজিদের ভেতরে সামনের দেয়ালে আঁকা টেরাকোটা নকশা বেশ নান্দনিক ও নিখুঁত। বিশেষত মসজিদের মিহরাব ও এর পাশে ছড়ানো নকশা এখনও যেকোনও শিল্পমনকে বিমোহিত করতে পারে। মসজিদের বাইরের দেয়ালে নিখুঁত ও নান্দনিক টেরাকোটা নকশা এখনও প্রায় অক্ষত। ৫০০ বছর আগে কত শত শিল্পীর মনন ও শ্রম মিশে আছে এই দেয়াল, পোড়ামাটির ইট ও টেরাকোটা নকশায়। মসজিদের ভেতরে শতাব্দী ধরে নামাজ আদায় করেছে হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমান। তাদের প্রার্থনা এখনও হয়তো মিশে আছে মসজিদের দেয়ালে।

মসজিদটি একটি উঁচু ঢিবির ওপর নির্মিত। পাশের একটি পুকুর খনন করে ঢিবিটি তৈরি হয়েছে। পুকুরের অপর পাশে দরসবাড়ি মাদ্রাসার ধ্বংসাবশেষ। সেটিও উঁচু ঢিবির ওপর নির্মিত। দরসবাড়ি মসজিদে প্রায় এক ঘণ্টার মতো সময় কাটালাম। এরমধ্যে দুই-তিন জন তরুণ-তরুণীকে ছবি ও ভিডিও ধারণ করতে দেখা গেলো। মসজিদের চারপাশে বিস্তীর্ণ আমবাগানে কিছুক্ষণ হাঁটলাম। আমবাগানের ভেতর প্রাচীনকালের প্রচুর ইট, ইটের টুকরো, ভাঙা তৈজসপত্র এখনও দৃশ্যমান। এতে বোঝা যায়, দরসবাড়ি মসজিদ ও মাদ্রাসা ঘিরে গড়ে উঠেছিল বিরাট কোনও নগরী। প্রাচীন গৌড় নগরীর অনেক অজানা স্থাপনা এখনও হয়তো মাটিচাপা পড়ে আছে আমবাগানের নিচে।

সুলতান শামছুদ্দীন আবুল মুজাফফর ইউসুফ শাহ এবং সুলতান আলাউদ্দীন হোসাইন শাহ বাংলার দুই সফল সুলতান ছিলেন। তাদের সময়ে বাংলার সীমানা ত্রিপুরা থেকে বিহার পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছিল। গৌড়-পাণ্ডুয়া ছাড়াও সোনারগাঁওয়ে আধুনিক নগরী নির্মাণে সুলতান হোসাইন শাহ অমর হয়ে থাকবেন। কিন্তু তাদের শাসনের অন্যতম স্মৃতিচিহ্ন এই দরসবাড়ি মসজিদ ও মাদ্রাসা অবহেলায় হারিয়ে যেতে বসেছে। যেহেতু এটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের অধিগ্রহণ করা সম্পত্তি, সেহেতু এর সুষ্ঠু সংরক্ষণ করার দায়িত্ব তাদের।

৪. দরসবাড়ি মসজিদের চারপাশে কোনও নিরাপত্তা দেয়াল নেই। অথচ দেশের প্রতিটি প্রত্নতত্ত্ব স্থাপত্য সংরক্ষণের জন্য নিরাপত্তা দেয়াল নির্মাণ করা হয়। মসজিদের পাশে একটি সাইনবোর্ড ছাড়া প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের আর কোনও নিদর্শন বা নির্দেশিকা চোখে পড়েনি। মসজিদ ও মাদ্রাসায় যাওয়ার সঠিক কোনও সড়ক নির্দেশিকাও নেই। দর্শনার্থীরা জানতেই পারে না দরসবাড়ি নামে এখানে কোনও মসজিদ ও মাদ্রাসা আছে। তাই মসজিদ ও মাদ্রাসায় যাওয়ার নির্দেশিকা সংবলিত সাইনবোর্ড স্থাপন করা জরুরি। মসজিদ ও মাদ্রাসায় যাওয়ার রাস্তাটি কাঁচা। কিছু অংশ দুই বছর আগে পাকা করা হলেও বাকি অংশ এখনও কাঁচাই রয়ে গেছে। বর্ষা মৌসুমে লালমাটি বৈশিষ্ট্যের এই কাঁচা রাস্তায় চলাচল প্রায় দুঃসাধ্য। ছোট সোনা মসজিদ, তাহখানা কমপ্লেক্স ইত্যাদি স্থাপত্যে দর্শনার্থী সংখ্যার হিসাব রাখার জন্য একজন সার্বক্ষণিক হিসাবরক্ষক আছে। কিন্তু দরসবাড়ি মসজিদ ও মাদ্রাসার দর্শনার্থীদের জন্য তেমন কোনও ব্যবস্থা নেই।

মসজিদ ও মাদ্রাসা রক্ষণাবেক্ষণে কোনও কেয়ারটেকার বা প্রশাসন কর্তৃক নিয়োগকৃত কোনও ব্যক্তি আছেন কিনা জানা নেই। অন্তত আমরা ঘণ্টাখানেক এমন কাউকে দেখতে পাইনি। এমন কেউ থাকলে প্রাচীন স্থাপত্যের চত্বরে মাসকালাই শুকানো বা কালাই মাড়ানোর যন্ত্র চলার কথা নয়। এমন কর্মকাণ্ডের কারণে মসজিদের ভিটি, দেয়াল ও পুরনো নকশা ক্ষয়িষ্ণু হয়ে খসে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। মসজিদের ভেতরে বিভিন্ন ধ্বংসাবশেষ যেমন- পাথরের পিলার, দেয়ালের নিম্নাংশ, ইট, টেরাকোটা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। এগুলো সঠিকভাবে সংরক্ষণের কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রাচীন স্থাপনার প্রতিটি অংশ সংরক্ষণে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

নিউজ ট্যাগ: দরসবাড়ি মসজিদ

আরও খবর

অরণ্যযাপনের আগে যে বিষয়গুলি মাথায় রাখবেন

বৃহস্পতিবার ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩




আজ ঈদ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৭৬৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

রোজা শেষে আবারও এলো ঈদ। খুশির বার্তা নিয়ে ঈদের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে। বাংলাদেশের আকাশে মঙ্গলবার শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা না যাওয়ায় এবার ৩০ রোজা পূর্ণ হলো। এক মাস সিয়াম সাধনার পর আজ উৎসবের আমেজে মেতে উঠবেনে দেশবাসী।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মুসলিম উম্মাহর প্রতি নিয়ামত হিসেবে ঈদ দান করেছেন। হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদিনায় আগমন করলেন তখন মদিনাবাসীদের দুটো দিবস ছিল যে দিবসে তারা খেলাধুলা করতো। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, এ দুদিনের কী তাৎপর্য আছে? মদিনাবাসী উত্তর দিলেন, আমরা জাহেলি যুগে এ দুই দিনে খেলাধুলা করতাম। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এ দুই দিনের পরিবর্তে তোমাদের এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ দুটো দিন দিয়েছেন। তা হলো ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতর। (সুনানে আবু দাউদ: ১১৩৪)

ঈদের দিনের শুরু হয় ঈদের নামাজের মধ্য দিয়ে।ঈদের দিন সকালে পুরুষদের জন্য ঈদের নামাজ আদায় করা ওয়াজিব। বিশেষ পদ্ধতিতে অতিরিক্ত তাকবিরসহ জামাতে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা এবং তারপর ঈদের খুতবা দেওয়া ও শ্রবণ করা। ঈদের নামাজ খোলা ময়দানে আদায় করা উত্তম। 

ঈদুল ফিতরের দিন দেশের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। আবহাওয়া খারাপ হলে জাতীয় ঈদগাহে সম্ভব না হলে বায়তুল মোকাররমে জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়।

এছাড়া প্রতিবারের মতো এবারও পবিত্র ঈদুল ফিতরে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যায়ক্রমে ৫টি ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৭টায়। দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায়।  তৃতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়।  চতুর্থ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টায়। পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে।

পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন  সর্বসাধারণের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারি বাসভবন বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও তার স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। আর নিজের সরকারি বাসভবন গণভবনে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

এবার পবিত্র ঈদুল ফিতর এবং বাংলা নববর্ষে সরকারি কর্মচারীদের ছুটি শুরু হয়েছে ১০ এপ্রিল। অফিস খুলবে ১৫ এপ্রিল। তবে অনেকেই ৮ ও ৯ এপ্রিল দুদিনের ছুটি নিয়ে ঈদের ছুটি কাটাচ্ছেন টানা ১০ দিন। লম্বা ছুটির কারণে ঈদযাত্রায় ভোগান্তি হয়েছে কম। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ সময় নিয়ে নিজের শেকড়ে ফিরতে পেরেছেন।

কর্মব্যস্ত এই নগরীর সবাই যখন ঈদ উদযাপনে ঢাকা ছেড়েছেন তখন এই ঢাকা হয়ে উঠেছে এক অন্য শহর। বদলে গেছে রাজধানীর চিত্র, নেই চিরচেনা রূপ। এখন আর ঢাকার সড়কে ঘণ্টা পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় না। মুহূর্তেই চলে যাওয়া যাচ্ছে শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে।

এদিকে দেশের সবার জন্য সুখী, আনন্দময় ও নিরাপদ ঈদুল ফিতরের কামনা করে সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, একমাস সিয়াম সাধনার পর আবার আমাদের মধ্যে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর এসেছে। ঈদ মানে আনন্দ। আসুন আমরা আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশীসহ সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করি।

রাজনৈতিক নেতাদের অধিকাংশই নিজ এলাকায় ঈদ উদযাপন করবেন এবার। কেউ কেউ ঢাকায় ঈদ করবেন, আবার কেউ নামাজ শেষে যাবেন এলাকায়। সব মিলিয়ে  নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করবেন তারা, যোগ দেবেন সামাজিক অনুষ্ঠানেও।


আরও খবর



বায়তুল মোকাররমে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৭৪০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল ৭টায় এ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্তের মুসল্লিদের উপচেপড়া ভিড় নামে।

প্রথম জামায়াতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মো. মিজানুর রহমান। মুকাব্বির হিসেবে ছিলেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের মোয়াজ্জিন ক্বারী মো. ইসহাক।

জাতীয় মসজিদে ঈদের প্রথম জামাতে অংশ নিতে ভোর থেকেই বিভিন্ন প্রান্তের মুসল্লিরা আসতে শুরু করেন। নামাজের সময়ে মুসল্লিদের ঢল নামে। নামাজ শেষে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। নামাজের পর একে অন্যের সঙ্গে কোলাকুলি করে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন।

জাতীয় মসজিদে বেলা ১১টা পর্যন্ত ঈদের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতি মুহীউদ্দিন কাসেম। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের মোয়াজ্জিন (অব.) হাফেজ মো. আতাউর রহমান।

তৃতীয় জামাত সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন আজিমপুর কবরস্থান মেয়র হানিফ জামে মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা ইমরান বিন নূরউদ্দীন। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. আব্দুল হাদী।

চতুর্থ জামাত সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির ড. মো. আবু ছালেহ পাটোয়ারী। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. জসিম উদ্দিন।

পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল পৌনে ১১টায়। ইমামতি করবেন মিরপুর জামেয়া আরাবিয়া আশরাফিয়া ও এতিমখানার মুহতামিম মাওলানা সৈয়দ ওয়াহীদুজ্জামান। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. রুহুল আমিন।

৫টি জামাতে কোন ইমাম অনুপস্থিত থাকলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ভাষা শিক্ষক মাওলানা মোহাম্মদ নূর উদ্দীন বিকল্প ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।


আরও খবর



জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৭৩০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

রাজধানীর হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদ জামাত শুরু হয়।

ঈদের প্রধান জামাতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, রাজনৈতিক নেতা, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকসহ অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা ও বয়সের লাখো মুসল্লি।

ঈদের প্রধান জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ রুহুল আমিন। দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ শেষে সমগ্র মুসলিম উম্মাহসহ দেশ ও জাতির কল্যাণ, সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এরপর রাষ্ট্রপতি উপস্থিত সবার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

সিটি কর্পোরেশন থেকে জানানো হয়, এবার জাতীয় ঈদগাহের ২৫ হাজার ৪০০ বর্গমিটার আয়তনের মূল প্যান্ডেলে একসঙ্গে ৩৫ হাজার মুসল্লি ঈদের জামাত আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়। ছিল ঈদগাহে নারীদের জন্যও আলাদা নামাজের ব্যবস্থা।

এদিকে জাতীয় ঈদগাহ ছাড়াও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মোট পাঁচটি জামাত আদায়ের ব্যবস্থা রয়েছে।  ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, বায়তুল মোকাররমে সকাল ৭, ৮, ৯ ও ১০ ও ১০টা ৪৫ মিনিটে ঈদের জামাত হবে।


আরও খবর